ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
জরায়ুর টিউমার বলতে সাধারণত ফাইব্রয়েড বা ফাইব্রোমায়োমাকে বোঝানো হয়। নারীর প্রজননক্ষম বয়সে এ টিউমারটি বেশি হয়ে থাকে। জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধিই এই টিউমারের কারণ। ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে ২০ শতাংশ এই টিউমারে আক্রান্ত হন।
অযথা আতঙ্কিত হবেন না
অনেকেই এই টিউমারের সঙ্গে ক্যানসারকে মিলিয়ে ফেলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মনে রাখতে হবে, ফাইব্রয়েড জরায়ুর একধরনের নিরীহ টিউমার। এটি ক্যানসার কিংবা বিপজ্জনক কিছু নয়। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জরায়ু না ফেলে শুধু টিউমারটি অপারেশন করা যায় অথবা নির্দেশনা অনুযায়ী টিউমারসহ পুরো জরায়ু কেটে বাদ দিলে এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তা ছাড়া যাঁদের বয়স মেনোপজের কাছাকাছি, তাঁদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর টিউমারটি সাধারণত ছোট হয়ে মিলিয়ে যায় এবং আর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়
না। এখন অপারেশন ছাড়া ওষুধের মাধ্যমেও এই টিউমারের সফল চিকিৎসা সম্ভব। রোগীর উপসর্গ কতটা তীব্র ও টিউমারের আকার কতটা বড়, টিউমারটির অবস্থান জরায়ুর ঠিক কোথায় ইত্যাদি অনেক বিষয়ের ওপর চিকিৎসার ধরন নির্ভর করে।
আশার কথা
আশার কথা হচ্ছে, ২৫ শতাংশ ফাইব্রয়েড কোনো উপসর্গ ছাড়াই সারা জীবন রয়ে যেতে পারে। হয়তো অন্য কোনো কারণে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে গিয়ে কাকতালীয়ভাবে টিউমারটি ধরা পড়ে। এসব ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কোনো সমস্যা না থাকার পরেও হঠাৎ ধরা পড়া এই টিউমার নিয়ে নারীরা অযথা উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অথচ উপসর্গ না থাকলে, টিউমারের জন্য কোনো সমস্যা না হয়ে থাকলে, কাকতালীয়ভাবে ধরা পড়া এই টিউমার নিয়ে একেবারেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এমনকি কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই। স্থায়ীভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, এই টিউমার নিজে থেকে পুরোপুরি সেরে যাবে।
জরায়ুর টিউমার হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি ক্যানসার নয়। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। সঠিক সময়ে, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
কখন চিকিৎসা করা জরুরি
যখন টিউমারের কারণে মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও তীব্র ব্যথা হয় এবং যখন টিউমারের কারণে বন্ধ্যত্ব রোগের শিকার হতে হয়, তখনই জরায়ুর টিউমারের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। টিউমারের কারণে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা হলো, অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, মাসিকের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা, তলপেটে অস্বস্তি বা ভারবোধ হওয়া ইত্যাদি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ থেকে মারাত্মক রক্তশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। সাধারণত ২৭ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই টিউমার বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় টিউমারের কারণে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যাওয়া
বা বারবার গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
কখন বন্ধ্যত্ব বা গর্ভপাত হয়
চিকিৎসা কী
সবার আগে দেখতে হবে রোগীর বন্ধ্যত্বের অন্য কোনো কারণ আছে কি না। এ ক্ষেত্রে পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণগুলোও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। কেননা এর ওপর চিকিৎসার ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটি নির্ভরশীল।
ফাইব্রয়েডের কারণে যদি নারীর বন্ধ্যত্ব ও বারবার গর্ভপাতের মতো কারণ ঘটে, তবে মায়োমেক্টমি নামে একধরনের অপারেশন করা হয়। এতে জরায়ু ঠিক রেখে শুধু টিউমারটি জরায়ুর দেয়াল থেকে কেটে তুলে আনা হয় এবং জরায়ুর দেয়াল আবার সেলাই করে দেওয়া হয়। এই অপারেশন পেট কেটে
বা পেট না কেটে ছিদ্র করে উভয় পদ্ধতিতেই করা যায়।
এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন
জরায়ুর টিউমারের কারণে উপসর্গগুলো মারাত্মক হলে, রোগী বারবার রক্তশূন্য হয়ে রক্ত সঞ্চালন করতে হলে এবং রোগী আর সন্তান নিতে না চাইলে কিংবা ওষুধের মাধ্যমে উপসর্গের উন্নতি করা না গেলে সম্পূর্ণ জরায়ু কেটে বাদ দেওয়াই একমাত্র সমাধান হতে পারে।
তবে আক্রান্ত রোগীর বয়স যদি মেনোপজ হওয়ার কাছাকাছি হয়, সে ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে মেনোপজ পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায়। মেনোপজের পর জরায়ুর টিউমারের সমস্যাগুলো সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
জরায়ুর টিউমার বলতে সাধারণত ফাইব্রয়েড বা ফাইব্রোমায়োমাকে বোঝানো হয়। নারীর প্রজননক্ষম বয়সে এ টিউমারটি বেশি হয়ে থাকে। জরায়ুর পেশির অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধিই এই টিউমারের কারণ। ৩০ বছরের বেশি বয়সী নারীদের মধ্যে ২০ শতাংশ এই টিউমারে আক্রান্ত হন।
অযথা আতঙ্কিত হবেন না
অনেকেই এই টিউমারের সঙ্গে ক্যানসারকে মিলিয়ে ফেলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মনে রাখতে হবে, ফাইব্রয়েড জরায়ুর একধরনের নিরীহ টিউমার। এটি ক্যানসার কিংবা বিপজ্জনক কিছু নয়। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে জরায়ু না ফেলে শুধু টিউমারটি অপারেশন করা যায় অথবা নির্দেশনা অনুযায়ী টিউমারসহ পুরো জরায়ু কেটে বাদ দিলে এই রোগ থেকে সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তা ছাড়া যাঁদের বয়স মেনোপজের কাছাকাছি, তাঁদের ক্ষেত্রে মেনোপজের পর টিউমারটি সাধারণত ছোট হয়ে মিলিয়ে যায় এবং আর কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়
না। এখন অপারেশন ছাড়া ওষুধের মাধ্যমেও এই টিউমারের সফল চিকিৎসা সম্ভব। রোগীর উপসর্গ কতটা তীব্র ও টিউমারের আকার কতটা বড়, টিউমারটির অবস্থান জরায়ুর ঠিক কোথায় ইত্যাদি অনেক বিষয়ের ওপর চিকিৎসার ধরন নির্ভর করে।
আশার কথা
আশার কথা হচ্ছে, ২৫ শতাংশ ফাইব্রয়েড কোনো উপসর্গ ছাড়াই সারা জীবন রয়ে যেতে পারে। হয়তো অন্য কোনো কারণে আলট্রাসনোগ্রাফি করতে গিয়ে কাকতালীয়ভাবে টিউমারটি ধরা পড়ে। এসব ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায়, কোনো সমস্যা না থাকার পরেও হঠাৎ ধরা পড়া এই টিউমার নিয়ে নারীরা অযথা উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফলে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন। অথচ উপসর্গ না থাকলে, টিউমারের জন্য কোনো সমস্যা না হয়ে থাকলে, কাকতালীয়ভাবে ধরা পড়া এই টিউমার নিয়ে একেবারেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এমনকি কোনো চিকিৎসারও প্রয়োজন নেই। স্থায়ীভাবে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, এই টিউমার নিজে থেকে পুরোপুরি সেরে যাবে।
জরায়ুর টিউমার হলেই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এটি ক্যানসার নয়। চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। সঠিক সময়ে, সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব।
কখন চিকিৎসা করা জরুরি
যখন টিউমারের কারণে মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও তীব্র ব্যথা হয় এবং যখন টিউমারের কারণে বন্ধ্যত্ব রোগের শিকার হতে হয়, তখনই জরায়ুর টিউমারের চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। টিউমারের কারণে যে উপসর্গগুলো দেখা দেয় তা হলো, অনিয়মিত মাসিক, অতিরিক্ত ঋতুস্রাব, মাসিকের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা, তলপেটে অস্বস্তি বা ভারবোধ হওয়া ইত্যাদি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ থেকে মারাত্মক রক্তশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। সাধারণত ২৭ থেকে ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই টিউমার বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে উঠতে পারে। অনেক সময় টিউমারের কারণে ভ্রূণ নষ্ট হয়ে যাওয়া
বা বারবার গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
কখন বন্ধ্যত্ব বা গর্ভপাত হয়
চিকিৎসা কী
সবার আগে দেখতে হবে রোগীর বন্ধ্যত্বের অন্য কোনো কারণ আছে কি না। এ ক্ষেত্রে পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণগুলোও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি। কেননা এর ওপর চিকিৎসার ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারটি নির্ভরশীল।
ফাইব্রয়েডের কারণে যদি নারীর বন্ধ্যত্ব ও বারবার গর্ভপাতের মতো কারণ ঘটে, তবে মায়োমেক্টমি নামে একধরনের অপারেশন করা হয়। এতে জরায়ু ঠিক রেখে শুধু টিউমারটি জরায়ুর দেয়াল থেকে কেটে তুলে আনা হয় এবং জরায়ুর দেয়াল আবার সেলাই করে দেওয়া হয়। এই অপারেশন পেট কেটে
বা পেট না কেটে ছিদ্র করে উভয় পদ্ধতিতেই করা যায়।
এ ক্ষেত্রে মনে রাখা প্রয়োজন
জরায়ুর টিউমারের কারণে উপসর্গগুলো মারাত্মক হলে, রোগী বারবার রক্তশূন্য হয়ে রক্ত সঞ্চালন করতে হলে এবং রোগী আর সন্তান নিতে না চাইলে কিংবা ওষুধের মাধ্যমে উপসর্গের উন্নতি করা না গেলে সম্পূর্ণ জরায়ু কেটে বাদ দেওয়াই একমাত্র সমাধান হতে পারে।
তবে আক্রান্ত রোগীর বয়স যদি মেনোপজ হওয়ার কাছাকাছি হয়, সে ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে মেনোপজ পর্যন্ত অপেক্ষা করা যায়। মেনোপজের পর জরায়ুর টিউমারের সমস্যাগুলো সাধারণত নিজে নিজেই ভালো হয়ে যায়।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ এবং প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
প্রতিদিন চা ও কফি পান করার অভ্যাস রয়েছে অনেকেরই। এবার এই অভ্যাসের একটি ভালো দিক খুঁজে পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা। তাঁদের মতে, নিয়মিত কফি এবং চা পান করলে মুখ, গলা ও কণ্ঠনালী সম্পর্কিত ক্যানসারের ঝুঁকি কমতে পারে। নতুন এক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে।
১ দিন আগেস্বাস্থ্যকে ক্যাডারে অন্তর্ভুক্ত না রেখে আলাদা রাখার জন্য জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন যে সুপারিশ করতে যাচ্ছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস হেলথ ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সব নীতিনির্ধারণী পদে স্বাস্থ্য ক্যাডার কর্মকর্তা পদায়নের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
২ দিন আগেক্যানসার চিকিৎসায় একটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা। এই প্রযুক্তিতে ক্যানসার কোষগুলোকে মেরে ফেলার পরিবর্তে সেগুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে।
২ দিন আগেদিনে কতবার মলত্যাগ করা হলো—সেটাকে আমরা বেশ গুরুত্ব দিয়ে থাকি। একেবারে না হওয়া কিংবা অতিরিক্ত হওয়া বিভিন্ন রোগের উপসর্গ হিসেবে ধরে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, এটি নির্ভর করে কিছু ব্যক্তিগত ও শারীরিক বিষয়ের ওপর। কিন্তু প্রস্রাবের হার কি একই রকম কোনো নির্ধারিত নিয়মের মধ্যে পড়ে?
৩ দিন আগে