Ajker Patrika

সেবার মান বাড়লেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১২ মে ২০২২, ১০: ৩৯
সেবার মান বাড়লেও প্রত্যাশা পূরণ হয়নি

‘প্রয়োজন ছাড়া নার্সরা তেমন আসেন না। অবস্থা গুরুতর হলে রুমে গিয়ে ডেকে আনতে হয়। তাঁরা আরেকটু আন্তরিক হলে আমাদের সুবিধা হয়। অসুবিধার কথা বলতে গেলে অনেক সময় বিরক্ত হয়ে দুর্ব্যবহারও করেন অনেকে।’ নার্সদের কাছ থেকে ঠিকমতো সেবা না পাওয়ার এমন অভিযোগ ইয়াজ উদ্দিনের। যক্ষ্মা নিয়ে এক মাসের বেশি সময় ধরে রাজধানীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেরপুরের সত্তরোর্ধ্ব এই বাসিন্দা।

তবে হাসপাতালের সিনিয়র নার্স ছৈয়দ আহমদ তানশীর উদ্দিন জানান, রোগীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। যদিও নার্স নিয়োগের কারণে আগের তুলনায় সংকট অনেক কমেছে, সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে।

চিকিৎসকেরা বলছেন, গত এক যুগের বেশি সময়ে দেশে ৩৩ হাজারের বেশি নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারপরও এখনো এই সেবা কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে যেতে পারেনি। প্রশিক্ষিত জনবলের অভাব, নিয়োগবিধির জটিলতা ও নানা অব্যবস্থাপনায় সেবার মান প্রত্যাশা থেকে এখনো বহুদূরে।

এমন সংকটাবস্থা নিয়েই আজ বৃহস্পতিবার বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক নার্স দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় শক্তিশালী নার্স নেতৃত্বের বিকল্প নেই, বিশ্ব স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে নার্সিং খাতে বিনিয়োগ বাড়ান ও নার্সদের অধিকার সংরক্ষণ করুন’।

সরকারের নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুল লতিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০১০ সালের আগ পর্যন্ত সারা দেশে মাত্র আট হাজারের কিছু বেশি নার্স ছিল। সেই সংখ্যা এখন ৭৬ হাজার ৫১৭ জন। নিয়োগ হচ্ছে ঠিকই; কিন্তু ১৯৭৭ সালে সেবার মান যেমনটা ছিল, ২০২২ সালে এসে তা ২ শতাংশও বাড়েনি।

বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রায় আড়াই হাজার মানুষের বিপরীতে নার্স মাত্র একজন। সরকারি হাসপাতালে নার্সের পদ আছে ৪৫ হাজার ৫২৭টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ৪২ হাজার ২৩৯ জন। পদ শূন্য রয়েছে ২ হাজার ৯৯৬টি। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে নার্সের সংকট রয়েছে আরও আড়াই লাখের বেশি।

নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনে নার্স নিয়োগে অধিদপ্তর থেকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ফাইল পাঠানো হয়েছে। পাস হলে ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যে চাহিদার অনুপাতে নার্স নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হবে।

এদিকে চলমান করোনা মহামারিতে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে রোগীদের সেবা দিয়েছেন প্রায় ২৫ হাজার নার্স। যার মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি, প্রাণ হারিয়েছেন ৩৬ জন। কিন্তু জাতীয় এই দুর্যোগে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও প্রায় অর্ধেক নার্সই এখনো প্রণোদনা পাননি।

সরকারি হিসাবমতে, করোনা রোগীদের সেবায় দায়িত্বে ছিলেন এমন ২২ হাজার ৮৩ জন নার্সকে প্রণোদনা দিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। কিন্তু এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৫৫২ জন প্রণোদনা পেলেও বাকিরা পাননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত