ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি প্রাকৃতিকভাবে নাকি গবেষণাগারে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে মহামারির শুরু থেকেই। গত দেড় বছরে বিভিন্ন সময় অনেক বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, চীনের উহানে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত কোনো গবেষণাগারে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। আর সেই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুদানের অর্থ খরচ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছে মার্কিন সিনেট অধিবেশনে।
উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে বাদুড়ের ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল চীন। গত মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সিনেট অধিবেশনে রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল অভিযোগ করেন, চীনের ওই গবেষণাগারে অধিক সংক্রামক এবং প্রাণঘাতী ভাইরাস তৈরির চেষ্টা চলছিল। আর এই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুদানের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।
সিনেটর পল অবশ্য তাঁর বক্তব্যে করোনাভাইরাসের নাম উল্লেখ করেননি। চীনের ওই গবেষণাকে ‘গেইন অব ফাংশন’ নামে আখ্যা দেওয়া হয়।
তবে সিনেটরের এই বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যান্টনি স্টিফেন ফাউসি। ড. ফাউসি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রধান চিকিৎসা পরামর্শকের দায়িত্বও পালন করছেন। করোনাভাইরাস ইস্যুতে উত্তপ্ত সিনেট সভায় ফাউসি পলকে বলেছিলেন, ‘আপনি কী বলছেন তা আপনি জানেন না’। তাঁদের দুজনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য করোনাভাইরাসের উৎপত্তির বিতর্কে নতুন করে ঘি ঢেলেছে।
‘গেইন অব ফাংশন’ গবেষণা কী
চীনের যে ভাইরাস গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই প্রকল্পটির নাম ‘গেইন অব ফাংশন’। ‘গেইন অব ফাংশন’ বলতে রূপান্তরের (মিউটেশন) মাধ্যমে জীবের নতুন সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। এই মিউটেশন মূলত প্রাকৃতিকভাবেই হয়। তবে বিজ্ঞানীরা চাইলে ল্যাবেও এটি ঘটাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সরাসরি জিনের কোড পরিবর্তন করা হয়।
প্রকল্পটির নামই সন্দেহ আরও উসকে দিয়েছে। কৃত্রিমভাবে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটাতে গিয়েই নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে কি–না সেই সন্দেহ প্রবল হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে এমন গাছ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা খরা প্রবণ অঞ্চলেও টিকে থাকতে পারে বা জীবাণুর বাহক মশা প্রজাতিকে এমনভাবে পরিবর্তিত করা যাতে সেটি আর রোগ ছড়াতে না পারে। অবশ্য বিজ্ঞানীরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, কৃত্রিমভাবে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটাতে গেলে সংক্রমণের সক্ষমতা বেড়ে ভাইরাসটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেতে পারে। অবশ্য এই গেইন অব ফাংশনই করোনাভাইরাস মহামারির জন্য দায়ী কি–না তার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র কি চীনকে গবেষণায় অর্থ দিয়েছিল?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (এনআইএআইডি) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ (এনআইএইচ) যৌথভাবে গবেষণার জন্য উহানের ল্যাবে বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইকো হেলথ অ্যালায়েন্স বাদুড় থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ২০১৪ সালে এনআইএইচ থেকে ৩৭ লাখ ডলার অনুদান পায়। এর মধ্যে ৬ লাখ ডলার উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিকে দিয়েছে। উহানের ল্যাবের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে ইকো হেলথ।
২০১৯ সালে প্রকল্পটি আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। কিন্তু এরপরে করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর ২০২০ সালের এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তির ইতি টানে।
গত মে মাসে ড. ফাউসি বলেন, এনআইএইচ উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে কখনোই গেইন অব ফাংশন গবেষণায় অর্থ দেয়নি, এখনো দিচ্ছে না।
তবে সিনেটর র্যান্ড পলের দৃঢ় বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র চীনে যে গবেষণায় অর্থ দিয়েছে সেটি ‘গেইন অব ফাংশনের’ মতোই। প্রমাণ হিসেবে তিনি দুটি গবেষণা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছেন। এর একটি ২০১৫ সালে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা লিখেছেন। আর অন্যটি প্রকাশ হয় ২০১৭ সালে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সিনেটর পলের এই বক্তব্যকে জোরালো সমর্থন দিয়েছেন। রুটগারস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রিচার্ড এব্রাইট নামে এই অধ্যাপককে উদ্ধৃতও করেছেন সিনেটর পল।
অধ্যাপক এব্রাইট বিবিসিকে বলেছেন, ওই দুই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, নতুন কয়েক ধরনের ভাইরাস (যা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না) তৈরি করা হয়েছে। আর এগুলো রোগ সৃষ্টির নতুন জীবাণু হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, যেগুলো হতে পারে অনেক বেশি সংক্রামক। অধ্যাপক এব্রাইট স্পষ্ট করেই বলেছেন, ওই দুই প্রতিবেদনে যে গবেষণার কথা বলা হয়েছে তা ‘গেইন অব ফাংশন’ গবেষণাই।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে একই ধরনের একটি গবেষণা জৈব নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থেকে বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সে সময় যেই সংজ্ঞার ভিত্তিতে গবেষণাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় তা ‘গেইন অব ফাংশন’–এর মতোই। এ ধরনের গবেষণার জন্য নতুন রূপরেখা তৈরির উদ্দেশ্য থেকেই তখন তহবিল সরবরাহ স্থগিত করা হয়।
ড. ফাউসি কেন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেন?
যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি সিনেটের ওই সভায় বলেন, গেইন অব ফাংশন গবেষণার মাধ্যমে করোনাভাইরাস তৈরি হওয়া ‘আণবিকভাবে অসম্ভব’। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এনআইএইচ এবং ইকো হেলথ অ্যালায়েন্সের ভাষ্যে, পরিবেশ ও জীবজগতের প্রাকৃতিক অবস্থাকে প্রভাবিত না করে ‘বাদুড়ের ভাইরাস’ এবং তাদের স্পাইক প্রোটিনগুলো পরীক্ষা করার জন্য একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ২০১৫ সালে বাদুড়ের ভাইরাসের সহযোগী গবেষক মার্কিন বিজ্ঞানী ড. রাল্ফ বারিক ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ওই গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল এমন কোনো ভাইরাস নভেল করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তহবিলে পরিচালিত গবেষণাটি ২০২০ সালে মহামারির জন্য দায়ী নয়।
ফাউসি নিজেও বিভিন্ন সময়ে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিতে চীনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন। তবে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা তহবিলের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেই দাবি তাঁর।
এর আগে ফাউসি গত ৪ জুন চীনকে উহানের ল্যাবের নয় কর্মীর বিস্তারিত মেডিকেল রিপোর্ট প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার থেকে ছড়িয়েছিল কি–না, সে সম্পর্কে ওই প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে।
সে সময় ফাউসি বলেন, ‘২০১৯ সালে যে তিনজন উহানের ল্যাবে অসুস্থ হয়েছিলেন, আমি তাঁদের মেডিকেল রেকর্ড দেখতে চাই। তাঁরা কি সত্যিই অসুস্থ হয়েছিলেন? যদি তাঁরা অসুস্থ হয়ে থাকেন, তাঁরা কীভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন?’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো ২০১৯ সালে চীনের ভাইরাস গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল কি–না, সেই প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পাওয়ার আগে উহানের ল্যাবে গবেষকেরা অসুস্থ হয়েছিলেন বলে খবরে প্রকাশ।
চীনা গবেষক ও কর্মকর্তারা গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর তত্ত্ব বরাবর নাকচ করে এসেছেন। তাঁদের দাবি, এই ভাইরাস উহানে ছড়ানোর আগে অন্য কোনো অঞ্চলে ছড়িয়েছিল। এটি হিমায়িত খাবার বা বন্যপ্রাণী বাণিজ্য থেকে চীনে ঢুকতে পারে।
সিদ্ধান্ত
চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ২০১৪ সালে একটি গবেষণার জন্য তহবিল দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বাদুড় থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণা হচ্ছিল। তবে সেই গবেষণাই নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তির কারণ কি–না, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বিবিসি
করোনাভাইরাসের উৎপত্তি প্রাকৃতিকভাবে নাকি গবেষণাগারে, তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে মহামারির শুরু থেকেই। গত দেড় বছরে বিভিন্ন সময় অনেক বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, চীনের উহানে রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত কোনো গবেষণাগারে এই ভাইরাস তৈরি করা হয়েছে। আর সেই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুদানের অর্থ খরচ করা হয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছে মার্কিন সিনেট অধিবেশনে।
উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে বাদুড়ের ভাইরাস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিল চীন। গত মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সিনেট অধিবেশনে রিপাবলিকান সিনেটর র্যান্ড পল অভিযোগ করেন, চীনের ওই গবেষণাগারে অধিক সংক্রামক এবং প্রাণঘাতী ভাইরাস তৈরির চেষ্টা চলছিল। আর এই গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুদানের অর্থ ব্যবহার করা হয়েছে।
সিনেটর পল অবশ্য তাঁর বক্তব্যে করোনাভাইরাসের নাম উল্লেখ করেননি। চীনের ওই গবেষণাকে ‘গেইন অব ফাংশন’ নামে আখ্যা দেওয়া হয়।
তবে সিনেটরের এই বক্তব্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংক্রামক রোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অ্যান্টনি স্টিফেন ফাউসি। ড. ফাউসি প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রধান চিকিৎসা পরামর্শকের দায়িত্বও পালন করছেন। করোনাভাইরাস ইস্যুতে উত্তপ্ত সিনেট সভায় ফাউসি পলকে বলেছিলেন, ‘আপনি কী বলছেন তা আপনি জানেন না’। তাঁদের দুজনের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য করোনাভাইরাসের উৎপত্তির বিতর্কে নতুন করে ঘি ঢেলেছে।
‘গেইন অব ফাংশন’ গবেষণা কী
চীনের যে ভাইরাস গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হচ্ছে, ওই প্রকল্পটির নাম ‘গেইন অব ফাংশন’। ‘গেইন অব ফাংশন’ বলতে রূপান্তরের (মিউটেশন) মাধ্যমে জীবের নতুন সামর্থ্য অর্জনের বিষয়টি বোঝানো হয়েছে। এই মিউটেশন মূলত প্রাকৃতিকভাবেই হয়। তবে বিজ্ঞানীরা চাইলে ল্যাবেও এটি ঘটাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সরাসরি জিনের কোড পরিবর্তন করা হয়।
প্রকল্পটির নামই সন্দেহ আরও উসকে দিয়েছে। কৃত্রিমভাবে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটাতে গিয়েই নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে কি–না সেই সন্দেহ প্রবল হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞানীরা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং করে এমন গাছ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, যা খরা প্রবণ অঞ্চলেও টিকে থাকতে পারে বা জীবাণুর বাহক মশা প্রজাতিকে এমনভাবে পরিবর্তিত করা যাতে সেটি আর রোগ ছড়াতে না পারে। অবশ্য বিজ্ঞানীরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, কৃত্রিমভাবে ভাইরাসের রূপান্তর ঘটাতে গেলে সংক্রমণের সক্ষমতা বেড়ে ভাইরাসটি বিপজ্জনক হয়ে উঠেতে পারে। অবশ্য এই গেইন অব ফাংশনই করোনাভাইরাস মহামারির জন্য দায়ী কি–না তার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্র কি চীনকে গবেষণায় অর্থ দিয়েছিল?
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (এনআইএআইডি) এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অব হেলথ (এনআইএইচ) যৌথভাবে গবেষণার জন্য উহানের ল্যাবে বিনিয়োগ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইকো হেলথ অ্যালায়েন্স বাদুড় থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ২০১৪ সালে এনআইএইচ থেকে ৩৭ লাখ ডলার অনুদান পায়। এর মধ্যে ৬ লাখ ডলার উহানের ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিকে দিয়েছে। উহানের ল্যাবের সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করে ইকো হেলথ।
২০১৯ সালে প্রকল্পটি আরও পাঁচ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়। কিন্তু এরপরে করোনাভাইরাস মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর ২০২০ সালের এপ্রিলে ট্রাম্প প্রশাসন চুক্তির ইতি টানে।
গত মে মাসে ড. ফাউসি বলেন, এনআইএইচ উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে কখনোই গেইন অব ফাংশন গবেষণায় অর্থ দেয়নি, এখনো দিচ্ছে না।
তবে সিনেটর র্যান্ড পলের দৃঢ় বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র চীনে যে গবেষণায় অর্থ দিয়েছে সেটি ‘গেইন অব ফাংশনের’ মতোই। প্রমাণ হিসেবে তিনি দুটি গবেষণা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করেছেন। এর একটি ২০১৫ সালে চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা লিখেছেন। আর অন্যটি প্রকাশ হয় ২০১৭ সালে।
যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সিনেটর পলের এই বক্তব্যকে জোরালো সমর্থন দিয়েছেন। রুটগারস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক রিচার্ড এব্রাইট নামে এই অধ্যাপককে উদ্ধৃতও করেছেন সিনেটর পল।
অধ্যাপক এব্রাইট বিবিসিকে বলেছেন, ওই দুই গবেষণা প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, নতুন কয়েক ধরনের ভাইরাস (যা প্রকৃতিতে পাওয়া যায় না) তৈরি করা হয়েছে। আর এগুলো রোগ সৃষ্টির নতুন জীবাণু হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে, যেগুলো হতে পারে অনেক বেশি সংক্রামক। অধ্যাপক এব্রাইট স্পষ্ট করেই বলেছেন, ওই দুই প্রতিবেদনে যে গবেষণার কথা বলা হয়েছে তা ‘গেইন অব ফাংশন’ গবেষণাই।
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালে একই ধরনের একটি গবেষণা জৈব নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ থেকে বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র সরকার। সে সময় যেই সংজ্ঞার ভিত্তিতে গবেষণাটি বন্ধ করে দেওয়া হয় তা ‘গেইন অব ফাংশন’–এর মতোই। এ ধরনের গবেষণার জন্য নতুন রূপরেখা তৈরির উদ্দেশ্য থেকেই তখন তহবিল সরবরাহ স্থগিত করা হয়।
ড. ফাউসি কেন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেন?
যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফাউসি সিনেটের ওই সভায় বলেন, গেইন অব ফাংশন গবেষণার মাধ্যমে করোনাভাইরাস তৈরি হওয়া ‘আণবিকভাবে অসম্ভব’। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
অন্যদিকে এনআইএইচ এবং ইকো হেলথ অ্যালায়েন্সের ভাষ্যে, পরিবেশ ও জীবজগতের প্রাকৃতিক অবস্থাকে প্রভাবিত না করে ‘বাদুড়ের ভাইরাস’ এবং তাদের স্পাইক প্রোটিনগুলো পরীক্ষা করার জন্য একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।
উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ২০১৫ সালে বাদুড়ের ভাইরাসের সহযোগী গবেষক মার্কিন বিজ্ঞানী ড. রাল্ফ বারিক ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ওই গবেষণার বিষয়বস্তু ছিল এমন কোনো ভাইরাস নভেল করোনাভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের তহবিলে পরিচালিত গবেষণাটি ২০২০ সালে মহামারির জন্য দায়ী নয়।
ফাউসি নিজেও বিভিন্ন সময়ে করোনাভাইরাসের উৎপত্তিতে চীনের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে আসছিলেন। তবে সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা তহবিলের সংশ্লিষ্টতা নেই বলেই দাবি তাঁর।
এর আগে ফাউসি গত ৪ জুন চীনকে উহানের ল্যাবের নয় কর্মীর বিস্তারিত মেডিকেল রিপোর্ট প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। করোনাভাইরাস পরীক্ষাগার থেকে ছড়িয়েছিল কি–না, সে সম্পর্কে ওই প্রতিবেদন গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হতে পারে।
সে সময় ফাউসি বলেন, ‘২০১৯ সালে যে তিনজন উহানের ল্যাবে অসুস্থ হয়েছিলেন, আমি তাঁদের মেডিকেল রেকর্ড দেখতে চাই। তাঁরা কি সত্যিই অসুস্থ হয়েছিলেন? যদি তাঁরা অসুস্থ হয়ে থাকেন, তাঁরা কীভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন?’
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো ২০১৯ সালে চীনের ভাইরাস গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়েছিল কি–না, সেই প্রতিবেদন পরীক্ষা করে দেখছে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে করোনাভাইরাসের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পাওয়ার আগে উহানের ল্যাবে গবেষকেরা অসুস্থ হয়েছিলেন বলে খবরে প্রকাশ।
চীনা গবেষক ও কর্মকর্তারা গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর তত্ত্ব বরাবর নাকচ করে এসেছেন। তাঁদের দাবি, এই ভাইরাস উহানে ছড়ানোর আগে অন্য কোনো অঞ্চলে ছড়িয়েছিল। এটি হিমায়িত খাবার বা বন্যপ্রাণী বাণিজ্য থেকে চীনে ঢুকতে পারে।
সিদ্ধান্ত
চীনের উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজিতে ২০১৪ সালে একটি গবেষণার জন্য তহবিল দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে বাদুড় থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাব্যতা নিয়ে গবেষণা হচ্ছিল। তবে সেই গবেষণাই নভেল করোনাভাইরাসের উৎপত্তির কারণ কি–না, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি।
সূত্র: বিবিসি
গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ম্যাজিক্যাল নাইট ২.০’ নামের একটি কনসার্টে অংশ নেন আতিফ। এই কনসার্টে আতিফ আসলামের সঙ্গে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে দেখা গেছে দাবিতে একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
১৬ ঘণ্টা আগে‘তাপসী তাবাসসুম উর্মি (Tapashee Tabassum Urmi)’ নামের ফেসবুক পেজ থেকে গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিওটি পোস্ট করে দাবি করা হয়, এটি আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজিত কনসার্টে আসা দর্শকদের মারামারির ভিডিও। এটি আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ৮ লাখ ২০ হাজারের বেশি দেখা হয়েছে, শেয়ার হয়েছে...
১৭ ঘণ্টা আগেগতকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’ নামে ফেসবুক পেজে এক ভিডিও পোস্টে দাবি করা হয়, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘ইউনূস হটাও আন্দোলনে উত্তাল চট্টগ্রাম’। আজ শুক্রবার রাত ৯টা পর্যন্ত ভিডিওটি দেখা হয়েছে প্রায় ৭৮ হাজার বার...
২ দিন আগেচিন্ময় দাসের আটক পরবর্তী সময়ে গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) শুভেন্দু অধিকারী নিজের ভেরিফায়েড এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে সোয়া তিন মিনিটের একটি ভিডিও পোস্ট করে দাবি করেন, এটি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা।
২ দিন আগে