বন্যায় কোমর পানিতে বিয়ের অনুষ্ঠান, ভাইরাল ছবিগুলো কবেকার

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৬ আগস্ট ২০২৪, ২২: ১৫

দেশের পূর্বাঞ্চলের ১১টি জেলায় নজিরবিহীন বন্যায় সরকারি হিসাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ পরিবার। ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে সৃষ্ট এই বন্যায় বিপর্যস্ত এই অঞ্চলের জনজীবন। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ধুমধাম করে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছে— এমন দাবিতে দুটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। 

ছবি দুটির একটিতে দেখা যায়, কোমর সমান পানির মধ্যেই চেয়ার পেতে বসে আছেন বর–কনে। আরেকটি ছবিতে দেখা যায়, বর–কনের মুখে বাটা হলুদ মাখছেন কয়েকজন নারী। 

আজ সোমবার ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন হেল্পলাইন ২০২৪–২৫’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ছবি দুটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘দেশে যাই হয়ে যাক বিয়ে করতেই হবে।’ আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে দেখা যায়, থইথই পানিতে বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজনের ছবি দুটি পুরোনো।

রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ২০২০ সালের ২৪ আগস্টে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ছবি দুটি পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটি থেকে জানা যায়, ঘটনাটি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কলাউপাড়া গ্রামের। এটি লালুয়া ইউনিয়ন শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন ফকিরের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান ছিল।

মহিউদ্দিন ফকির ওই বছরের ২৯ জুলাই বিয়ে করেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার গাববুনিয়া গ্রামে। ২০ আগস্ট তিনি নববধূকে বাড়িতে আনেন। ২২ আগস্ট দুপুরে জোয়ারের পানির মধ্যেই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। জোয়ারের পানিতে যখন চারদিক থই থই, তখন বাড়ির উঠানে চেয়ার পেতে বর–কনেকে হলুদ দেওয়া হয়। এতে স্বজনেরা অংশ নেন। থইথই পানিতে বিয়ের আয়োজনের ভাইরাল ছবিগুলো ২০২০ সালের। ছবি: প্রথম আলোলালুয়া ইউনিয়নটির পূর্বদিকে রাবনাবাদ চ্যানেল, পশ্চিমে টিয়াখালী নদী, উত্তরে আন্ধারমানিক নদী, দক্ষিণে বালিয়াতলী ইউনিয়ন ও রাবনাবাদ চ্যানেল। এই রাবনাবাদ চ্যানেল সংলগ্ন আন্ধারমানিক নদীর পাড়ের টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়ায় পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর অবস্থিত। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদনটি থেকে আরও জানা যায়, ওই সময় কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া ইউনিয়নের সুরক্ষার জন্য কোনো বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ছিল না। ফলে ইউনিয়নটির ১২–১৩টি গ্রাম দৈনিক দুই দফা জোয়ারের পানিতে গ্রাম প্লাবিত হতো। 

আজকের পত্রিকার পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা প্রতিনিধি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ইউনিয়নটিতে স্থায়ী কোনো বাঁধ নেই। ফলে জোয়ারের পানিতে ইউনিয়নটির গ্রামগুলো এখনো নিয়মিত প্লাবিত হয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত