Ajker Patrika

বিপদেও হাল ছাড়েননি শিমু

সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৪৫
বিপদেও হাল ছাড়েননি শিমু

ফেনীর সোনাগাজীর বাসিন্দা শামীমা আফরোজা শিমু ২০০৫ সালের আগস্টে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। উপজেলা সদরের কামরুল হাসান মিলনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। প্রবাসী স্বামীর আয় স্বল্প হলেও সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু যে কোম্পানিতে কাজ করতেন, সেটা দেউলিয়া হয়ে যাওয়ায় হঠাৎ তাঁকে দেশে ফিরে আসতে হয়।

এই ধাক্কা সামলে উঠতে মিলন-শিমু দম্পতিকে বেগ পেতে হয়। তখন কয়েক মাসের জন্য উপজেলার চরচান্দিয়ায় বাবার বাড়িতে থেকে স্থানীয় ছেলেমেয়েদের পড়ানো শুরু করেন শিমু। ২০০৫ সালের শেষদিকে পড়ানো থেকে পাওয়া টাকা দিয়ে থান কাপড় কিনে নকশিকাঁথাসহ বিভিন্ন হাতের কাজ শুরু করেন। এর আগে সোনাগাজী বালিকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি প্রশিক্ষণে তিনি সেলাইয়ের কাজ শেখেন।

পড়াশোনাসহ অন্যান্য কাজের পাশাপাশি নকশিকাঁথা ও হাতের কাজ করতেন শিমু। এসব জামা এলাকাবাসীর কাছে বিক্রি করতেন।

শিমুর মা সাজেদা শাহীনের হাত ধরে সেলাই কাজের অভিজ্ঞতা থাকায় বিয়ের তিন বছরের মাথায় ২০০৮ সালের শুরুর ছয় মাসের টাকা দিয়ে সেলাই মেশিন কেনেন। আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি দুই সন্তানের মা শিমুকে।

২০১৯ সালের শেষদিকে নকশিকাঁথার সুন্দর নিখুঁত ডিজাইন দেখে শিমুকে অনলাইনে আসতে অনুরোধ করেন এক আত্মীয়। একপর্যায়ে বিভিন্ন অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে নিজের নিখুঁত কাজের প্রচার শুরু করেন ৷ সাড়া পান চাহিদার তুলনায় বেশি। এখন দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় তাঁর ডিজাইন করা শিশুদের পোশাক, থ্রি-পিস নকশিকাঁথা যাচ্ছে।

ব্যবসা বাড়াতে তিনি ৩০ জন নারীকে ৯টি সেলাই মেশিনের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করছেন।

সর্বশেষ আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবসে মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর, মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশব্যাপী পরিচালিত ‘জয়িতার অন্বেষণে বাংলাদেশ’ কার্যক্রমের আওতায় অর্থনৈতিকভাবে সফলতা অর্জনকারী নারী হিসেবে ফেনী জেলায় সর্বশ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পান শামীমা আফরোজা শিমু। এর আগে সোনাগাজীর শ্রেষ্ঠ জয়িতার সম্মাননা পান তিনি।

নারী উদ্যোক্তা শামীমা আফরোজা শিমু বলেন, ‘আমি বারবার বিপদে পড়েছি। কিন্তু কখনো হাল ছাড়িনি। আমি জানি, আমার কর্মই আমাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। আমার শুরুটা অনেক কঠিন হলেও অনলাইন গ্রুপের মাধ্যমে আমি সফল হয়েছি। পরিশ্রমের তুলনায় অনেক বেশি লাভবান হয়েছি।’

নারীদের উদ্দেশে শিশুর পরামর্শ, ‘নিজেকে গুটিয়ে না রেখে পারিবারিক কাজের পাশাপাশি অবসর সময় কাজে লাগান। আপনিও সফল হবেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত