Ajker Patrika

ভাসমান বেডে সবজি চাষ

মো. আবুল কালাম, লাকসাম
আপডেট : ১৩ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২১
ভাসমান বেডে সবজি চাষ

বর্ষা মৌসুমে লাকসাম উপজেলার দক্ষিণ অঞ্চলের জমি পাঁচ থেকে ছয় মাস পানিতে তলিয়ে থাকে। এই সময়ে জমিতে সবজির চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। তবে বর্তমানে বর্ষার এই ছয় মাসও এসব জমিতে সবজি উৎপাদন হচ্ছে। এখানকার কৃষকেরা পানিতে তলিয়ে থাকা জমিতে ভাসমান বেড তৈরি করে সবজির চাষ করছেন।

এতে সার ও সেচ না লাগায় সবজি বিক্রি করে আগের চেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন তাঁরা। ফলে দিন দিন বাড়ছে ভাসমান বেডে সবজির চাষ। চাষাবাদে আগ্রহী করতে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষকদের দেওয়া হচ্ছে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য সহযোগিতা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম জানান, উপজেলার আবাদযোগ্য জমি ৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর। উপজেলার উত্তরাঞ্চলের জমিতে দুই থেকে তিনটি ফসল হয়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চল নিচু হওয়ায় বছরের চার থেকে পাঁচ মাস পানি জমে থাকে। তাই ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা চাষ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার ১৮৮ জন কৃষককে দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ। তাঁদের দেখাদেখি আরও ৪৮ জন কৃষক ভাসমান বেডে সবজির চাষ শুরু করেছেন।

চলতি বছর ৩৬৪ শতক জমিতে ২২৭ মেট্রিক টন সবজি উৎপাদনের আশা করছে উপজেলা কৃষি অফিস। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় ভাসমান বেডে মসলা, লতাযুক্ত ও লতাবিহীন সবজি আবাদ করছেন কৃষকেরা; বিশেষ করে লাউ, মিষ্টিকুমড়া, পুঁইশাক, করলা, চিচিঙ্গা, লালশাক, ডাঁটাশাক, গিমা কলমি, পালংশাক, ঢ্যাঁড়স, ধনিয়া, মরিচের চাষ হচ্ছে।

প্রকল্পভুক্ত কৃষক আবদুল মতিন বলেন, ২০১৭ সাল থেকে ভাসমান বেডে সবজির চাষ করছেন তিনি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ ও সহায়তায় এবার আড়াই শতক জমিতে সবজি চাষ করেছেন। গতবার ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন বলেও জানান তিনি।

সাতবাড়িয়া এলাকার কৃষক সোলেমান বলেন, গত বছর লাভ ভালো হওয়ায় এবার আরও ছয় শতক জমিতে বেড তৈরি করে সবজির চাষ করেছেন তিনি। বর্ষায় কাজ থাকে না। জমিও খালি পড়ে থাকত। বর্তমানে ভাসমান বেডে চাষাবাদ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন এই কৃষক।

বেড তৈরি করতে প্রথমে এক থেকে সোয়া শতক জমির প্রতি বেডে পানির উচ্চতাভেদে এক থেকে দেড় ফুট কচুরিপানা জমানো হয়। পরে আরও এক ফুট অর্ধমজা ও পচা কচুরিপানা দেওয়া হয়। বেডের নিচে বাঁশ দিয়ে চাং তৈরি করতে হয়। এভাবে তৈরি করা বেডে সবজির বীজ লাগানো হয়।

উপজেলা কৃষি অফিস অর্থ, সেট, ঝাঁজরি, বীজ সংরক্ষণ পাত্র, ছত্রাকনাশক ও সেক্স ফেরোমেন ট্রেপসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও সরেজমিন বেডগুলো নিয়মিত পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেন।

দাফরগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রশিদ আহমদ সওদাগর বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে চার থেকে পাঁচ মাস জমি জলাবদ্ধ থাকে। সবজি চাষ করে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। এলাকায় সবজির চাহিদাও মিটছে। এ পদ্ধতির প্রসার ঘটাতে পারলে সবজি চাষে বিপ্লব ঘটবে।’

আউশপাড়া ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘উপজেলার ৩০ জন কৃষককে দেশের বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

‘মবের হাত থেকে বাঁচাতে’ পলকের বাড়ি হয়ে গেল অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত