তদন্ত শুরু হচ্ছে আজ

মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ০৭: ১০
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২২, ১৩: ০১

মুরাদনগরে প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় উপজেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে আজ রোববার প্রশাসনের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিনকে।

ইউএনওর কাছে শাহিন আক্তার মায়ার বিরুদ্ধে ১২ জন প্রশিক্ষণার্থী তাঁদের ভাতার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ দেন। এতে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মহিলা সংস্থার আওতাধীন ২০২১-২২ অর্থ বছরে তৃণমূল পর্যায়ের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশ সাধন প্রকল্পের অধীনে বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, ই-কমার্স, ফ্যাশন ডিজাইন, বিউটিফিকেশন, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টে ২৮৯ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। গত ১৪ মার্চ এই প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের ভাতা ৬ হাজার টাকা এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য বরাদ্দ ছিল ১২ হাজার টাকা। কিন্তু প্রশিক্ষণ শেষে টাকার চেক আনতে গেলে মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান শাহীন আক্তারকে দিতে হয় দুই হাজার থেকে চার হাজার টাকা করে। তা ছাড়া প্রশিক্ষণ চলাকালে নানা অজুহাতে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা করে হাতিয়ে নিতেন তিনি।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তাঁর চাহিদামতো টাকা না দেওয়া ১৮০ জনের ভাতার চেক তিনি এখনো হস্তান্তর করছেন না। এ বিষয়ে কয়েকজন প্রশিক্ষণার্থী তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গেলে নানা হুমকি দিয়ে তাঁদের অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন শাহিন আক্তার।

এই বিষয়ে প্রশিক্ষণার্থী রোকসানা খাতুন, তানজিনা আক্তার, খাদিজা আক্তার ও মঞ্জু বেগম বলেন, ‘আমরা এক সাথে ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ৮৯ জন এবং ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি ২০০ জন। যাঁরা ৪০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছি, তাঁদের কাছ থেকে আমাদের চেয়ারম্যান মায়া ম্যাডাম অগ্রিম ২ হাজার করে টাকা নিয়েছেন। পরে ৬ হাজার টাকার চেক দিছেন। আর যাঁরা ৮০ দিনের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের বলা হইছে প্রত্যেকে ৪ হাজার টাকা করে চেয়ারম্যান ম্যাডামের কাছে অগ্রিম জমা দিতে। তবেই তিনি ১২ হাজার টাকা করে চেক প্রদান করবেন। আমরা অনেকেই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় চেয়ারম্যান ম্যাডাম নানা হুমকি-ধমকি দিয়েছেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহীন আক্তার মায়া বলেন, ‘আমি কারও কাছ থেকে টাকা নিইনি। কেউ নিয়ে থাকলে আমার তা জানা নেই। ২০১০ সাল থেকে আমি এই চেয়ারে আছি। এখন পর্যন্ত আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ আনার সাহস কারও হয়নি।’ 
ইউএনও অভিষেক দাশ বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীদের কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভূমি কর্মকর্তাকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছি।’

কমিটির প্রধান উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমাইয়া মমিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ‘তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে অফিস বন্ধ থাকায় চিঠি হাতে পাইনি। রোববার চিঠি হাতে আসার সঙ্গে সঙ্গেই তদন্তের কার্যক্রম শুরু হবে।’
বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা সংস্থা-মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যান বেগম চেমন আরা তৈয়ব বলেন, ‘প্রশিক্ষণার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’  

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত