মো. আখতারুজ্জামান খান
শিক্ষার অনন্য বাতিঘর বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ, যা বিএম কলেজ নামেই বেশি পরিচিত। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত পিতা ব্রজমোহন দত্তের নামে ১৮৮৯ সালের ৪ জুন প্রতিষ্ঠা করেন ব্রজমোহন কলেজ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসনের রাজনৈতিক বাস্তবতা বরিশালকে স্বদেশ-চেতনা ও সমাজ বিবর্তনের বাস্তব চাহিদার মুখোমুখি করে। এ প্রেক্ষাপটেই প্রতিষ্ঠিত হয় বিএম কলেজ। কাল ব্যাপ্তিতে এই কলেজটিই সমৃদ্ধ করছে বরিশালের সমাজ, সংস্কৃতি ও জনমানসকে।
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ২৭ জুন, ১৮৮৪ সালে ব্রজমোহন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় ১৮৮৯ সালের ৪ জানুয়ারি কলেজ খোলার জন্য আবেদন করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার উইলিয়াম কোমার পেথেরামের কার্যকালে ব্রজমোহন কলেজ ২য় শ্রেণির কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। নিজ বাসভবনে বিদ্যালয় ও কলেজের কার্যক্রম চালিয়ে শিক্ষায় আত্মোৎসর্গের এক ইতিহাস নির্মাণ করেন মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত। বরিশালের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বল্প-খরচে সুশিক্ষা দিয়ে প্রকৃত মানুষ নির্মাণের একটি মানব-কারখানা প্রতিষ্ঠার কাজে ব্রতী হয়েছেন নিঃস্বার্থভাবে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা-দর্শন
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধসম্পন্ন একটি অনুভূমিক বোধ সমৃদ্ধ সমাজের প্রত্যাশায় ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র-শিক্ষক নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন দরিদ্রবান্ধব সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠন। মানব মননের মৌলিক উৎকর্ষের জন্য সনদকেন্দ্রিকতা নয়, শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপের জন্য ব্রজমোহন কলেজের মূলমন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সত্য প্রেম পবিত্রতার আদর্শ। ছাত্র-শিক্ষকের যৌথ প্রয়াসে প্রকাশনা বের হতো ‘ছাত্র-বন্ধু’। প্রথমত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, পরে তৎকালীন বড়লাটের সম্মতিতে ১৮৯৮ সালে ব্রজমোহন কলেজ প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। তখন এ কলেজটিতে বিএ, বিএল ও প্লিডারশিপ শ্রেণি চালু হয়।
শুরু থেকেই এগিয়ে
সমসাময়িক স্বদেশি আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দেশ-ভাবনার মূর্ত পদক্ষেপের কারণে ব্রজমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তকে এক অবর্ণনীয় সংকটের মধ্যে যেতে হয়। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কলেজে ইংরেজি ও দর্শন বিষয়ে পড়াতেন। সংকট উত্তরণের বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে কলেজটি এগিয়ে যায়। শিক্ষার অগ্রগতিতে ক্রমান্বয়ে কলেজটির নাম সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অনার্স পাঠ্যক্রম চালু হওয়ার পরে প্রায় প্রতিবছরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দু-একজন ছাত্রছাত্রী ব্রজমোহন কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করতেন। শিক্ষায় এমন অর্জনের জন্য কলেজটি ‘অক্সফোর্ড অব বেঙ্গল’ নামেও পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৫ সালের ১ জুলাই ব্রজমোহন কলেজ সরকারি কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শোষণমুক্তির লড়াই
ব্রিটিশবিরোধী ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রাম, স্বদেশি ও অসহযোগ আন্দোলন, পাকিস্তানের দুঃশাসনবিরোধী ধারাবাহিক সংগ্রাম, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ, বিকাশ ও বাস্তবায়ন পর্বে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ ও শাণিত চেতনাবোধের আঘাতে জাগ্রত হয়েছে বরিশাল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক, ছাত্রনেতারা ও শিক্ষার্থীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর সার্বিক স্বাধীনতাকামী জন-আকাঙ্ক্ষার মূল রাজনৈতিক স্পিরিটকে ধারণ করে লড়াই ও উৎসর্গের ইতিহাস রচনা করেছেন। ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আরও ৪২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী দেশমাতৃকার জন্য শহীদ হয়েছেন।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে উচ্চশিক্ষা বিকেন্দ্রীকরণ নীতির আওতায় ব্রজমোহন কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষে বাংলা, অর্থনীতি, ইতিহাস ও রসায়নে স্নাতকোত্তর শ্রেণি খোলা হয়। সময়ের বিবর্তনে আজকের ব্রজমোহন কলেজে ২২টি বিষয়ে স্নাতক ও ২১টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে। ১৯৯৯ সালে বন্ধ হওয়া উচ্চমাধ্যমিক কোর্স পুনরায় ২০১৬-১৭ সালে চালু করা হয়। কলেজের মাস্টার্স শ্রেণিতে পাঠদান করা হয় আইসিটি কোর্স। কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ মোট পদসংখ্যা ১৯৮টি। বিভিন্ন স্তরে পদায়িত আছেন ১৮৭ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৯৪। কলেজের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাম্প্রতিক পরীক্ষার ফলাফল প্রশংসনীয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সে উত্তীর্ণের হার যথাক্রমে ৮৮ দশমিক ৪৫ এবং ৭১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সেরা কলেজের তালিকায়
একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, একটি লাইব্রেরি ভবন, একটি ক্যানটিন, ১১টি একাডেমিক ভবন, ৭টি আবাসিক হল নিয়ে ৬০ একর জমির ওপর দৃষ্টিনন্দন ব্রজমোহন কলেজ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শিক্ষা সক্ষমতায় অসাধারণ ভূমিকা রাখছে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত কলেজগুলোর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে ব্রজমোহন কলেজের অবস্থান দ্বিতীয়।
কবি-দার্শনিকদের আঁতুড়ঘর
ত্রিশের দশকের শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন। চারণ দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরকে দার্শনিক হিসেবে বেড়ে ওঠার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন ব্রজমোহন কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক কাজী গোলাম কাদের। ব্রজমোহন কলেজের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ছিল আরজ আলী মাতুব্বরের চর্চাকেন্দ্র।
মৌলিক অনুষঙ্গ
শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—এ চারটি মৌলিক অনুষঙ্গ ঘিরে ব্রজমোহন কলেজে রচিত হয়েছে এক অনবদ্য পথচলা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক সম্মান, সৌহার্দ্য ও শ্রদ্ধা-স্নেহের রসায়নে আবদ্ধ। দেশ-বিদেশে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বমহিমায় নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সার্বিক শিক্ষা উন্নয়ন ও আলোর দীপ্ত উচ্চারণে বরিশাল ও ব্রজমোহন কলেজ অনিবার্য পরিপূরকতায় এগিয়ে যাচ্ছে সম্মুখপানে।
সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল।
শিক্ষার অনন্য বাতিঘর বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ, যা বিএম কলেজ নামেই বেশি পরিচিত। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত পিতা ব্রজমোহন দত্তের নামে ১৮৮৯ সালের ৪ জুন প্রতিষ্ঠা করেন ব্রজমোহন কলেজ। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ভারতবর্ষের ব্রিটিশ শাসনের রাজনৈতিক বাস্তবতা বরিশালকে স্বদেশ-চেতনা ও সমাজ বিবর্তনের বাস্তব চাহিদার মুখোমুখি করে। এ প্রেক্ষাপটেই প্রতিষ্ঠিত হয় বিএম কলেজ। কাল ব্যাপ্তিতে এই কলেজটিই সমৃদ্ধ করছে বরিশালের সমাজ, সংস্কৃতি ও জনমানসকে।
প্রতিষ্ঠার ইতিহাস
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত ২৭ জুন, ১৮৮৪ সালে ব্রজমোহন বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিকতায় ১৮৮৯ সালের ৪ জানুয়ারি কলেজ খোলার জন্য আবেদন করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার উইলিয়াম কোমার পেথেরামের কার্যকালে ব্রজমোহন কলেজ ২য় শ্রেণির কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। নিজ বাসভবনে বিদ্যালয় ও কলেজের কার্যক্রম চালিয়ে শিক্ষায় আত্মোৎসর্গের এক ইতিহাস নির্মাণ করেন মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত। বরিশালের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বল্প-খরচে সুশিক্ষা দিয়ে প্রকৃত মানুষ নির্মাণের একটি মানব-কারখানা প্রতিষ্ঠার কাজে ব্রতী হয়েছেন নিঃস্বার্থভাবে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা-দর্শন
মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি সহশিক্ষা, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধসম্পন্ন একটি অনুভূমিক বোধ সমৃদ্ধ সমাজের প্রত্যাশায় ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র-শিক্ষক নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন দরিদ্রবান্ধব সমিতি ও বিভিন্ন সংগঠন। মানব মননের মৌলিক উৎকর্ষের জন্য সনদকেন্দ্রিকতা নয়, শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপের জন্য ব্রজমোহন কলেজের মূলমন্ত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সত্য প্রেম পবিত্রতার আদর্শ। ছাত্র-শিক্ষকের যৌথ প্রয়াসে প্রকাশনা বের হতো ‘ছাত্র-বন্ধু’। প্রথমত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, পরে তৎকালীন বড়লাটের সম্মতিতে ১৮৯৮ সালে ব্রজমোহন কলেজ প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। তখন এ কলেজটিতে বিএ, বিএল ও প্লিডারশিপ শ্রেণি চালু হয়।
শুরু থেকেই এগিয়ে
সমসাময়িক স্বদেশি আন্দোলনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও দেশ-ভাবনার মূর্ত পদক্ষেপের কারণে ব্রজমোহন কলেজ প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তকে এক অবর্ণনীয় সংকটের মধ্যে যেতে হয়। মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্ত কলেজে ইংরেজি ও দর্শন বিষয়ে পড়াতেন। সংকট উত্তরণের বিভিন্ন প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে কলেজটি এগিয়ে যায়। শিক্ষার অগ্রগতিতে ক্রমান্বয়ে কলেজটির নাম সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। অনার্স পাঠ্যক্রম চালু হওয়ার পরে প্রায় প্রতিবছরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দু-একজন ছাত্রছাত্রী ব্রজমোহন কলেজ থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করতেন। শিক্ষায় এমন অর্জনের জন্য কলেজটি ‘অক্সফোর্ড অব বেঙ্গল’ নামেও পরিচিতি লাভ করে। ১৯৬৫ সালের ১ জুলাই ব্রজমোহন কলেজ সরকারি কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
মহান মুক্তিযুদ্ধ ও শোষণমুক্তির লড়াই
ব্রিটিশবিরোধী ভারতের স্বাধীনতাসংগ্রাম, স্বদেশি ও অসহযোগ আন্দোলন, পাকিস্তানের দুঃশাসনবিরোধী ধারাবাহিক সংগ্রাম, ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ঐতিহাসিক ছয় দফা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসব আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ, বিকাশ ও বাস্তবায়ন পর্বে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ ও শাণিত চেতনাবোধের আঘাতে জাগ্রত হয়েছে বরিশাল। একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষক, ছাত্রনেতারা ও শিক্ষার্থীরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর সার্বিক স্বাধীনতাকামী জন-আকাঙ্ক্ষার মূল রাজনৈতিক স্পিরিটকে ধারণ করে লড়াই ও উৎসর্গের ইতিহাস রচনা করেছেন। ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থী বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আরও ৪২ জন শিক্ষক-শিক্ষার্থী দেশমাতৃকার জন্য শহীদ হয়েছেন।
সহশিক্ষা কার্যক্রম
স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২-৭৩ সালে উচ্চশিক্ষা বিকেন্দ্রীকরণ নীতির আওতায় ব্রজমোহন কলেজে বাংলা, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতক এবং ১৯৭৪-৭৫ শিক্ষাবর্ষে বাংলা, অর্থনীতি, ইতিহাস ও রসায়নে স্নাতকোত্তর শ্রেণি খোলা হয়। সময়ের বিবর্তনে আজকের ব্রজমোহন কলেজে ২২টি বিষয়ে স্নাতক ও ২১টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে। ১৯৯৯ সালে বন্ধ হওয়া উচ্চমাধ্যমিক কোর্স পুনরায় ২০১৬-১৭ সালে চালু করা হয়। কলেজের মাস্টার্স শ্রেণিতে পাঠদান করা হয় আইসিটি কোর্স। কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাসহ মোট পদসংখ্যা ১৯৮টি। বিভিন্ন স্তরে পদায়িত আছেন ১৮৭ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা। শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৪ হাজার ৯৪। কলেজের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাম্প্রতিক পরীক্ষার ফলাফল প্রশংসনীয়। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কোর্সে উত্তীর্ণের হার যথাক্রমে ৮৮ দশমিক ৪৫ এবং ৭১ দশমিক ৮৬ শতাংশ।
সেরা কলেজের তালিকায়
একটি প্রশাসনিক ভবন, একটি অডিটোরিয়াম, একটি লাইব্রেরি ভবন, একটি ক্যানটিন, ১১টি একাডেমিক ভবন, ৭টি আবাসিক হল নিয়ে ৬০ একর জমির ওপর দৃষ্টিনন্দন ব্রজমোহন কলেজ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে শিক্ষা সক্ষমতায় অসাধারণ ভূমিকা রাখছে বরিশাল তথা দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত কলেজগুলোর মধ্যে র্যাঙ্কিংয়ে ব্রজমোহন কলেজের অবস্থান দ্বিতীয়।
কবি-দার্শনিকদের আঁতুড়ঘর
ত্রিশের দশকের শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ ব্রজমোহন কলেজের ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন। চারণ দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বরকে দার্শনিক হিসেবে বেড়ে ওঠার পেছনে অন্যতম ভূমিকা রেখেছিলেন ব্রজমোহন কলেজের দর্শন বিভাগের শিক্ষক কাজী গোলাম কাদের। ব্রজমোহন কলেজের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি ছিল আরজ আলী মাতুব্বরের চর্চাকেন্দ্র।
মৌলিক অনুষঙ্গ
শিক্ষা, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান—এ চারটি মৌলিক অনুষঙ্গ ঘিরে ব্রজমোহন কলেজে রচিত হয়েছে এক অনবদ্য পথচলা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক সম্মান, সৌহার্দ্য ও শ্রদ্ধা-স্নেহের রসায়নে আবদ্ধ। দেশ-বিদেশে ব্রজমোহন কলেজের শিক্ষার্থীরা স্বমহিমায় নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। সার্বিক শিক্ষা উন্নয়ন ও আলোর দীপ্ত উচ্চারণে বরিশাল ও ব্রজমোহন কলেজ অনিবার্য পরিপূরকতায় এগিয়ে যাচ্ছে সম্মুখপানে।
সহযোগী অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, সরকারি ব্রজমোহন কলেজ, বরিশাল।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৩ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৭ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৭ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৭ দিন আগে