ডা. সানজিদা শাহ্রিয়া
তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো? এই বাক্যেই একটা নেতিবাচক সুর রয়েছে। সন্দেহ করা আসলেই কি নেতিবাচক বা খারাপ কিছু? উত্তরে প্রথমেই বলতে হবে, যিনি সন্দেহ করছেন তিনি নিজেও কষ্ট পাচ্ছেন। তবে সন্দেহ সব সময়ই নেতিবাচক নয়। ইতিবাচকও হতে পারে। ইতিবাচক সন্দেহ সম্পর্কের ক্ষতি করে না। অন্যদিকে নেতিবাচক সন্দেহের কারণে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি তো হয়-ই, পাশাপাশি আশপাশের কাছের মানুষেরও স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়।
ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
সন্দেহবাতিকগ্রস্ততা দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটা হচ্ছে আক্রান্ত অবস্থা ও অন্যটি স্বাস্থ্যকর। এককথায়, একটা স্বাস্থ্যকর সন্দেহ আরেকটা অস্বাস্থ্যকর। স্বাস্থ্যকর সন্দেহ হচ্ছে নিজেকে বা কাছের মানুষকে ভালো ও নিরাপদে রাখার জন্য। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, ছোট ভাইকে টাকা দিলে সে নেশা করতে পারে। এটা ভেবে তাকে টাকা না দেওয়াটা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর সন্দেহ। কিন্তু এমন যদি হয়, তার নেশাগ্রস্ত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তারপরও তাকে নানাভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, তখন সেটা পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ ব্যক্তির নিজের সমস্যা।
সন্দেহ সাংঘাতিকভাবে অসুস্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। যখন এটা হয়, তখন এটা ডিসঅর্ডারে রূপ নেয়। ফলে এই পর্যায়ে যাওয়ার পর এই ব্যক্তির আশপাশে পরিবার-পরিজন সবার জীবনেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা করার প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি নিতে হবে।
নেতিবাচক সন্দেহের পর শারীরিক ক্ষতি
সন্দেহের ফলে শরীরে কর্টিসল নামে একটি হরমোন নিঃসরণ হয়। এই হরমোন হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো সিম্পটম তৈরি করতে পারে। ঘাম হবে, শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি দ্রুত হবে। এই ব্যাপারগুলো আমাদের স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেবে। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে, যাঁরা সন্দেহবাতিক, তাঁদের বার্ধক্য খুব দ্রুত আসে।
করণীয়
নিজের আচরণগত পরিবর্তনে চিন্তিত বা হতাশাগ্রস্ত হবেন না। মনে রাখবেন, যাঁরা নিজের সমস্যা ধরতে পারেন, তাঁদের সমস্যার ৮০ ভাগ সমাধান সেখানেই হয়ে যায়। অস্থির হবেন না। সময় নিন। শান্ত হয়ে বসুন। এবার ঠান্ডা মাথায় ভাবুন, কেন আপনি সন্দেহ করছেন। এর সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা জড়িত কি না। সেই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, আপনার জীবনে তাঁদের গুরুত্ব কতটুকু।
প্রথমে বুঝতে হবে—এটা হেলদি সন্দেহ, নাকি আনহেলদি। প্রথমে আইডেনটিফাই করতে হবে, এই যে সন্দেহ করছেন, তা আপনার ও আপনার সঙ্গীর জন্য ভালো না খারাপ। কারও ক্ষতি হবে কি না। কারণ, থাকলে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সমাধানের পথে এগোতে হবে। আর যদি তা না হয়, তাহলে অহেতুক তা মানসিক চাপ বাড়াবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব মানসিক চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক ওষুধ দেওয়ার আগে উচিত হবে সাইকোথেরাপি নেওয়া। ঠিক কোথায় কোথায় সমস্যা, তার পরতে পরতে ছাড়িয়ে নিয়ে গোড়ার সমস্যায় নজর দিতে হবে।
একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে—সঙ্গী যে শুধু শুধুই সন্দেহ করছেন, তা নয়; বরং এই অনুভূতির কারণে তাঁর নিজেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই এই সময়ে তাঁকেও ভীষণ ধৈর্য ধরতে হবে এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রথম কিছুদিন ধৈর্য ধরে শোনার পর সন্দেহবাতিক ব্যক্তি যখন বুঝতে পারবেন, পাশের মানুষটি তাঁকে সাহায্যের চেষ্টা করছেন, তখন তিনি ভরসা খুঁজে পাবেন। এটা সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার ,ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ।
তুমি কি আমাকে সন্দেহ করো? এই বাক্যেই একটা নেতিবাচক সুর রয়েছে। সন্দেহ করা আসলেই কি নেতিবাচক বা খারাপ কিছু? উত্তরে প্রথমেই বলতে হবে, যিনি সন্দেহ করছেন তিনি নিজেও কষ্ট পাচ্ছেন। তবে সন্দেহ সব সময়ই নেতিবাচক নয়। ইতিবাচকও হতে পারে। ইতিবাচক সন্দেহ সম্পর্কের ক্ষতি করে না। অন্যদিকে নেতিবাচক সন্দেহের কারণে ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি তো হয়-ই, পাশাপাশি আশপাশের কাছের মানুষেরও স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়।
ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক
সন্দেহবাতিকগ্রস্ততা দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটা হচ্ছে আক্রান্ত অবস্থা ও অন্যটি স্বাস্থ্যকর। এককথায়, একটা স্বাস্থ্যকর সন্দেহ আরেকটা অস্বাস্থ্যকর। স্বাস্থ্যকর সন্দেহ হচ্ছে নিজেকে বা কাছের মানুষকে ভালো ও নিরাপদে রাখার জন্য। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি, ছোট ভাইকে টাকা দিলে সে নেশা করতে পারে। এটা ভেবে তাকে টাকা না দেওয়াটা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর সন্দেহ। কিন্তু এমন যদি হয়, তার নেশাগ্রস্ত হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তারপরও তাকে নানাভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে, তখন সেটা পারসোনালিটি ডিসঅর্ডার। অর্থাৎ ব্যক্তির নিজের সমস্যা।
সন্দেহ সাংঘাতিকভাবে অসুস্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। যখন এটা হয়, তখন এটা ডিসঅর্ডারে রূপ নেয়। ফলে এই পর্যায়ে যাওয়ার পর এই ব্যক্তির আশপাশে পরিবার-পরিজন সবার জীবনেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে পরীক্ষা করার প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে সাইকোথেরাপি নিতে হবে।
নেতিবাচক সন্দেহের পর শারীরিক ক্ষতি
সন্দেহের ফলে শরীরে কর্টিসল নামে একটি হরমোন নিঃসরণ হয়। এই হরমোন হাই ব্লাডপ্রেশারের মতো সিম্পটম তৈরি করতে পারে। ঘাম হবে, শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি দ্রুত হবে। এই ব্যাপারগুলো আমাদের স্ট্রেস লেভেল বাড়িয়ে দেবে। সবচেয়ে বড় আশঙ্কা হচ্ছে, যাঁরা সন্দেহবাতিক, তাঁদের বার্ধক্য খুব দ্রুত আসে।
করণীয়
নিজের আচরণগত পরিবর্তনে চিন্তিত বা হতাশাগ্রস্ত হবেন না। মনে রাখবেন, যাঁরা নিজের সমস্যা ধরতে পারেন, তাঁদের সমস্যার ৮০ ভাগ সমাধান সেখানেই হয়ে যায়। অস্থির হবেন না। সময় নিন। শান্ত হয়ে বসুন। এবার ঠান্ডা মাথায় ভাবুন, কেন আপনি সন্দেহ করছেন। এর সঙ্গে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা জড়িত কি না। সেই ঘটনার সঙ্গে যাঁরা জড়িত, আপনার জীবনে তাঁদের গুরুত্ব কতটুকু।
প্রথমে বুঝতে হবে—এটা হেলদি সন্দেহ, নাকি আনহেলদি। প্রথমে আইডেনটিফাই করতে হবে, এই যে সন্দেহ করছেন, তা আপনার ও আপনার সঙ্গীর জন্য ভালো না খারাপ। কারও ক্ষতি হবে কি না। কারণ, থাকলে সেগুলো বিশ্লেষণ করে সমাধানের পথে এগোতে হবে। আর যদি তা না হয়, তাহলে অহেতুক তা মানসিক চাপ বাড়াবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব মানসিক চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক ওষুধ দেওয়ার আগে উচিত হবে সাইকোথেরাপি নেওয়া। ঠিক কোথায় কোথায় সমস্যা, তার পরতে পরতে ছাড়িয়ে নিয়ে গোড়ার সমস্যায় নজর দিতে হবে।
একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে—সঙ্গী যে শুধু শুধুই সন্দেহ করছেন, তা নয়; বরং এই অনুভূতির কারণে তাঁর নিজেরও কষ্ট হচ্ছে। তাই এই সময়ে তাঁকেও ভীষণ ধৈর্য ধরতে হবে এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। প্রথম কিছুদিন ধৈর্য ধরে শোনার পর সন্দেহবাতিক ব্যক্তি যখন বুঝতে পারবেন, পাশের মানুষটি তাঁকে সাহায্যের চেষ্টা করছেন, তখন তিনি ভরসা খুঁজে পাবেন। এটা সম্পর্ক আরও মজবুত করবে।
লেখক: বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র্যাকটিশনার ,ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ।
দেশে মস্তিষ্কের ক্ষয়জনিত রোগ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্তদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ নারী। এই রোগটি ধারাবাহিকভাবে বেড়েই চলছে। অথচ তা নিয়ে তেমন উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। সামাজিকভাবে সচেতনতা গড়ে তুলতে না পারলে রোগটির বিস্তার আরও ভয়াবহ হতে পারে।
৯ ঘণ্টা আগেরোগে-শোকে মানুষকে প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু ওষুধ খেতে হয়। নিত্যপণ্যের এই ঊর্ধ্বগতির বাজারে যেখানে সাধারণ মানুষের তিনবেলা আহারের জোগান দেওয়াই কষ্টকর, সেখানে জীবন রক্ষার জন্য দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে ওধুষ কিনতে গিয়ে জীবন আরও ওষ্ঠাগত। দেশে এখন নিম্নআয়ের ৪০ শতাংশ মানুষের মোট আয়ের ২০ শতাংশ খরচ হচ্ছে ওষুধ কিনতেই।
২ দিন আগেদেশে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা না থাকায় ও ডাক্তারের ওপর আস্থা না থাকায় বিদেশে চিকিৎসা নিতে প্রতিবছর দেশের মানুষ ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। স্বাস্থ্যেসেবার উন্নয়ন না হলে এর পরিমাণ দিন দিন আরও বাড়বে।
২ দিন আগেআমাদের দেশে শীত উপভোগ্য মৌসুম। কিন্তু অনেকের ঠান্ডা, কাশি, জ্বর, গলাব্যথা, অ্যালার্জির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা যাদের আছে, তাদের এই মৌসুমে কষ্ট বেড়ে যায়।
৩ দিন আগে