সুমন তো ব্যারিস্টার হতে চেয়েছিলেন, আর জেসিয়া মডেল। সিনেমায় এলেন কীভাবে?
সুমন: অস্ট্রেলিয়া থেকে যখন দেশে আসি, সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কখনোই চাকরি করব না। আমার কাছের কয়েকজন পরামর্শ দিলেন, মডেলিং করো, মিডিয়ায় কাজ করো। এভাবেই শুরু। আমি মডেলিং করতাম। একসময় সিদ্ধান্ত নিই, ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় কাজ করব। একটা টেলিফিল্ম করি আর ১০ পর্বের একটি ধারাবাহিক করি। এর মাঝখানেই সিনেমার প্রস্তাব আসে।
জেসিয়া: মডেলিং করতে করতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সিনেমা করব। যখন অফার আসে, ইয়েস বলে দিই।
পরিবার থেকে সাপোর্ট কেমন পেয়েছিলেন?
সুমন: পরিবারে আমিই একমাত্র মিডিয়ায় কাজ করি। পরিবারের কেউই আমার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। একমাত্র যখন পড়ালেখা করতে চাইনি, তখন বাবা বাধা দিয়েছিলেন।
পড়ালেখা করতে চাননি মানে?
সুমন: ইচ্ছা ছিল ব্যারিস্টার হব। কিন্তু যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে চান্স পেলাম না; বাবাকে বললাম, বাবা, আমি ব্যারিস্টার হতে পারব না, আমি আর পড়তে চাই না। বাবার সাফ কথা, তোমাকে পড়তে হবে। অগত্যা পছন্দ না হলেও কমার্স নিয়েই পড়তে হলো, একসময় আমি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাই।
পরিবার থেকে কে বেশি সাপোর্ট দিলেন?
সুমন: মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্টার। কাজের অনুপ্রেরণাটা আমি তাঁর কাছ থেকে বেশি পাই। আর বাবা তো বাবাই, কখনো মুখে বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতর ইমোশনটা চেপে রাখেন। আমার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমা রিলিজের পর ঠিকই অফিস কলিগদের দলেবলে সিনেমা দেখিয়েছেন। বড় বোন, বোনের হাজব্যান্ড—সবাই সাপোর্ট দিয়েছেন।
জেসিয়া: আমি একটা কনজারভেটিভ ফ্যামিলি থেকে এসেছি। তাই শুরুর দিকে ফ্যামিলি সাপোর্ট অতটা পাইনি। এখন সবাই অনেক সাপোর্ট করছেন।
ইন্ডাস্ট্রির কার অভিনয় ভালো লাগে? কার অভিনয় দেখে মনে হয়েছে, আমিও সিনেমা করব?
সুমন: অ্যাকশন ভালো লাগে। তাই আমার প্রিয় মান্না ভাই। জাফর ইকবাল, সোহেল রানার মতো অভিনেতাদের দেখেও আমি ভীষণ অনুপ্রাণিত। এ ছাড়া রোমান্টিক হিরোদের মাঝে সালমান শাহ ছিলেন, এখন শাকিব খান আছেন।
জেসিয়া: নায়িকা শাবনূর আমার সব সময়ের প্রিয়।
অল্প কথায় নিজেদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলুন।
সুমন: মডেলিং থেকে সিনেমায় এসেছি। অভিনয় করেছি ‘অচেনা হৃদয়’, ‘রুদ্র দ্য গ্যাংস্টার’, ‘আদি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘দাহকাল’, ‘ভ্রমর’, ‘হৃদিতা’, ‘অন্তর্জাল’ ও ‘এম আর-নাইন’ সিনেমায়।
জেসিয়া: ২০১৭ সালে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হই। মডেলিং করেছি বেশ কিছুদিন। এরপর কয়েকটা টেলিফিল্ম করে কিছুদিন ব্রেক নিয়েছি। এখন এম আর-নাইন দিয়ে সিনেমা শুরু করলাম।
মাসুদ রানা হয়ে ওঠার জন্য সুমনের প্রস্তুতি কেমন ছিল?
সুমন: আমরা ফাইট প্র্যাকটিস করেছি টানা তিন বছর। এরই মাঝে অ্যাকটিং ক্লাস করতাম। নিজের মাঝে মাসুদ রানাকে ধরে রাখার চেষ্টা করতাম সব সময়। চরিত্রটাকে তো অনেক আগে থেকেই চিনি। মাসুদ রানা যেসব কাজ করে বা যেভাবে চলে, কথা বলে, সেভাবেই চেষ্টা করতাম।
এই সিনেমা চলাকালে নতুন কোনো সিনেমার কাজ করেননি শুনেছি, এটা কি চরিত্রটাকে ধরে রাখার জন্য?
সুমন: অবশ্যই। এটা আমার স্বপ্নের চরিত্র। শুটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর মাঝেই থাকার চেষ্টা করেছি।
জেসিয়া: আমি দীর্ঘদিন মার্শাল আর্ট শিখেছি, অ্যাকটিং শিখেছি। রুপা চরিত্রটার মতো হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি দিনের পর দিন।
পরিচালক আসিফ আকবরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
সুমন: তিনি অসাধারণ একজন মানুষ। কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। তাঁর সঙ্গে আরও কাজ করতে চাই।
জেসিয়া: নির্মাতা হিসেবে তাঁকে অসাধারণ মনে হয়েছে।
সোহেল রানাও মাসুদ রানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নিয়েছেন কি না।
সুমন: দুর্ভাগ্যবশত, সিনেমাটি করার আগে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। তা ছাড়া চরিত্রটাকে আমি নিজের মতো করেই ধারণের চেষ্টা করেছি। মাঝখানে কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম দেখা করার। কিন্তু উনি অসুস্থ থাকায় সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি, তাঁর সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিয়েছি।
যেভাবে মাসুদ রানাকে কল্পনা করতেন, তেমনটা হয়ে উঠতে পেরেছেন?
সুমন: এই জাজমেন্টটা দর্শক করবেন। তবে একটা ছোট্ট ঘটনা বলতে চাই, অডিশনের সময় যখন কাজীদার (কাজী আনোয়ার হোসেন) কাছে ছবি গেল। অনেক ছবির মাঝখানে কাজীদা আমার ছবিটা তুলে ধরে বললেন, এই যে আমার মাসুদ রানা। আমি কাজীদার বিশ্বাসের জায়গাটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি।
সিনেমায় হলিউড-বলিউড অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সুমন: শিল্পী হিসেবে তাঁরা অসাধারণ! মনে আছে, আমি ৩৬ ঘণ্টা ফ্লাই করে যুক্তরাষ্ট্রে শুটিংয়ে গেলাম। সেটে গিয়ে দেখি, মাইকেল জেই হোয়াইট দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকে দেখে মূর্তির মতো হয়ে গেলাম। প্রিয় মানুষকে দেখলে আমার এমন হয়। পরিচালক আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে বললাম, আমি পারব না। পরে তিনি জেইকে গিয়ে বললেন, আমাদের এম আর-নাইন দাঁড়িয়ে আছে, তোমার সামনে আসার সাহস পাচ্ছে না। জেই নিজে এসে আমার সঙ্গে পরিচিত হলেন, গল্প করলেন। একেবারেই যেন মাটির মানুষ। আর অমি বৈদ্যর কথা কী বলব, ও যে কী চমৎকার মানুষ, অসাধারণ এক অভিনেতা!
জেসিয়া: আমি বাংলাদেশ অংশের কাজ করেছি। তাই তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কাজ হয়নি, তবে যতটা দেখেছি, শুনেছি, মুগ্ধ হয়েছি।
আমাদের শিল্পীদের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্য কোথায়?
সুমন: শিল্পের জায়গায় সবাই সমান। তাঁরাও আর্টিস্ট, আমরাও আর্টিস্ট। কিন্তু প্রোডাকশনের জায়গা থেকে যদি বলেন, তাহলে টেকনোলজিক্যালি তাঁরা অনেক এগিয়ে। সেদিক থেকে চাইলেও আমরা তাঁদের সমান সুযোগ পাই না, তাঁদের সমান হতে পারি না। তবে আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, বেশি দিন লাগবে না তাঁদের সমানে সমান কাজ করতে।
আমাদের অনেক শিল্পীই নাকি কলটাইমই মেনটেইন করেন না। ১০টার কলে বেলা ৩টায় আসেন এমনও শোনা যায়। তাঁদেরও কি এমন হয়?
সুমন: আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু ভিন্ন। এমন ঘটনার মুখে পড়তে হয়নি কখনো। সিনেমার আর্টিস্টরা অন টাইমেই সেটে আসেন। আমি যদি সারা দিন বসে থেকেও শট না দিই, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে না হয়, তাতে কিছুই যায় আসে না। আমরা সেটে সময় দেওয়ার জন্যই পেইড হই। ক্যামেরার সামনে কতক্ষণ দাঁড়াতে হয় বলুন, অথচ সময় কিন্তু দিতে হয় অনেক।
৮৩ কোটি টাকার বাজেটের সিনেমাটি দিয়ে ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসার কথা বলেছেন প্রযোজক। এটা কীভাবে সম্ভব হবে? সেভাবে প্রচার বা প্রস্তুতি কি নেওয়া হয়েছে?
সুমন: সংখ্যাটা আসলে ফরেন রেভিনিউ-নির্ভর। দেশ থেকে এত টাকা আসবে না। হলিউডের দিকে তাকালে দেখবেন, সিনেমা তৈরির পর ওটা নিয়ে আমাদের দেশের মতো প্রচার চলে না। পরিকল্পনামতো কিছু কনটেন্ট বানিয়ে সেটা অনলাইনে বা মিডিয়ায় ছাড়া হয়, সিনেমাটা সম্পর্কে মানুষকে জানানো হয়। বেস্ট ওয়ে কিন্তু মুখ থেকে মুখে। সিনেমা ভালো হলে মানুষের মুখে মুখেই প্রচার ছড়িয়ে যাবে।
জেসিয়া: আমরা সংবাদপত্র, টিভি বা গণমাধ্যমগুলোতে সময় দিচ্ছি। যাদের মাধ্যমে সিনেমার সব ধরনের খবর মানুষ পেয়ে যাবেন।
কয়েকটা পয়েন্ট বলুন, যে কারণে সিনেমাটি দর্শকদের জন্য উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
সুমন: স্পাই এজেন্ট নিয়ে সারা বিশ্বে কাজ হচ্ছে। জেমস বন্ড তো এখনো জনপ্রিয়। আমাদেরও এমন জনপ্রিয় চরিত্র আছে—মাসুদ রানা। প্রায় ছয় দশক ধরে এই ফিকশনাল চরিত্রটা নানা প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। সেই চরিত্রটাই এই সিনেমায় সারা বিশ্বে পরিচিত হচ্ছে, যেটা আমাদের নিজেদের চরিত্র, নিজেদের সিনেমা। যেকোনো বাঙালির জন্য এটা গর্বের। বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণ রয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি সাবটাইটেল রয়েছে।
জেসিয়া: প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভরপুর অ্যাকশন, সেই সঙ্গে গল্পে থাকছে রহস্য। আর মাসুদ রানার মতো জনপ্রিয় চরিত্রের সঙ্গে জার্নি যে কারও জন্যই আনন্দদায়ক হবে।
মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলো সম্পর্কে বলুন…
সুমন: ২৫ আগস্ট এম আর-নাইন মুক্তির পর ৮ সেপ্টেম্বর আসছে আমার অভিনীত ‘অন্তর্জাল’। ওটাও একটা দারুণ সিনেমা। সেটি নিয়েও অনেক আশাবাদী।
মাসুদ রানা নিয়ে নতুন আরও সিনেমা তৈরি হবে?
সুমন: প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে কন্টিনিউ করে যাব।
কন্টিনিউ করা কি এই সিনেমার ব্যবসায়িক সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে? সিনেমা ফ্লপ করলে কি এমন বিশাল বাজেটের নতুন সিনেমা হবে?
সুমন: আমি চিন্তাও করতে চাই না এমন কিছু হবে। আই থিঙ্ক সবকিছু ঠিকঠাকই যাবে। মানুষ পছন্দ করবেন। আর মাসুদ রানা নিয়ে দ্বিতীয় সিনেমার কাজও কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। অ্যাটলিস্ট, লেখার কাজ শেষ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সুমন: ভালো সিনেমা করা, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে বড় করা। যেন আমাদের পরের প্রজন্ম একটা হেলদি আর আনন্দঘন পরিবেশ পায়। আমাদের সিনেমা যেন বিশ্ব জয় করতে পারে।
জেসিয়া: ভালো কাজ করতে চাই। অনেক কাজ করতে চাই। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে চাই।
এখনকার শিল্পীদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ বা সম্পর্কটা কেমন?
সুমন: শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার একবারই দেখা হয়েছে। তিনি চমৎকার মানুষ। তাঁর সিনেমা ভালো লাগে, তিনি আমার তারকা। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে যে খুব দেখা হয় তা নয়। আমি আসলে ঘরকুনো মানুষ, কাজ শেষে ঘরে থাকতেই ভালোবাসি।
জেসিয়া: আমি সিনেমায় নতুন। সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়ে ওঠেনি, অতটা দেখা বা যোগাযোগ হয় না।
সুমন তো ব্যারিস্টার হতে চেয়েছিলেন, আর জেসিয়া মডেল। সিনেমায় এলেন কীভাবে?
সুমন: অস্ট্রেলিয়া থেকে যখন দেশে আসি, সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কখনোই চাকরি করব না। আমার কাছের কয়েকজন পরামর্শ দিলেন, মডেলিং করো, মিডিয়ায় কাজ করো। এভাবেই শুরু। আমি মডেলিং করতাম। একসময় সিদ্ধান্ত নিই, ভিজ্যুয়াল মিডিয়ায় কাজ করব। একটা টেলিফিল্ম করি আর ১০ পর্বের একটি ধারাবাহিক করি। এর মাঝখানেই সিনেমার প্রস্তাব আসে।
জেসিয়া: মডেলিং করতে করতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, সিনেমা করব। যখন অফার আসে, ইয়েস বলে দিই।
পরিবার থেকে সাপোর্ট কেমন পেয়েছিলেন?
সুমন: পরিবারে আমিই একমাত্র মিডিয়ায় কাজ করি। পরিবারের কেউই আমার কাজে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। একমাত্র যখন পড়ালেখা করতে চাইনি, তখন বাবা বাধা দিয়েছিলেন।
পড়ালেখা করতে চাননি মানে?
সুমন: ইচ্ছা ছিল ব্যারিস্টার হব। কিন্তু যখন ঢাকা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে চান্স পেলাম না; বাবাকে বললাম, বাবা, আমি ব্যারিস্টার হতে পারব না, আমি আর পড়তে চাই না। বাবার সাফ কথা, তোমাকে পড়তে হবে। অগত্যা পছন্দ না হলেও কমার্স নিয়েই পড়তে হলো, একসময় আমি অস্ট্রেলিয়ায় চলে যাই।
পরিবার থেকে কে বেশি সাপোর্ট দিলেন?
সুমন: মা আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্টার। কাজের অনুপ্রেরণাটা আমি তাঁর কাছ থেকে বেশি পাই। আর বাবা তো বাবাই, কখনো মুখে বলেন না, কিন্তু বুকের ভেতর ইমোশনটা চেপে রাখেন। আমার ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমা রিলিজের পর ঠিকই অফিস কলিগদের দলেবলে সিনেমা দেখিয়েছেন। বড় বোন, বোনের হাজব্যান্ড—সবাই সাপোর্ট দিয়েছেন।
জেসিয়া: আমি একটা কনজারভেটিভ ফ্যামিলি থেকে এসেছি। তাই শুরুর দিকে ফ্যামিলি সাপোর্ট অতটা পাইনি। এখন সবাই অনেক সাপোর্ট করছেন।
ইন্ডাস্ট্রির কার অভিনয় ভালো লাগে? কার অভিনয় দেখে মনে হয়েছে, আমিও সিনেমা করব?
সুমন: অ্যাকশন ভালো লাগে। তাই আমার প্রিয় মান্না ভাই। জাফর ইকবাল, সোহেল রানার মতো অভিনেতাদের দেখেও আমি ভীষণ অনুপ্রাণিত। এ ছাড়া রোমান্টিক হিরোদের মাঝে সালমান শাহ ছিলেন, এখন শাকিব খান আছেন।
জেসিয়া: নায়িকা শাবনূর আমার সব সময়ের প্রিয়।
অল্প কথায় নিজেদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলুন।
সুমন: মডেলিং থেকে সিনেমায় এসেছি। অভিনয় করেছি ‘অচেনা হৃদয়’, ‘রুদ্র দ্য গ্যাংস্টার’, ‘আদি’, ‘ঢাকা অ্যাটাক’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘দাহকাল’, ‘ভ্রমর’, ‘হৃদিতা’, ‘অন্তর্জাল’ ও ‘এম আর-নাইন’ সিনেমায়।
জেসিয়া: ২০১৭ সালে মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ নির্বাচিত হই। মডেলিং করেছি বেশ কিছুদিন। এরপর কয়েকটা টেলিফিল্ম করে কিছুদিন ব্রেক নিয়েছি। এখন এম আর-নাইন দিয়ে সিনেমা শুরু করলাম।
মাসুদ রানা হয়ে ওঠার জন্য সুমনের প্রস্তুতি কেমন ছিল?
সুমন: আমরা ফাইট প্র্যাকটিস করেছি টানা তিন বছর। এরই মাঝে অ্যাকটিং ক্লাস করতাম। নিজের মাঝে মাসুদ রানাকে ধরে রাখার চেষ্টা করতাম সব সময়। চরিত্রটাকে তো অনেক আগে থেকেই চিনি। মাসুদ রানা যেসব কাজ করে বা যেভাবে চলে, কথা বলে, সেভাবেই চেষ্টা করতাম।
এই সিনেমা চলাকালে নতুন কোনো সিনেমার কাজ করেননি শুনেছি, এটা কি চরিত্রটাকে ধরে রাখার জন্য?
সুমন: অবশ্যই। এটা আমার স্বপ্নের চরিত্র। শুটিং শেষ না হওয়া পর্যন্ত এর মাঝেই থাকার চেষ্টা করেছি।
জেসিয়া: আমি দীর্ঘদিন মার্শাল আর্ট শিখেছি, অ্যাকটিং শিখেছি। রুপা চরিত্রটার মতো হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি দিনের পর দিন।
পরিচালক আসিফ আকবরের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
সুমন: তিনি অসাধারণ একজন মানুষ। কাজের ব্যাপারে ভীষণ সিরিয়াস। তাঁর সঙ্গে আরও কাজ করতে চাই।
জেসিয়া: নির্মাতা হিসেবে তাঁকে অসাধারণ মনে হয়েছে।
সোহেল রানাও মাসুদ রানা চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর কাছ থেকে কোনো পরামর্শ নিয়েছেন কি না।
সুমন: দুর্ভাগ্যবশত, সিনেমাটি করার আগে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি। তা ছাড়া চরিত্রটাকে আমি নিজের মতো করেই ধারণের চেষ্টা করেছি। মাঝখানে কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম দেখা করার। কিন্তু উনি অসুস্থ থাকায় সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি, তাঁর সঙ্গে দেখা করে দোয়া নিয়েছি।
যেভাবে মাসুদ রানাকে কল্পনা করতেন, তেমনটা হয়ে উঠতে পেরেছেন?
সুমন: এই জাজমেন্টটা দর্শক করবেন। তবে একটা ছোট্ট ঘটনা বলতে চাই, অডিশনের সময় যখন কাজীদার (কাজী আনোয়ার হোসেন) কাছে ছবি গেল। অনেক ছবির মাঝখানে কাজীদা আমার ছবিটা তুলে ধরে বললেন, এই যে আমার মাসুদ রানা। আমি কাজীদার বিশ্বাসের জায়গাটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি।
সিনেমায় হলিউড-বলিউড অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করলেন। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
সুমন: শিল্পী হিসেবে তাঁরা অসাধারণ! মনে আছে, আমি ৩৬ ঘণ্টা ফ্লাই করে যুক্তরাষ্ট্রে শুটিংয়ে গেলাম। সেটে গিয়ে দেখি, মাইকেল জেই হোয়াইট দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁকে দেখে মূর্তির মতো হয়ে গেলাম। প্রিয় মানুষকে দেখলে আমার এমন হয়। পরিচালক আমাকে পরিচয় করিয়ে দিতে চাইলে বললাম, আমি পারব না। পরে তিনি জেইকে গিয়ে বললেন, আমাদের এম আর-নাইন দাঁড়িয়ে আছে, তোমার সামনে আসার সাহস পাচ্ছে না। জেই নিজে এসে আমার সঙ্গে পরিচিত হলেন, গল্প করলেন। একেবারেই যেন মাটির মানুষ। আর অমি বৈদ্যর কথা কী বলব, ও যে কী চমৎকার মানুষ, অসাধারণ এক অভিনেতা!
জেসিয়া: আমি বাংলাদেশ অংশের কাজ করেছি। তাই তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কাজ হয়নি, তবে যতটা দেখেছি, শুনেছি, মুগ্ধ হয়েছি।
আমাদের শিল্পীদের সঙ্গে তাঁদের পার্থক্য কোথায়?
সুমন: শিল্পের জায়গায় সবাই সমান। তাঁরাও আর্টিস্ট, আমরাও আর্টিস্ট। কিন্তু প্রোডাকশনের জায়গা থেকে যদি বলেন, তাহলে টেকনোলজিক্যালি তাঁরা অনেক এগিয়ে। সেদিক থেকে চাইলেও আমরা তাঁদের সমান সুযোগ পাই না, তাঁদের সমান হতে পারি না। তবে আমরা যেভাবে এগোচ্ছি, বেশি দিন লাগবে না তাঁদের সমানে সমান কাজ করতে।
আমাদের অনেক শিল্পীই নাকি কলটাইমই মেনটেইন করেন না। ১০টার কলে বেলা ৩টায় আসেন এমনও শোনা যায়। তাঁদেরও কি এমন হয়?
সুমন: আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু ভিন্ন। এমন ঘটনার মুখে পড়তে হয়নি কখনো। সিনেমার আর্টিস্টরা অন টাইমেই সেটে আসেন। আমি যদি সারা দিন বসে থেকেও শট না দিই, ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে না হয়, তাতে কিছুই যায় আসে না। আমরা সেটে সময় দেওয়ার জন্যই পেইড হই। ক্যামেরার সামনে কতক্ষণ দাঁড়াতে হয় বলুন, অথচ সময় কিন্তু দিতে হয় অনেক।
৮৩ কোটি টাকার বাজেটের সিনেমাটি দিয়ে ৭০০ কোটি টাকার ব্যবসার কথা বলেছেন প্রযোজক। এটা কীভাবে সম্ভব হবে? সেভাবে প্রচার বা প্রস্তুতি কি নেওয়া হয়েছে?
সুমন: সংখ্যাটা আসলে ফরেন রেভিনিউ-নির্ভর। দেশ থেকে এত টাকা আসবে না। হলিউডের দিকে তাকালে দেখবেন, সিনেমা তৈরির পর ওটা নিয়ে আমাদের দেশের মতো প্রচার চলে না। পরিকল্পনামতো কিছু কনটেন্ট বানিয়ে সেটা অনলাইনে বা মিডিয়ায় ছাড়া হয়, সিনেমাটা সম্পর্কে মানুষকে জানানো হয়। বেস্ট ওয়ে কিন্তু মুখ থেকে মুখে। সিনেমা ভালো হলে মানুষের মুখে মুখেই প্রচার ছড়িয়ে যাবে।
জেসিয়া: আমরা সংবাদপত্র, টিভি বা গণমাধ্যমগুলোতে সময় দিচ্ছি। যাদের মাধ্যমে সিনেমার সব ধরনের খবর মানুষ পেয়ে যাবেন।
কয়েকটা পয়েন্ট বলুন, যে কারণে সিনেমাটি দর্শকদের জন্য উপভোগ্য হয়ে উঠবে।
সুমন: স্পাই এজেন্ট নিয়ে সারা বিশ্বে কাজ হচ্ছে। জেমস বন্ড তো এখনো জনপ্রিয়। আমাদেরও এমন জনপ্রিয় চরিত্র আছে—মাসুদ রানা। প্রায় ছয় দশক ধরে এই ফিকশনাল চরিত্রটা নানা প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়েছে। সেই চরিত্রটাই এই সিনেমায় সারা বিশ্বে পরিচিত হচ্ছে, যেটা আমাদের নিজেদের চরিত্র, নিজেদের সিনেমা। যেকোনো বাঙালির জন্য এটা গর্বের। বিভিন্ন দেশের শিল্পীদের অংশগ্রহণ রয়েছে। বাংলা ও ইংরেজি সাবটাইটেল রয়েছে।
জেসিয়া: প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত ভরপুর অ্যাকশন, সেই সঙ্গে গল্পে থাকছে রহস্য। আর মাসুদ রানার মতো জনপ্রিয় চরিত্রের সঙ্গে জার্নি যে কারও জন্যই আনন্দদায়ক হবে।
মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলো সম্পর্কে বলুন…
সুমন: ২৫ আগস্ট এম আর-নাইন মুক্তির পর ৮ সেপ্টেম্বর আসছে আমার অভিনীত ‘অন্তর্জাল’। ওটাও একটা দারুণ সিনেমা। সেটি নিয়েও অনেক আশাবাদী।
মাসুদ রানা নিয়ে নতুন আরও সিনেমা তৈরি হবে?
সুমন: প্রাথমিক পর্যায়ে তিনটি সিনেমা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। সব ঠিক থাকলে কন্টিনিউ করে যাব।
কন্টিনিউ করা কি এই সিনেমার ব্যবসায়িক সাফল্যের ওপর নির্ভর করছে? সিনেমা ফ্লপ করলে কি এমন বিশাল বাজেটের নতুন সিনেমা হবে?
সুমন: আমি চিন্তাও করতে চাই না এমন কিছু হবে। আই থিঙ্ক সবকিছু ঠিকঠাকই যাবে। মানুষ পছন্দ করবেন। আর মাসুদ রানা নিয়ে দ্বিতীয় সিনেমার কাজও কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। অ্যাটলিস্ট, লেখার কাজ শেষ।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সুমন: ভালো সিনেমা করা, আমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে বড় করা। যেন আমাদের পরের প্রজন্ম একটা হেলদি আর আনন্দঘন পরিবেশ পায়। আমাদের সিনেমা যেন বিশ্ব জয় করতে পারে।
জেসিয়া: ভালো কাজ করতে চাই। অনেক কাজ করতে চাই। মানুষের ভালোবাসা অর্জন করতে চাই।
এখনকার শিল্পীদের সঙ্গে আপনাদের যোগাযোগ বা সম্পর্কটা কেমন?
সুমন: শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে আমার একবারই দেখা হয়েছে। তিনি চমৎকার মানুষ। তাঁর সিনেমা ভালো লাগে, তিনি আমার তারকা। বাকি যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে যে খুব দেখা হয় তা নয়। আমি আসলে ঘরকুনো মানুষ, কাজ শেষে ঘরে থাকতেই ভালোবাসি।
জেসিয়া: আমি সিনেমায় নতুন। সবার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয়ে ওঠেনি, অতটা দেখা বা যোগাযোগ হয় না।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৫ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৯ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৯ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৯ দিন আগে