শাহরিয়ার হাসান, টেকনাফ থেকে ফিরে
কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির আপন দুই ভাই শফিকুল ইসলাম ও ফয়সাল রহমান টেকনাফের ইয়াবা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক। এই মাদক কারবারে সাবেক সাংসদ ও তাঁর আরেক ভাই পৌর কাউন্সিলর মুজিবুর রহমানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়েছেন। টেকনাফের নিহত ইয়াবা গডফাদার সাইফুল করিমের পরে তাঁরাই সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন।
দুটি মাদক মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) এভাবেই উল্লেখ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। পুলিশের অভিযোগপত্রে বদি ও তাঁর ভাইয়ের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছেন।
মাদক মামলার অভিযোগপত্রে ভাইয়ের সহায়তাকারী হিসেবে নাম উল্লেখ থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে আবদুর রহমান বদি আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আমরা তো আর একসঙ্গে থাকি না। কাজেই আমার কোন ভাই কী করে, সেটা তো আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। পুলিশ যখন অভিযোগপত্র দিয়েছে, তখন আদালতেই বিচার হোক। এতে আমার আর কী বলার আছে?’
সিআইডির অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, টেকনাফে চৌধুরীপাড়ার মৃত এজাহার মিয়ার দুই ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক (৩২) ও ফয়সাল রহমান (৩৫) ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে স্থানীয় কারবারিদের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। টেকনাফের চৌধুরীপাড়ায় পরিত্যক্ত আবাসিক হোটেল নিরিবিলির ১১০ ও ১১৮ নম্বর কক্ষে বসে তাঁরা এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই মাদক বিক্রির থেকে অবৈধ অর্থ মেসার্স ফয়সাল ও মেসার্স শফিকুল নামে এবি ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় লেনদেন করেন। সিআইডি তদন্তে ফয়সালের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার কোনো বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি। একইভাবে শফিকুলেরও ১ কোটি টাকার বৈধ কোনো উৎস খুঁজে পায়নি তদন্তকারীর সংস্থাটির ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিটটি।
মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই দুই ভাই জানিয়েছিলেন, ফয়সালের মেসার্স ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ নামে আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর শফিকুলের রয়েছে লবণের ব্যবসা। কিন্তু সরেজমিন তদন্তে কোনো ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বরং বড় ভাই সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি ও আরেক ভাই টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মাওলানা মজিবুর রহমানের প্রভাবই তাঁদের ইয়াবা ব্যবসার ‘পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে কাজ করেছে।
সিআইডির কর্মকর্তা বলছেন, তাঁদের নামে ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা ছাড়াও বাড়ি, গাড়ি, জমিসহ নানা রকম সম্পদ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও চারটি মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁরা মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বর্তমানে জামিনে আছেন।
ইয়াবা কারবার সম্পর্কে জানতে চাইলে বদির ভাই ফয়সাল রহমান কিছু বলতে রাজি হননি। তবে শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিআইডি সব তথ্য আদালতে জমা দিয়েছে, আদালত এখন যেটা বলবেন, সেটাই হবে। তবে আমরা তো আত্মসমর্পণ করে সাজা ভোগ করে এখন ভালো হয়ে গেছি।’
তবে বদির এক ভাই ভালো হয়ে যাওয়ার কথা বললেও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন মাঝে মাঝেই তাঁদের নিরিবিলি হোটেলে দেখা যায়। টেকনাফ বাজারের চৌধুরীপাড়ার লামার বাজারে এই নিরিবিলি আবাসিক হোটেল। তিনতলা ভবনটিতে কাউকে ভাড়া দেওয়া হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বছর ছয় বা সাত আগে থেকেই হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর থেকে এখানে বসেই নানা ধরনের ব্যবসা করেন আবদুর রহমান বদিসহ তাঁর সাত ভাই।
গত বুধবার দুপুরে ঘুরে দেখা যায়, হোটেলটি অনেকটাই পরিত্যক্ত। সেখান দুটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। একটিতে লেখা আছে মেসার্স মুজিবর এন্টারপ্রাইজ, এক্সপোর্টার ও ইমপোর্টার, যিনি পৌরসভার কাউন্সিলর। অন্যটিতে রয়েছে মেসার্স ওয়েনা এন্টারপ্রাইজের নাম।
লামার বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরোনো এক মুদি দোকানদার বলেন, ফয়সাল ও শফিকুলরা আগে সারা দিন এখানেই থাকতেন। অনেক মানুষ সেখানে আসতেন। রাতভর আড্ডা চলত। শুনেছি, এখান থেকেই ইয়াবা হাতবদল হতো। তাঁরা এখনো আসেন, তবে আগের চেয়ে কম। প্রতিদিন সন্ধ্যায় দিকে দুই-একবার দেখা যায় তাঁদের।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে কয়েক হাজার মানুষের সামনে তালিকাভুক্ত ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন বদির দুই ভাই ফয়সাল ও শফিকুল। আত্মসমর্পণের পর ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, জামিনে বের হয়ে অনেকেই আবার মাদক ব্যবসায় ফিরেছেন। তবে এই দুই ভাইয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ফয়সাল রহমানের এখন সারা দিন কাটান টেকনাফের খায়ুকখালী খালের (কেকে খাল) স্পিডবোট ঘাটে। সেখান থেকে প্রতিদিন ১০-১২টি স্পিডবোট সেন্ট মার্টিন যায়। প্রতি স্পিডবোর্ডে যাত্রী ওঠে ১০–১২ জন। সরকারি অনুমতি না নিয়ে চলা অবৈধ এই স্পিডবোর্ড যাঁরা চালান, তাঁদের যাত্রীপ্রতি ২৫০ টাকা দিতে হয় ফয়সালকে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক স্পিডবোটচালক বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন যেতে প্রতি যাত্রীর কাছে থেকে তাঁরা ৭৫০ টাকা করে নেন। ভাড়াটা অনেকটাই অস্বাভাবিক। ২৫০ টাকা ফয়সালকে না দিতে হলে ভাড়া কমাতে পারতেন বলে তিনি জানান। জানতে চাইলে ফয়সাল রহমান বলেন, সেখানে তাঁরও ব্যবসা রয়েছে। মানুষের টাকা কেন নেবেন?
টেকনাফ স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা কাঠ ও শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ আছে অন্য ভাই শফিকুল ইসলাম শফিকের। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও বন্দরে ট্রাকের সিরিয়াল—সবই তাঁর নিয়ন্ত্রণে চলে। জানতে চাইলে আজকের পত্রিকার কাছে বিষয়টি অস্বীকার করেননি শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন আর কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন তিনি। বন্দরেরই নানা রকম ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলছেন।
জানতে চাইলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে যাঁরা জামিনে বের হয়েছেন, তাঁদের নজরদারি করা হচ্ছে। মাদক যেন না ঢুকতে পারে, তাই চেকপোস্টও বাড়ানো হয়েছে।
তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন, পুলিশের গুলিতে মেজর (অব) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে বড় ধরনের পুলিশি অভিযান বন্ধ রয়েছে।
২০১৯ সালে দুই দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ১২৩ জন চিহ্নিত মাদক কারবারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এতে ১২ জনের অ্যাকাউন্টে ২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ১৬টি মানি লন্ডারিং মামলা সিআইডির কাছে ছিল। এর মধ্যে ৫টির অভিযোগপত্রসহ ১২টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। ৪টি মামলার তদন্ত চলছে।
কক্সবাজার-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদির আপন দুই ভাই শফিকুল ইসলাম ও ফয়সাল রহমান টেকনাফের ইয়াবা সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রক। এই মাদক কারবারে সাবেক সাংসদ ও তাঁর আরেক ভাই পৌর কাউন্সিলর মুজিবুর রহমানের প্রভাবকে কাজে লাগিয়েছেন। টেকনাফের নিহত ইয়াবা গডফাদার সাইফুল করিমের পরে তাঁরাই সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন।
দুটি মাদক মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে (চার্জশিট) এভাবেই উল্লেখ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। পুলিশের অভিযোগপত্রে বদি ও তাঁর ভাইয়ের নামও উল্লেখ করা হয়েছে। দুটি মামলার অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেছেন।
মাদক মামলার অভিযোগপত্রে ভাইয়ের সহায়তাকারী হিসেবে নাম উল্লেখ থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে আবদুর রহমান বদি আজকের পত্রিকা বলেন, ‘আমরা তো আর একসঙ্গে থাকি না। কাজেই আমার কোন ভাই কী করে, সেটা তো আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়। পুলিশ যখন অভিযোগপত্র দিয়েছে, তখন আদালতেই বিচার হোক। এতে আমার আর কী বলার আছে?’
সিআইডির অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, টেকনাফে চৌধুরীপাড়ার মৃত এজাহার মিয়ার দুই ছেলে শফিকুল ইসলাম শফিক (৩২) ও ফয়সাল রহমান (৩৫) ২০১২ থেকে ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে স্থানীয় কারবারিদের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। টেকনাফের চৌধুরীপাড়ায় পরিত্যক্ত আবাসিক হোটেল নিরিবিলির ১১০ ও ১১৮ নম্বর কক্ষে বসে তাঁরা এই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন। এই মাদক বিক্রির থেকে অবৈধ অর্থ মেসার্স ফয়সাল ও মেসার্স শফিকুল নামে এবি ব্যাংকের টেকনাফ শাখায় লেনদেন করেন। সিআইডি তদন্তে ফয়সালের অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭৪ হাজার টাকার কোনো বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি। একইভাবে শফিকুলেরও ১ কোটি টাকার বৈধ কোনো উৎস খুঁজে পায়নি তদন্তকারীর সংস্থাটির ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিটটি।
মামলা দুটির তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মনিরুজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এই দুই ভাই জানিয়েছিলেন, ফয়সালের মেসার্স ফয়সাল এন্টারপ্রাইজ নামে আমদানি ও রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর শফিকুলের রয়েছে লবণের ব্যবসা। কিন্তু সরেজমিন তদন্তে কোনো ব্যবসার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বরং বড় ভাই সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি ও আরেক ভাই টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মাওলানা মজিবুর রহমানের প্রভাবই তাঁদের ইয়াবা ব্যবসার ‘পৃষ্ঠপোষক’ হিসেবে কাজ করেছে।
সিআইডির কর্মকর্তা বলছেন, তাঁদের নামে ব্যাংকে মোটা অঙ্কের টাকা ছাড়াও বাড়ি, গাড়ি, জমিসহ নানা রকম সম্পদ করেছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে মাদক, অস্ত্র আইনসহ বিভিন্ন অভিযোগে আরও চারটি মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি তাঁরা মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে আত্মসমর্পণ করেছিলেন। বর্তমানে জামিনে আছেন।
ইয়াবা কারবার সম্পর্কে জানতে চাইলে বদির ভাই ফয়সাল রহমান কিছু বলতে রাজি হননি। তবে শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিআইডি সব তথ্য আদালতে জমা দিয়েছে, আদালত এখন যেটা বলবেন, সেটাই হবে। তবে আমরা তো আত্মসমর্পণ করে সাজা ভোগ করে এখন ভালো হয়ে গেছি।’
তবে বদির এক ভাই ভালো হয়ে যাওয়ার কথা বললেও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এখন মাঝে মাঝেই তাঁদের নিরিবিলি হোটেলে দেখা যায়। টেকনাফ বাজারের চৌধুরীপাড়ার লামার বাজারে এই নিরিবিলি আবাসিক হোটেল। তিনতলা ভবনটিতে কাউকে ভাড়া দেওয়া হয় না। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বছর ছয় বা সাত আগে থেকেই হোটেলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার পর থেকে এখানে বসেই নানা ধরনের ব্যবসা করেন আবদুর রহমান বদিসহ তাঁর সাত ভাই।
গত বুধবার দুপুরে ঘুরে দেখা যায়, হোটেলটি অনেকটাই পরিত্যক্ত। সেখান দুটি সাইনবোর্ড ঝুলছে। একটিতে লেখা আছে মেসার্স মুজিবর এন্টারপ্রাইজ, এক্সপোর্টার ও ইমপোর্টার, যিনি পৌরসভার কাউন্সিলর। অন্যটিতে রয়েছে মেসার্স ওয়েনা এন্টারপ্রাইজের নাম।
লামার বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুরোনো এক মুদি দোকানদার বলেন, ফয়সাল ও শফিকুলরা আগে সারা দিন এখানেই থাকতেন। অনেক মানুষ সেখানে আসতেন। রাতভর আড্ডা চলত। শুনেছি, এখান থেকেই ইয়াবা হাতবদল হতো। তাঁরা এখনো আসেন, তবে আগের চেয়ে কম। প্রতিদিন সন্ধ্যায় দিকে দুই-একবার দেখা যায় তাঁদের।
২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি টেকনাফে কয়েক হাজার মানুষের সামনে তালিকাভুক্ত ১০২ ইয়াবা ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের সঙ্গে আত্মসমর্পণ করেন বদির দুই ভাই ফয়সাল ও শফিকুল। আত্মসমর্পণের পর ছয় মাসের মধ্যে তাঁরা কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, জামিনে বের হয়ে অনেকেই আবার মাদক ব্যবসায় ফিরেছেন। তবে এই দুই ভাইয়ের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ফয়সাল রহমানের এখন সারা দিন কাটান টেকনাফের খায়ুকখালী খালের (কেকে খাল) স্পিডবোট ঘাটে। সেখান থেকে প্রতিদিন ১০-১২টি স্পিডবোট সেন্ট মার্টিন যায়। প্রতি স্পিডবোর্ডে যাত্রী ওঠে ১০–১২ জন। সরকারি অনুমতি না নিয়ে চলা অবৈধ এই স্পিডবোর্ড যাঁরা চালান, তাঁদের যাত্রীপ্রতি ২৫০ টাকা দিতে হয় ফয়সালকে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক স্পিডবোটচালক বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন যেতে প্রতি যাত্রীর কাছে থেকে তাঁরা ৭৫০ টাকা করে নেন। ভাড়াটা অনেকটাই অস্বাভাবিক। ২৫০ টাকা ফয়সালকে না দিতে হলে ভাড়া কমাতে পারতেন বলে তিনি জানান। জানতে চাইলে ফয়সাল রহমান বলেন, সেখানে তাঁরও ব্যবসা রয়েছে। মানুষের টাকা কেন নেবেন?
টেকনাফ স্থলবন্দরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা কাঠ ও শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগসাজশ আছে অন্য ভাই শফিকুল ইসলাম শফিকের। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ও বন্দরে ট্রাকের সিরিয়াল—সবই তাঁর নিয়ন্ত্রণে চলে। জানতে চাইলে আজকের পত্রিকার কাছে বিষয়টি অস্বীকার করেননি শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, এখন আর কোনো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন তিনি। বন্দরেরই নানা রকম ব্যবসা-বাণিজ্য করে চলছেন।
জানতে চাইলে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে যাঁরা জামিনে বের হয়েছেন, তাঁদের নজরদারি করা হচ্ছে। মাদক যেন না ঢুকতে পারে, তাই চেকপোস্টও বাড়ানো হয়েছে।
তবে স্থানীয় লোকজন বলছেন, পুলিশের গুলিতে মেজর (অব) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান নিহত হওয়ার পর থেকে সেখানে বড় ধরনের পুলিশি অভিযান বন্ধ রয়েছে।
২০১৯ সালে দুই দফায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত টেকনাফের ১২৩ জন চিহ্নিত মাদক কারবারি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁদের মধ্যে ১৬ জনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলার তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এতে ১২ জনের অ্যাকাউন্টে ২৬ কোটি ৮১ লাখ টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, আত্মসমর্পণকারী ইয়াবা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ১৬টি মানি লন্ডারিং মামলা সিআইডির কাছে ছিল। এর মধ্যে ৫টির অভিযোগপত্রসহ ১২টি মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। ৪টি মামলার তদন্ত চলছে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৩ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৭ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৭ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৭ দিন আগে