শিকদার মো. জিননুরাইন
মানুষের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম ভাষা। মানুষ ভাষার মাধ্যমে চিন্তা, ধ্যানধারণা, অভিব্যক্তি ও মনোভাব প্রকাশ করে। আর এগুলো সহজতর হয়ে ওঠে মাতৃভাষার সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে। মা-ই শিশুর প্রথম এবং প্রধান শিক্ষক। নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি দেব।’ ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আব্দুল কালামের মতে, মা শিক্ষিত হোক বা না হোক, মা-ই হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
যে জাতির মাতৃভাষার গাঁথুনি যত মজবুত, ব্যাপ্তি যত বেশি, সেই জাতি তত বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা উর্দুভাষী শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মায়ের ভাষার কণ্ঠরোধ করতে বারংবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ১৯২০ সালে ১৭ মার্চ বাঙালির ভাগ্যাকাশে ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন ক্যারিশমাটিক লিডার। নেতৃত্ব গুনে মাতৃভাষার আন্দোলনের তিনি অগ্রভাগে চলে আসেন। ১৯৪৭-১৯৪৮-এ ভাষা আন্দোলনের সূচনা থেকে চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত।
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন আইন পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে তরুণ নেতা শেখ মুজিব এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ২ মার্চ ১৯৪৮ সাল ফজলুল হক মুসলিম হলে শেখ মুজিবের প্রস্তাবক্রমে সর্বদলীয় ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। ১১ মার্চ রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে ছাত্রদের নিয়ে রাজপথে মিছিল বের করলে সচিবালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা দেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। শেখ মুজিব জেল থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে মিছিল বের করলে পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকতসহ কয়েকজন নিহত হন। জেল থেকেই তিনি পুলিশি হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানানো রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে কারাগারে ১৭ দিন অনশনে ছিলেন।
মাতৃভাষা বাংলার প্রতি গভীর ভালোবাসা মহান মাতৃভাষা আন্দোলনে তাঁকে উৎসাহ ও প্রেরণা জুগিয়েছিল। যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী হিসেবে ১৯৫৬ সালের ১৭ জানুয়ারি আইন পরিষদের অধিবেশনে সংসদের দৈনন্দিন কর্মসূচি বাংলায় মুদ্রণের দাবি জানান তিনি। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি খসড়া শাসনতন্ত্রে জাতীয় ভাষা সংক্রান্ত প্রশ্নে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং তাঁরা পূর্ব বঙ্গের অধিবাসী। তাই এ অঞ্চলের জনগণের দাবি, রাষ্ট্রভাষা বাংলা হোক। এর ফলে ২৩ মার্চ ১৯৫৬ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রথম সংবিধানে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের (৭২) সংবিধান তিনি মাতৃভাষা বাংলায় প্রণয়ন করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা সংবিধান।
ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্ব থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিব সম্পৃক্ত ছিলেন। এক কথায় মাতৃভাষার আন্দোলন, মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাকে সর্বস্তরে ব্যবহারের বিষয়ে শেখ মুজিব যে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তা ইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
লেথক: অধ্যক্ষ, ড. ইমদাদুল হক মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ,
টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
মানুষের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম ভাষা। মানুষ ভাষার মাধ্যমে চিন্তা, ধ্যানধারণা, অভিব্যক্তি ও মনোভাব প্রকাশ করে। আর এগুলো সহজতর হয়ে ওঠে মাতৃভাষার সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে। মা-ই শিশুর প্রথম এবং প্রধান শিক্ষক। নেপোলিয়ন বোনাপার্ট বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদেরকে একটি শিক্ষিত জাতি দেব।’ ভারতের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ড. এ পি জে আব্দুল কালামের মতে, মা শিক্ষিত হোক বা না হোক, মা-ই হলো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক।
যে জাতির মাতৃভাষার গাঁথুনি যত মজবুত, ব্যাপ্তি যত বেশি, সেই জাতি তত বেশি উন্নত ও সমৃদ্ধ। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমা উর্দুভাষী শাসকগোষ্ঠী পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মায়ের ভাষার কণ্ঠরোধ করতে বারংবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। ১৯২০ সালে ১৭ মার্চ বাঙালির ভাগ্যাকাশে ত্রাণকর্তা হিসেবে আবির্ভূত হন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ছিলেন ক্যারিশমাটিক লিডার। নেতৃত্ব গুনে মাতৃভাষার আন্দোলনের তিনি অগ্রভাগে চলে আসেন। ১৯৪৭-১৯৪৮-এ ভাষা আন্দোলনের সূচনা থেকে চূড়ান্ত পর্ব পর্যন্ত।
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন আইন পরিষদে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে তরুণ নেতা শেখ মুজিব এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ২ মার্চ ১৯৪৮ সাল ফজলুল হক মুসলিম হলে শেখ মুজিবের প্রস্তাবক্রমে সর্বদলীয় ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। ১১ মার্চ রাষ্ট্র ভাষার দাবিতে ছাত্রদের নিয়ে রাজপথে মিছিল বের করলে সচিবালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১৯৫২ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা দেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। শেখ মুজিব জেল থেকে এর তীব্র প্রতিবাদ করেন। ১৯৫২-এর ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠার দাবিতে মিছিল বের করলে পুলিশের গুলিতে রফিক, সালাম, জব্বার, বরকতসহ কয়েকজন নিহত হন। জেল থেকেই তিনি পুলিশি হত্যার তীব্র প্রতিবাদ জানান। তিনি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবি জানানো রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে কারাগারে ১৭ দিন অনশনে ছিলেন।
মাতৃভাষা বাংলার প্রতি গভীর ভালোবাসা মহান মাতৃভাষা আন্দোলনে তাঁকে উৎসাহ ও প্রেরণা জুগিয়েছিল। যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রী হিসেবে ১৯৫৬ সালের ১৭ জানুয়ারি আইন পরিষদের অধিবেশনে সংসদের দৈনন্দিন কর্মসূচি বাংলায় মুদ্রণের দাবি জানান তিনি। ৭ ফেব্রুয়ারি তিনি খসড়া শাসনতন্ত্রে জাতীয় ভাষা সংক্রান্ত প্রশ্নে বলেছিলেন, পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ লোক বাংলা ভাষায় কথা বলে এবং তাঁরা পূর্ব বঙ্গের অধিবাসী। তাই এ অঞ্চলের জনগণের দাবি, রাষ্ট্রভাষা বাংলা হোক। এর ফলে ২৩ মার্চ ১৯৫৬ পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গৃহীত প্রথম সংবিধানে বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের (৭২) সংবিধান তিনি মাতৃভাষা বাংলায় প্রণয়ন করেছেন, যা পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম বাংলা সংবিধান।
ভাষা আন্দোলনের সূচনা পর্ব থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভাষা আন্দোলনে শেখ মুজিব সম্পৃক্ত ছিলেন। এক কথায় মাতৃভাষার আন্দোলন, মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা এবং বাংলাকে সর্বস্তরে ব্যবহারের বিষয়ে শেখ মুজিব যে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন তা ইতিহাসে অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে।
লেথক: অধ্যক্ষ, ড. ইমদাদুল হক মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ,
টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে