ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশের নতুন এই পরিস্থিতিতে এই সরকার ও সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইভেন্ট হয়ে আসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পতনের ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অপরদিকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দল হিসেবে অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে আওয়ামী লীগ। এমন প্রেক্ষাপটে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। এ অধিবেশনে যোগদান শেষে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৩২ মিনিটে দেশে ফেরেন প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা। এ অধিবেশন শুরুর পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে নানা গুজব।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগসহ তথ্য যাচাই নিয়ে কাজ করা বাংলা ভাষাভাষী ৬টি প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি যাচাই করে দেখেছে। অধিবেশন শুরুর পর থেকে আজ রোববার পর্যন্ত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ছড়ানো গুজব সম্পর্কিত ১২টি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এসব প্রতিষ্ঠান।
এসব গুজবের মধ্যে রয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের ঘোষণা, জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনূসের যোগদানের বিষয়ে রাশিয়াসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের আপত্তি ও ভাষণ বাতিল, জাতিসংঘ অধিবেশনে শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১১৮ দেশের স্বীকৃতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার ওপর হামলা।
শনাক্তকৃত এসব গুজবের কিছু ছড়িয়েছে নামহীন ভুয়া ফটোকার্ড, রাশিয়ার নামহীন সংবাদমাধ্যমের বরাতে ছড়িয়েছে। যেমন, গতকাল শনিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ফটোকার্ডে দাবি করা হয়, ‘জাতিসংঘ থেকে ঘোষণা, ফের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় শেখ হাসিনা’। এই কার্ডে কোনো সূত্র উল্লেখ ছিল না। ফটোকার্ডটিতে কোনো সংবাদমাধ্যমের লোগো বা নামও নেই।
আবার, গত ১০ সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ফেসবুকে দাবি করা হয়, ‘জাতিসংঘে শেখ হাসিনা সরকারের বৈধ পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এতে অধিবেশনে না যাওয়ার হুমকি দেন রাশিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিন, পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট পুতিনের হুমকিকে সমর্থন করেছে চীনের প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট, ভারতের পার্লামেন্ট।’
দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে অনলাইন ভেরিফিকেশন ও মিডিয়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিস ল্যাব বাংলাদেশে অবস্থিত রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ সম্পর্কে দূতাবাসের প্রেস সচিব ইয়েভগেনিয়া কোনারেভা বলেন, ‘এটি ভুয়া খবর।’ রাশিয়ার বেশ কিছু পত্রিকা এবং টিভি অনুসন্ধান করে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি বলে জানায় ফ্যাক্টওয়াচ।
কিছু গুজব ফেসবুকে ছড়িয়েছে কোনো ধরনের সূত্র উল্লেখ ছাড়াই। এমন গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গত ১০ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ছড়ানো শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘে যাওয়ার আমন্ত্রণ ও জাতিসংঘে ড. ইউনূসের ভাষণ বাতিলের ঘোষণা এবং ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের অধিবেশনে শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১১৮টি দেশের স্বীকৃতি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র। এই আলোচনার মধ্যেই পদত্যাগপত্রের সঙ্গে জাতিসংঘ ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ছড়িয়েছে গুজব। এ গুজবের সত্যতা প্রতিষ্ঠায় ব্যবহার করা হয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার নাম। গত ১৪ সেপ্টেম্বর আল–জাজিরার বরাত দিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে— ৭ দিনের মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জমা দিতে না পারলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে জাতিসংঘ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজতকের বাংলা সংস্করণের ফ্যাক্টচেক বিভাগ যাচাই করে দেখেছে, জাতিসংঘের ৭৯ তম অধিবেশন যোগ দিতে শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন এবং জাতিসংঘ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পুরোনো। ফুটেজটি ২০২২ সালে শেখ হাসিনার ৭৭ তম জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার।
ফেসবুকের পাশাপাশি এই এক ডজন গুজবের কিছু ছড়িয়েছে ইউটিউব, টিকটকেও। এসব গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে পুরোনো ভিডিও ও চটকদার থাম্বনেইল। এসব গুজব ছড়ানো অন্তত দুটি ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু থাকার তথ্য পেয়েছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
আবার জাতিসংঘের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই ‘তামান্না আক্তার ইয়াসমিন (Tamanna Aktar Yesmin)’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ধারাবাহিকভাবে ছবি ও ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়, জাতিসংঘে তামান্না বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও পদত্যাগেরপত্র নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অ্যাকাউন্টটির কাভার ফটোতে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক নারীর ছবি। প্রোফাইল ছবিতেও একই নারীর ছবি।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের অ্যাকাউন্টটিতে ব্যবহৃত নারীর ছবিগুলো আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম ইব্রাহিম আল হাশিমির। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে রিম ইব্রাহিম আল হাশিমির ছবি ও ভিডিও তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রচার করা হয়। সম্প্রতি অ্যাকাউন্টটির নাম পরিবর্তন করে মির্জা শাকিল খান (Mirza Shakil Khan) করা হয়েছে। তবে প্রোফাইল ও কাভার ফটোতে এখনো রিম আল হাশিমির ছবি রয়েছে।
কেন ছড়ানো হয়েছিল এসব গুজব? এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস–এর গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও ফ্যাক্টওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সুমন রহমান আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘এই সরকারের যারা বিরোধী বা যারা বিগত সরকারের সমর্থক, তারা তো নানানভাবেই সরকারের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে চাচ্ছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনটা তাদের জন্য একটি উপলক্ষ হয়ে এসেছিল। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেলে তারা (আওয়ামী লীগ) ডিমরালাইজড (নৈতিকভাবে দুর্বল) হয়ে যাবে, দেশেও তাদের পজিশন নাই, ইন্টারন্যাশনালিও তারা পজিশন হারাবে। তাই তারা এ অধিবেশনটাকে লড়াইয়ের উপলক্ষ হিসেবে নিয়েছে।’
এসব গুজবের প্রভাব সম্পর্কে সুমন রহমান বলেন, ‘এসব গুজব খুব একটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারেনি। মানুষকে খুব বেশি মিসগাইড করতে পারে নাই। একটা বড় কারণ, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে জানে। ফলে সাধারণভাবেই মানুষ গুজবগুলো ধরতে পারছে। এ ছাড়া এমন কোনো কিছু তারা তৈরি করতে পারেনি, যেটা দেখলে মারাত্মক সত্য মনে হবে।’
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত হয় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দেশের নতুন এই পরিস্থিতিতে এই সরকার ও সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ইভেন্ট হয়ে আসে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। এরপর থেকে প্রতি বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের হয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার পতনের ফলে দীর্ঘ ১৫ বছর পর সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অপরদিকে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দল হিসেবে অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে আওয়ামী লীগ। এমন প্রেক্ষাপটে গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। এ অধিবেশনে যোগদান শেষে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ৩টা ৩২ মিনিটে দেশে ফেরেন প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীরা। এ অধিবেশন শুরুর পর থেকেই প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে নানা গুজব।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগসহ তথ্য যাচাই নিয়ে কাজ করা বাংলা ভাষাভাষী ৬টি প্রতিষ্ঠান এ সংক্রান্ত বিভিন্ন দাবি যাচাই করে দেখেছে। অধিবেশন শুরুর পর থেকে আজ রোববার পর্যন্ত জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন ও প্রধান উপদেষ্টার যুক্তরাষ্ট্র সফর এবং শেখ হাসিনাকে জড়িয়ে ছড়ানো গুজব সম্পর্কিত ১২টি ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এসব প্রতিষ্ঠান।
এসব গুজবের মধ্যে রয়েছে— সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরানোর ব্যাপারে জাতিসংঘের ঘোষণা, জাতিসংঘের অধিবেশনে ড. ইউনূসের যোগদানের বিষয়ে রাশিয়াসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের আপত্তি ও ভাষণ বাতিল, জাতিসংঘ অধিবেশনে শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১১৮ দেশের স্বীকৃতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র জাতিসংঘে জমা না দিলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং নিউইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টার ওপর হামলা।
শনাক্তকৃত এসব গুজবের কিছু ছড়িয়েছে নামহীন ভুয়া ফটোকার্ড, রাশিয়ার নামহীন সংবাদমাধ্যমের বরাতে ছড়িয়েছে। যেমন, গতকাল শনিবার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ফটোকার্ডে দাবি করা হয়, ‘জাতিসংঘ থেকে ঘোষণা, ফের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় শেখ হাসিনা’। এই কার্ডে কোনো সূত্র উল্লেখ ছিল না। ফটোকার্ডটিতে কোনো সংবাদমাধ্যমের লোগো বা নামও নেই।
আবার, গত ১০ সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে ফেসবুকে দাবি করা হয়, ‘জাতিসংঘে শেখ হাসিনা সরকারের বৈধ পদত্যাগপত্র জমা দিতে পারেনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। এতে অধিবেশনে না যাওয়ার হুমকি দেন রাশিয়া প্রেসিডেন্ট পুতিন, পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট পুতিনের হুমকিকে সমর্থন করেছে চীনের প্রেসিডেন্ট পার্লামেন্ট, ভারতের পার্লামেন্ট।’
দাবিটির সত্যতা যাচাই করতে অনলাইন ভেরিফিকেশন ও মিডিয়া গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিসমিস ল্যাব বাংলাদেশে অবস্থিত রুশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ সম্পর্কে দূতাবাসের প্রেস সচিব ইয়েভগেনিয়া কোনারেভা বলেন, ‘এটি ভুয়া খবর।’ রাশিয়ার বেশ কিছু পত্রিকা এবং টিভি অনুসন্ধান করে এমন কোনো তথ্য খুঁজে পায়নি বলে জানায় ফ্যাক্টওয়াচ।
কিছু গুজব ফেসবুকে ছড়িয়েছে কোনো ধরনের সূত্র উল্লেখ ছাড়াই। এমন গুজবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য গত ১০ সেপ্টেম্বর ফেসবুকে ছড়ানো শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘে যাওয়ার আমন্ত্রণ ও জাতিসংঘে ড. ইউনূসের ভাষণ বাতিলের ঘোষণা এবং ২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের অধিবেশনে শেখ হাসিনাকে বৈধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১১৮টি দেশের স্বীকৃতি।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র। এই আলোচনার মধ্যেই পদত্যাগপত্রের সঙ্গে জাতিসংঘ ও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে ছড়িয়েছে গুজব। এ গুজবের সত্যতা প্রতিষ্ঠায় ব্যবহার করা হয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার নাম। গত ১৪ সেপ্টেম্বর আল–জাজিরার বরাত দিয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে— ৭ দিনের মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জমা দিতে না পারলে সেনাবাহিনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে জাতিসংঘ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজতকের বাংলা সংস্করণের ফ্যাক্টচেক বিভাগ যাচাই করে দেখেছে, জাতিসংঘের ৭৯ তম অধিবেশন যোগ দিতে শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন এবং জাতিসংঘ অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি পুরোনো। ফুটেজটি ২০২২ সালে শেখ হাসিনার ৭৭ তম জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার।
ফেসবুকের পাশাপাশি এই এক ডজন গুজবের কিছু ছড়িয়েছে ইউটিউব, টিকটকেও। এসব গুজব ছড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে পুরোনো ভিডিও ও চটকদার থাম্বনেইল। এসব গুজব ছড়ানো অন্তত দুটি ইউটিউব চ্যানেলে মনিটাইজেশন চালু থাকার তথ্য পেয়েছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ।
আবার জাতিসংঘের অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই ‘তামান্না আক্তার ইয়াসমিন (Tamanna Aktar Yesmin)’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে ধারাবাহিকভাবে ছবি ও ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হয়, জাতিসংঘে তামান্না বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও পদত্যাগেরপত্র নিয়ে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অ্যাকাউন্টটির কাভার ফটোতে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এক নারীর ছবি। প্রোফাইল ছবিতেও একই নারীর ছবি।
আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের অ্যাকাউন্টটিতে ব্যবহৃত নারীর ছবিগুলো আরব আমিরাতের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী রিম ইব্রাহিম আল হাশিমির। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে রিম ইব্রাহিম আল হাশিমির ছবি ও ভিডিও তামান্না আক্তার ইয়াসমিন নামের অ্যাকাউন্টটি থেকে প্রচার করা হয়। সম্প্রতি অ্যাকাউন্টটির নাম পরিবর্তন করে মির্জা শাকিল খান (Mirza Shakil Khan) করা হয়েছে। তবে প্রোফাইল ও কাভার ফটোতে এখনো রিম আল হাশিমির ছবি রয়েছে।
কেন ছড়ানো হয়েছিল এসব গুজব? এ প্রসঙ্গে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস–এর গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ও ফ্যাক্টওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সুমন রহমান আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, ‘এই সরকারের যারা বিরোধী বা যারা বিগত সরকারের সমর্থক, তারা তো নানানভাবেই সরকারের ভাবমূর্তি সংকটে ফেলতে চাচ্ছে। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনটা তাদের জন্য একটি উপলক্ষ হয়ে এসেছিল। এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে প্রমাণ করতে চেয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা নেই। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পেলে তারা (আওয়ামী লীগ) ডিমরালাইজড (নৈতিকভাবে দুর্বল) হয়ে যাবে, দেশেও তাদের পজিশন নাই, ইন্টারন্যাশনালিও তারা পজিশন হারাবে। তাই তারা এ অধিবেশনটাকে লড়াইয়ের উপলক্ষ হিসেবে নিয়েছে।’
এসব গুজবের প্রভাব সম্পর্কে সুমন রহমান বলেন, ‘এসব গুজব খুব একটা ইমপ্যাক্ট ফেলতে পারেনি। মানুষকে খুব বেশি মিসগাইড করতে পারে নাই। একটা বড় কারণ, বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ ড. ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে জানে। ফলে সাধারণভাবেই মানুষ গুজবগুলো ধরতে পারছে। এ ছাড়া এমন কোনো কিছু তারা তৈরি করতে পারেনি, যেটা দেখলে মারাত্মক সত্য মনে হবে।’
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারকে ঘিরে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নাম বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ। আন্দোলনের সময় গত ১৮ জুলাই রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে সংঘর্ষ চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল...
৪ ঘণ্টা আগেছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর তিনদিন পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার শপথ নেয় ৮ আগস্ট। এরপর ১০০ দিন পার করেছে এই সরকার...
৯ ঘণ্টা আগেবর্তমানে দিল্লিতেই অবস্থান করছেন হাসিনা। ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুতির পর তিনি আর প্রকাশ্যে আসেননি। সম্প্রতি ফেসবুকে তাঁর ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ভারতে তাঁর সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে।
২ দিন আগেসম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এমন একটি কল রেকর্ডে শেখ হাসিনার কণ্ঠে দাবি করা হয়, ‘চাকরির বয়স নিয়ে আন্দোলন করতে যমুনার সামনে গেল, সাথে সাথে গুলি করল। সেখানে একজন মারা গেল এবং পিটিয়ে উঠিয়ে দিল।’
২ দিন আগে