এমপক্স ভাইরাস কী, কতটা ভয়ংকর

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৪৯
আপডেট : ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১৭: ০৫

আফ্রিকার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে এমপক্স ভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসটির বিষয়ে ইতিমধ্যে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও)। কিন্তু এমপক্স ভাইরাস আসলে কী; আর এটি কতটা ভয়ংকর?

অর্থোপক্স ভাইরাস নামে পরিচিত ভাইরাসদের একটি এটি। মানুষের পাশাপাশি হতে পারে অন্য প্রাণীদেরও। এতে ফ্লুর মতো উপসর্গের পাশাপাশি ত্বকে ফুসকুড়ি বা ফোসকা সৃষ্টি হতে পারে এতে।  গোটা বা স্ফীত অংশটিতে তরল বা পুঁজ দিয়ে ভরা থাকে। একপর্যায়ে ফেটে যায়।

বিশেষ করে পৃথিবী থেকে নির্মূল হওয়া গুটিবসন্ত, কাউপক্স এবং ভ্যাকসিনিয়ার কাছাকাছি ধরনের এই ভাইরাসটি। ১৯৫৮ সালে বানরের দেহে প্রথম এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। তখন এর নাম রাখা হয় মাংকি ভাইরাস। গবেষণাকাজে ব্যবহার করা ওই বানরগুলো তখন ছিল ডেনমার্কে। ১৯৭০ সালে প্রথম মানুষের শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া যায়, আফ্রিকার দেশ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোতে। তখন আক্রান্ত হয় ৯ মাসের একটি শিশু।

তবে মানুষ এবং অন্য প্রাণীদের এই রোগ হয় জানা যাওয়ার পর বানরের সঙ্গেই শুধু এটি সম্পর্কযুক্ত এ ধারণা বদলাতে ২০২২ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর নাম ‘এমপক্স’ করার প্রস্তাব করে।

এবারও ভাইরাসটি ছড়িয়েছে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো থেকে। এ বছর এ ভাইরাসের প্রাথমিক প্রাদুর্ভাবের সময় কমপক্ষে ৪৫০ জনের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আফ্রিকার ১৩টি দেশে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে এবং এর নতুন রূপটি আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত দুই বছরের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো এই ভাইরাসের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।

এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রেয়েসুস বলেন, ‘আজ জরুরি কমিটির বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক উদ্বেগের কারণে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই পরামর্শ আমি গ্রহণ করেছি।’

এই সংক্রামক ভাইরাস এখন মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসের নতুন রূপটি যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এর উচ্চ মৃত্যুহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বলেছেন, আফ্রিকা এবং এর বাইরে আরও দ্রুত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই উদ্বেগজনক। এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

জানা গেছে, আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এমপক্স ছড়ায়। এটি সংগম, ত্বকের সংস্পর্শ, কথা বলা বা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রভাব সামান্য দেখা গেলেও মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া ১০০ জনের মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়।

চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত কঙ্গোতে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ১৩ হাজার ৭০০ মানুষ। বুরুন্ডি, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকান, কেনিয়া ও রুয়ান্ডাতেও এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।

এমপক্সের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে যথা—ক্লেড-১ এবং ক্লেড-২। এর আগে, ২০২২ সালে এমপক্স পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি ঘোষণার সময় বলা হয়েছিল, সেবারের সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে হালকা ক্লেড-২ ছিল। এবার অনেক বেশি মারাত্মক ক্লেড-১ ধরনটি ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রাদুর্ভাবের মধ্যে অসুস্থ হওয়া ১০ শতাংশ মানুষ মারা গেছে। এই ভাইরাসটির আরেকটি বড় সমস্যা হলো এটির থেকে রক্ষা করবে এমন কোনো প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি।

গত বছরের সেপ্টেম্বরের দিকে ভাইরাসটির ধরনে পরিবর্তন আসে। মিউটেশনের ফলে ক্লেড ১বি নামক একটি ধরন সৃষ্টি ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। এই নতুন রূপটিকে একজন বিজ্ঞানী ‘এ পর্যন্ত সবচেয়ে বিপজ্জনক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার আফ্রিকা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের বিজ্ঞানীরা জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। 

সূত্র: আল জাজিরা, বিবিসি

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত