ঠান্ডার সমস্যায় যা খাবেন

লিনা আকতার
আপডেট : ২৫ জানুয়ারি ২০২২, ১০: ৪১
Thumbnail image

আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের খাবারের ধরনেও পরিবর্তন আসে। শীতের বেশির ভাগ সময় মিষ্টি ও চর্বিযুক্ত খাবার বেশি খাওয়া হয়, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। অন্যদিকে পর্যাপ্ত তরল বা পানীয় গ্রহণ না করার ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয় এবং ত্বক শুষ্ক, মলিন, রুক্ষ হয় ও চুল সতেজতা হারায়। অবশ্য শীত মৌসুমে বিভিন্ন হরমোন নিঃসরণের তারতম্যের কারণেও বিশেষ কিছু খাবারে আকর্ষণ বাড়ে। ফলে শীতকালে শরীর সুস্থ রাখতে এমন খাবার খেতে হবে, যা শরীরকে গরম রাখবে, তৃপ্তি দেবে ও পানির চাহিদা দূর করবে।

শীতকালে সূর্যের আলো কম থাকে বলে সেরোটোনিন হরমোন নিঃসরণ কমে যায়। ফলে মেজাজ, মুড সুইং, বিষণ্নতা ও একঘেয়েমির সমস্যা তৈরি হয়। প্রোটিনের পাশাপাশি পর্যাপ্ত শর্করাজাতীয় খাবার খেলে সেরোটোনিন হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকবে। এ জন্য খাবারে এক-তৃতীয়াংশ প্রোটিন, দুই-তৃতীয়াংশ সবজি ও সালাদ রাখুন নিয়মিত।

ছবি: পেক্সেলসএই মৌসুমে যে ধরনের খাবার ভিটামিন সি

ভিটামিন সি শীতকালে ত্বক শুষ্ক ও চুল রুক্ষ হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে। তাই প্রতিদিন কাঁচা মরিচ, পেয়ারা, লেবু, পেঁপে, কমলা, আমলকী, ফুলকপি, ব্রকলি ইত্যাদি ভিটামিন সি-জাতীয় খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।

জিংকসমৃদ্ধ খাবার

শীতে অনেকের ফ্লু, সর্দি ও ডায়রিয়া হয়। জিংকসমৃদ্ধ খাবার এসব অসুস্থতা প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। এ জন্য খেতে পারেন মাংস, বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ, গোটা শস্য, গুড়, ডার্ক চকলেট ইত্যাদি।

আয়রনসমৃদ্ধ খাবার

শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলে শরীরে রক্তপ্রবাহ কমে যায়। তাই শীতে পর্যাপ্ত আয়রনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন ডিম, মাংস, ডাল, মিষ্টিকুমড়ার বিচি, কলিজা, ডালিম ইত্যাদি খেতে হবে। সঙ্গে খেতে হবে ভিটামিন সিযুক্ত খাবার।

ভিটামিন ডি

শীতকালে ঠান্ডা ও ফ্লুর মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে ভিটামিন ডি। এটি সূর্যালোকের উপস্থিতিতে আমাদের শরীরে তৈরি হয়। এ সময় খেতে হবে ডিম, দুগ্ধজাত খাবার, তিল, তিসি বীজ, আখরোট, চিয়া বীজ ইত্যাদি।

ছবি: পেক্সেলসস্যুপ

শীতের সাধারণ সমস্যা সর্দি-কাশি। এ সমস্যার ভালো খাবার হলো মৌসুমি সবজি দিয়ে বানানো স্যুপ। এটি পানিশূন্যতা দূর করে শরীরকে তরতাজা করে। এ ছাড়া শ্বাসনালিতে কফ বা শ্লেষ্মা জমাট বাঁধা দূর করতে সাহায্য করে।

রসুন

রসুনে অ্যান্টিভাইরাল ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল গুণ আছে, যা সর্দি বা ফ্লু সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। এ জন্য কাঁচা রসুন চিবিয়ে খেতে পারেন। রান্না করে খেতে চাইলে রান্না শেষ হওয়ার একটু আগে রসুন দিন, যাতে সেটি খুব বেশি সেদ্ধ না হয়।

আদা

আদা হজম-প্রক্রিয়া, বমি ভাব ও ফ্লু কমাতে দারুণ কার্যকরী। এটি চিবিয়ে, চায়ের সঙ্গে, গরম পানি, মধু ও লেবুর সঙ্গে কিংবা স্যুপে দিয়ে খেতে পারেন।

দুগ্ধজাত খাবার

শীতের রাতে শরীর গরম রাখতে দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে পান করতে পারেন। এ ছাড়া খেতে পারেন দই–এটি ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করে।

এ ছাড়া এই মৌসুমের পাতাযুক্ত সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর আঁশসহ বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, খনিজ ও উপকারী অ্যাসিড আছে। আছে ব্যাকটেরিয়া ও প্রদাহ প্রতিরোধী উপাদান। এগুলো খেলে শীতকালের কম তাপমাত্রাজনিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক থাকবে।

লেখক: পুষ্টিবিদ, ঠাকুরগাঁও ডায়াবেটিক ও স্বাস্থ্যসেবা হাসপাতাল

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত