পানি কি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, বোতলে কিসের মেয়াদ

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ০০
আপডেট : ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৭: ০৬

দোকান থেকে প্যাকেটজাত কিছু কেনার সময় পণ্যের মেয়াদ দেখে নেওয়াটা জরুরি। সব দেশেই খাবারের প্যাকেটে মেয়াদ লেখা বাধ্যতামূলক। পানির বোতলেও মেয়াদ লেখা থাকে। পানিরও কি মেয়াদ থাকে? এ প্রশ্নের উত্তর হলো পানি কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হয় না। তাহলে পানির বোতলের গায়ে কিসের মেয়াদ লেখা থাকে?

এর পেছনে আছে ছোট এক ইতিহাস। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ও একমাত্র অঙ্গরাজ্য হিসেবে নিউজার্সিতে একটা আইন পাস হয়। যেখানে বলা হয়, বোতলজাত পানিসহ সব খাদ্যপণ্যের গায়ে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ উল্লেখ করে দিতে হবে। আর এ মেয়াদকাল উৎপাদনের তারিখ থেকে হবে সর্বোচ্চ দুই বছর। এই আইন পাসের পর থেকেই পানির বোতলের গায়ে মেয়াদ লেখা পানি বোতলজাত শিল্পের মানদণ্ডে পরিণত হয়। তবে ২০০৪ সালে এই আইন পরিবর্তন করা হয়। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ লেখার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। 

যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) বোতলজাত পানির মেয়াদ সম্পর্কে জানায়, এ ধরনের পানি যেকোনো সময়ই ব্যবহার করা যাবে, যদি বোতলটি যথাযথভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হয় এবং ছিপি খোলা না হয়। বোতলজাত পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পানির স্বাদ, গন্ধের দিকে খেয়াল রেখে বোতলের গায়ে একটি তারিখ উল্লেখ করে দিতে পারে। বোতলজাত পানি ভালো রাখতে ঠান্ডা স্থানে সূর্যের আলো থেকে দূরে সংরক্ষণের পরামর্শ দেয় এফডিএ। আন্তর্জাতিক বোতলজাত পানি অ্যাসোসিয়েশনও (আইবিডাব্লিউএ) বোতলজাত পানি কক্ষ তাপমাত্রায় সরাসরি সূর্যালোকের বাইরে, দ্রাবক এবং রাসায়নিক পদার্থ যেমন: পেট্রল, পেইন্ট থিনার এবং ড্রাই ক্লিনিং ইত্যাদি রাসায়নিক থেকে দূরে সংরক্ষণের পরামর্শ দেয়। 

একই ধরনের বক্তব্য পাওয়া যায় যুক্তরাষ্ট্রের ফুড সেইফটি কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকেও। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, বোতলজাত পানির কোনো মেয়াদ নেই। তবে সংরক্ষণের ভিন্নতার কারণে পানির স্বাদে পরিবর্তন আসতে পারে। 

তাহলে বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ কেন লেখা হয়? বিজ্ঞানভিত্তিক ওয়েবসাইট লাইভ সায়েন্স বলছে, এর পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। এর মধ্যে আছে, সরকারি হিসাব–নিকাশ। যেমন, পানি হচ্ছে ভোগ্যপণ্য। তাই অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের মতোই বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ উল্লেখ করার একটি সরকারি বাধ্যবাধকতা আছে। পাশাপাশি বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ উল্লেখ করার মধ্যে পানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানেরও বেশ কিছু সুবিধা আছে। যেমন: বোতলজাত পানিটি কখন, কোথায় প্রক্রিয়াজাত করা হলো ইত্যাদি বিষয়ে নথি রাখা যায়।

আবার অনেক কোম্পানি যেই মেশিন ব্যবহার করে পানি বোতলজাত করে, একই মেশিন তারা সোডা এবং অন্যান্য পানীয় বোতলজাত করতে ব্যবহার করে। এসব সোডা ও পানীয়ের মেয়াদ সীমিত। ফলে এসব পণ্যে মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ লিখতে হয়। পানির জন্য আলাদা মেশিন ব্যবহার না করে একই মেশিনে সব ধরনের পানীয় বোতলজাত করায় মেয়াদের স্ট্যাম্প লাগানো সহজ হয় এবং উৎপাদন খরচও কমে। বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ উল্লেখ থাকে কেন। ছবি: সংগৃহীতলাইভ সায়েন্স আরও জানায়, পানি যদিও কখনো পানের অযোগ্য হয় না, তবে পানিটি যে বোতলে রাখা হচ্ছে সেটি মেয়াদোত্তীর্ণ হতে পারে এবং বোতল থেকে পানিতে ক্ষতিকর রাসায়নিক ছড়াতে পারে। এতে বোতলের পানি পানের অনুপযুক্ত না হলেও স্বাদে পরিবর্তন আসতে পারে। এ কারণেও বোতলজাত পানির গায়ে মেয়াদ উল্লেখ করা হয়। 

অর্থাৎ, বোতলজাত পানির মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ মানে বোতলের মেয়াদ, পানির মেয়াদ নয়।

তাই সাধারণত মেয়াদোত্তীর্ণ বোতলের পানি পান না করাই ভালো বলে পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইন। কারণ সময়ের সঙ্গে বোতলের প্লাস্টিক কণা পানির সঙ্গে মিশে সেই পানিকে ‘অ্যান্টিমনি’, ‘বিসফেনল এ’ জাতীয় রাসায়নিকের মাধ্যমে দূষিত হতে পারে। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত