খেতে পাকা ধান, নেই শ্রমিক

বাবুল আক্তার, পাইকগাছা
প্রকাশ : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ০৬
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৫৯

খুলনার পাইকগাছায় শ্রমিকসংকটে মাঠে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান। এবার বোরোর বাম্পার ফলন হলেও স্বস্তিতে নেই কৃষক। অতিরিক্ত দামেও মিলছে না ধান কাটার শ্রমিক। ফলে বিপাকে পড়েছেন কৃষক।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৯০০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৫ হাজার ৬২২ হেক্টরে চাষ হয়েছে। অতিরিক্ত ১ হাজার ৬২২ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে।

এর মধ্য উফশী ধান চাষ হয়েছে ৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে। আর ১ হাজার ৫৭২ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হয়েছে। হরিঢালী ইউনিয়নে চাষ হয়েছে ৯৪৫ হেক্টর, কপিলমুনি ইউনিয়নে ১ হাজার ৩০, লতা ইউনিয়নে ১, সোলাদানা ইউনিয়নে ১, গদাইপুর ১ হাজার ২৪০ হেক্টর, রাড়ুলী ইউনিয়নে ১ হাজার ৪৫, চাঁদখালী ইউনিয়নে ১ হাজার ৯০, দেলুটি ইউনিয়নে ৭০, গড়ইখালী ইউনিয়নে ২০ ও পৌরসভায় ১৮০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে।

রাড়ুলী ইউনিয়নের কৃষক আবদুল হান্নান শেখ বলেন, ‘আমি এ বছর ২ একর জমিতে বোরো ধান করেছি। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর ভালো ধান হয়েছে। পোকার আক্রমণ একটু বেশি থাকলেও অতিরিক্ত বিষ ছিটাতে খরচ বেশি হয়েছে। তার পরও খুশি ছিলাম। এখন শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে না পারায় ধানের শিষ ভেঙে মাটিতে পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অতিরিক্ত টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ শ্রমিক ইটভাটাসহ বিভিন্ন এলাকায় চলে গেছে। আমি ধান কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।’

গদাইপুর ইউনিয়নের কৃষক ইউনুছ আলী বলেন, ‘আমি বছরে দুবার জমিতে ধান লাগাই। এই ধান চাষ করেই ১০ সদস্যর সংসার চালাই। এবার আমার সাড়ে ৫ বিঘা জমিতে ভালো ধান হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকসংকটে তা ঘরে তুলতে পারছি না।’

উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের অবস্থা প্রায় একই। শ্রমিকের অভাবে পাকা ধান খেতে পড়ে রয়েছে। যথাসময়ে কাটতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক। ধান ঘরে না তোলা পর্যন্ত তাঁদের স্বস্তি নেই।

উপজেলার তকিয়া গ্রামের আবদুল ওয়াব বলেন, ‘এ বছর দেড় একর জমিতে ধান লাগিয়েছি। মাত্র ১ বিঘার ধান কাটতে পেরেছি। ধান পেকে গেলেও শ্রমিক অভাবে কাটতে পারছি না’

চাঁদখালী ইউনিয়নের কাঁটাবুনিয়ার বিধান চন্দ্র রায় বলেন, ‘৫ একর জমিতে ধান লাগাইছি। ১ একর জমির ধান কাটতে পারলেও শ্রমিকের অভাবে বাকি ধান কাটতে পারছি না। আবার পত্রপত্রিকায় দেখছি ঈদের দিন থেকে ঝড়-বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। এত খরচ করে ধান লাগিয়ে শ্রমিক অভাবে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি।’

পাইকগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নে ধান পেকে গেছে। সে কারণে সব কৃষক একবারে ধান কাটা শ্রমিক নেওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ শ্রমিক এলাকার বাইরে কাজ করতে গেছে, তাই এ সংকট। তবে ঈদের পরে শ্রমিক পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করছেন।

জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, এমন ঘটনা প্রতিবছর হয়। আর ঈদের পর শ্রমিকের মজুরিও কমে আসবে। তবে ১০ দিন যদি আবহাওয়া ভালো থাকে, তাহলে উপজেলার ৯০ শতাংশ ধান কৃষকেরা ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করছি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত