প্রচণ্ড গরমে কাদায় একপাল জলহস্তী, উগান্ডার ভিডিও সাতক্ষীরার দাবিতে ভাইরাল

ফ্যাক্টচেক ডেস্ক
আপডেট : ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ২১: ৩৮
Thumbnail image

দেশে চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। মাত্রাতিরিক্ত গরমে দুর্ভোগে মানুষসহ অন্য প্রাণীরাও। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একপাল জলহস্তীর ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, জলহস্তীগুলো খালের মতো স্থানে কাদায় মাখামাখি হয়ে আছে। ভিডিওটির ক্যাপশনে দাবি করা হচ্ছে, ঘটনাস্থল সাতক্ষীরা জেলা। সেখানে গরমে খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় খুব কষ্ট আছে জলহস্তীরা।

আবার ভাইরাল আরেকটি ভিডিওতে দাবি করা হচ্ছে, এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে সাতক্ষীরার সায়ের খাল থেকে। ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, ‘সাতক্ষীরার সায়েরের খালে একি দেখা যায়। এটা কি কেউ জানলে জানাবেন।’ 

এমডি মিলন আকাশ (MD Milon Akash) নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ২৭ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। এই ভিডিও আজ মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ৩০ লাখ বার দেখা হয়েছে, রিয়্যাকশন পড়েছে ১১ হাজারের বেশি। 

উল্লেখ্য, ১৮৬৫ সালে অবিভক্ত বাংলার সাতক্ষীরার জমিদার প্রাণনাথ রায় ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধার্থে প্রাণ সায়ের খাল খনন করেন। দেশের বিভিন্ন স্থান  থেকে বড় বড় বাণিজ্যিক নৌকা এ খালে ভিড়ত।

ভাইরাল ভিডিওটি থেকে কিছু কি–ফ্রেম নিয়ে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ‘ওয়াইল্ড ফ্রেন্ডস আফ্রিকা’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ২০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে ধারণ করা ভিডিওটির দৃশ্য ভাইরাল ভিডিওর অনুরূপ।

ভিডিওটি ২০২২ সালের ২৩ নভেম্বর ‘ওয়াইল্ড ফ্রেন্ডস আফ্রিকা’ পেজটিতে পোস্ট করা হয়। পোস্টটির ক্যাপশনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্ক থেকে ধারণ করা। ওই সময় প্রচণ্ড গরম থেকে বাঁচতে জলহস্তীর পাল কাদায় নেমে পড়ে।

পরে আরও খুঁজে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লিক–এ সাতক্ষীরার দাবিতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির অনুরূপ একটি ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। ২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর ভিডিওটি প্রকাশ করা হয়।

উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্কে জলহস্তীর ভিডিওটি ২০২২ সালে ধারণ করা। ছবি: ব্লিকভিডিওটি সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, ওই বছরের ৩ নভেম্বর উগান্ডার কুইন এলিজাবেথ ন্যাশনাল পার্কের একটি অদ্ভুত ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। প্রথম দেখাতে কারও মনে হবে যেন মাটির স্তূপ হেঁটে চলছে! প্রকৃতপক্ষে ওই ফুটেজে কাদার মধ্যে ২৫টি জলহস্তীর একটি পাল শরীর শীতল করছে। 

প্রসঙ্গত, জলহস্তী মূলত সাব–সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের একটি বৃহৎ স্তন্যপায়ী পশু প্রজাতি। এদের আবাস মূলত আফ্রিকা। ইউরোপেও কিছু পাওয়া যায়। কিছু আছে কলম্বিয়ায়।

এদের ইংরেজি নাম ‘হিপোপটেমাস’ (Hippopotamus) শব্দটি এসেছে লাতিন থেকে। লাতিনে এটি আত্মীকরণ হয়েছে প্রাচীন গ্রিক শব্দ ‘হিপোপটেমোস (hippopótamos)। গ্রিক híppos অর্থ ঘোড়া। আর পটামোস অর্থ নদী। অর্থাৎ জলহস্তীর ইংরেজি নামের আক্ষরিত অর্থ ‘নদীর ঘোড়া’। জলহস্তী আধা জলচর প্রাণী। এরা শরীর শীতল রাখতে বেশির ভাগ সময় পানিতেই থাকে। এ থেকেই সম্ভবত এমন নাম।

বাংলাদেশে চিড়িয়াখানা বা সাফারি পার্ক ছাড়া কোনো উন্মুক্ত পরিবেশে জলহস্তী দেখা যাওয়ার তথ্য নেই।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, সংবাদমাধ্যম বা যেকোনো মাধ্যমে প্রচারিত কোনো ছবি, ভিডিও বা তথ্য বিভ্রান্তিকর মনে হলে তার স্ক্রিনশট বা লিংক কিংবা সে সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আমাদের ই-মেইল করুন। আমাদের ই-মেইল ঠিকানা [email protected]
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত