পঞ্চগড়-২: রেলমন্ত্রীর আসনে জটিল হিসাব

সাইফুল আলম বাবু, পঞ্চগড়
আপডেট : ১৬ মার্চ ২০২৩, ১৬: ০৩
Thumbnail image

জাতীয় নির্বাচনে ১৯৯১ সাল থেকে এ পর্যন্ত পঞ্চগড়-২ আসনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে দুটি নাম, মোজাহার হোসেন ও নূরুল ইসলাম সুজন। টানা চারবার এমপি হওয়া মোজাহার হোসেন এখন প্রয়াত। বিএনপির এ নেতার ছেলে সুমন এবার এ আসন থেকে নির্বাচন করবেন। আর আওয়ামী লীগের নূরুল ইসলাম সুজন এখন রেলপথমন্ত্রী। ২০০৮ সাল থেকে টানা তিনবার এমপি হওয়া এই নেতা চারের চক্র পূরণ করতে চাইছেন। তবে এ আসনে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে জটিল সব হিসাবনিকাশ। এর মধ্যে জোট গঠন অন্যতম।

পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ ও বোদা উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনে নির্বাচন সামনে রেখে তৎপরতা শুরু করেছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর আধিক্য নেই। আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন আবারও মনোনয়ন পাচ্ছেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। বিএনপি থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীই চূড়ান্ত হতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে আসনটি শরিক দলকেও ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

গত নির্বাচনে এমপি হওয়ার পর রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয় নূরুল ইসলাম সুজনকে। মন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলামের নামে পঞ্চগড় রেলস্টেশনের নামকরণসহ রেলের ব্যাপক উন্নয়ন করেন। বর্তমানে পঞ্চগড় থেকে ঢাকা, রাজশাহীতে চারটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করছে। গত চার বছরে তিনি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। দুই উপজেলায় কোনো ধরনের গ্রুপিং না থাকায় সব নেতা-কর্মীই তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। শত ব্যস্ততার মাঝেও তিনি ঢাকা থেকে নিজ এলাকায় নিয়মিত আসেন।

তবে তাঁর একমাত্র ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য ব্যারিস্টার কৌশিক নাহিয়ান নাবিদ বাবার অবর্তমানে ভবিষ্যৎ কান্ডারি হতে দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন। 
নূরুল ইসলাম সুজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে আমার বাইরে এই আসনে দ্বিতীয় কোনো প্রার্থী নেই। তবে কেউ মনোনয়ন চাইবেন না, এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি না। যোগ্য কেউ এলে আমিও তাঁকে স্বাগত জানাব।’

বিএনপির জেলা কমিটির সভাপতি সাবেক এমপি মোজাহার হোসেন মারা যাওয়ায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে এ আসনে দলের প্রার্থী করা হয় কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদকে। আগামী নির্বাচনেও মনোনয়ন পেতে এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু করেছেন তিনি। অধিকাংশ সময় এলাকায় অবস্থান করে দুই উপজেলায় গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। তবে বিএনপির দলীয় একটি সূত্রে জানা যায়, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করলে জোটগতভাবে নির্বাচন করতে পারে। সে ক্ষেত্রে শরিক দল হিসেবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রার্থীকে আসনটি ছেড়ে দেওয়া হতে পারে।

এ ছাড়া এই আসন থেকে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন সাবেক এমপি মোজাহার হোসেনের ছেলে মাহামুদুল হাসান সুমন। তবে তিনি এখনো দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। তাঁর মা নাজিরা হোসেন বলেন, ‘এলাকার বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটারদের অনুরোধ, আমি অথবা আমাদের পরিবার থেকে কেউ যেন প্রার্থী হই। কিন্তু আমার বয়স হয়েছে। আমার পক্ষে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া সম্ভব নয়। তাই আমার ছেলেকেই প্রার্থী করতে চাই।’

জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ফরহাদ হোসেন আজাদ বলেন, ‘বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচনে যাবে না। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ সরকারের দাবি মেনে নিলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেব। দাবি পূরণ হলে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব যার অনুকূলে সিদ্ধান্ত দেবেন, তা মেনে নেওয়া হবে।’

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি অধ্যাপক এমরান আল আমিন এবং জামায়াতে ইসলামী থেকে অ্যাডভোকেট আজিজুল ইসলামকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। বোদা উপজেলা জাতীয় পার্টির (জাপা) সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান রিপন এবারও প্রার্থী হতে পারেন। এ ছাড়া কেন্দ্রীয় জাগপার সভাপতি ও প্রয়াত সফিউল আলম প্রধানের মেয়ে ব্যারিস্টার তাসমিয়া প্রধান এবং জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলমও প্রার্থী হতে পারেন বলে জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত