ঘুমের ওষুধ সমাধান নয়

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৮: ৩০
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৯: ৫৬

মানসিক সমস্যা

প্রশ্ন

আমি একজন গৃহিণী। বয়স ২৬ বছর। ইদানীং যে সমস্যাটা হচ্ছে, কোনো কারণে রেগে গেলে উত্তেজনা কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। অত্যন্ত চেঁচামেচি করতে থাকি। হাতের কাছের জিনিসপত্র ভাঙচুর করি। কখনো কখনো নিজের শরীরেও আঘাত করি। যখন এসব করি তখন কোনো বোধই কাজ করে না। কিন্তু পরে অপরাধবোধ হয়। কারণ, আমি খুবই শান্ত প্রকৃতির মানুষ। আমার সঙ্গে এসব যায় না। আমি অনেকবার নিজের সঙ্গে সমঝোতায় এসেছি, যার যা মনে হয় করুক আমি উত্তেজিত হব না, নিজেকে আঘাত করব না, ভাঙচুর করব না। কিন্তু পারছি না। মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হলে ঘুমের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। এটাও ঠিক না, সেটা বুঝি। কিন্তু পারছি না। সাহায্য প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, চট্টগ্রাম

আমরা যখন একই কাজ বারবার করতে থাকি এবং করার পরে মনে হয়, এটা কেন করলাম, এই জায়গাটাকে আমরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে বলি গেম। বলা হয়, শতকরা ৯৯ জন মানুষ শতকরা ৯৯ ভাগ সময় অসচেতনভাবে খেলেন। কখনো কখনো অন্যদের সঙ্গে, কখনোবা নিজের সঙ্গে।

আমি আপনাকে একটু চিন্তা করতে বলব কয়েকটি ধাপে।

প্রথম ধাপ: কোন কোন কারণ আপনাকে রাগিয়ে দিচ্ছে সেটা চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে লিখে রাখুন।

দ্বিতীয় ধাপ: এর মধ্যে কোনটা আসলেই রাগ করার মতো আর কোনটাতে অসচেতনভাবে রাগ করছেন সেটা খুঁজে বের করুন। রাগ একটি সুস্থ অনুভূতি, যদি সেটা যৌক্তিক কারণে হয়। কাজেই যেগুলো যৌক্তিক কারণ, সেগুলোকে অস্বীকার করার প্রয়োজন নেই।

তৃতীয় ধাপ: অসচেতনভাবে একই আচরণের চর্বিতচর্বণ করে যে রাগগুলো করছেন, সেগুলো ১, ২, ৩ এভাবে পয়েন্ট করে একটা কাগজে লিখুন।

চতুর্থ ধাপ: এবার কী কী বিকল্প আচরণ আগের আচরণগুলোর পরিবর্তে করতে পারেন সেটা চিন্তা করুন।

পঞ্চম ধাপ: বিকল্প আচরণগুলো করুন, প্রয়োজনে নতুন নতুন বিকল্প আচরণ খুঁজে বের করুন। এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন।

আপনার মধ্যে যেহেতু নিজেকে আঘাত করার একটা প্রবণতা তৈরি হয়েছে, আমি মনে করি, একটু পেশাগত সাহায্য নিলে আপনার জন্য সুবিধা হবে। ইদানীং অনলাইনেও কাউন্সেলিং হয়। কেমন থাকবেন জানাবেন।

অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহ্‌রিয়া

চিকিৎসক ও সাইকোথেরাপি প্র‍্যাকটিশনার, ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার, ঢাকা

স্বাস্থ্য সমস্যা

প্রশ্ন

আমার বয়স ১৬ বছর। আমি দশম শ্রেণিতে পড়ি। ৩-৪ মাস থেকে আমার বুকের বাম পাশে চিকন একটা ব্যথা অনুভূত হয়, বুক ধড়ফড় করে। মাঝে মাঝে ব্যথাটা বাম হাত পর্যন্ত অবশ করে ফেলে। দুই মাস যাবৎ এত বেশি ব্যথা হয়, যদি কোচিংয়ে সামান্য কোনো পরীক্ষা থাকে তাতেই আমার হার্টবিট অনেক বেড়ে যায়। আমি অস্থির হয়ে পড়ি। এই অস্থিরতার কারণে আমি অনেক জানা জিনিসও গুলিয়ে ফেলি। আমি চিকিৎসকের পরামর্শে প্রতিদিন ইনডেভার ১০ গ্রাম ও আমিটিপ ১০ গ্রাম নামের ওষুধ খাই। কিন্তু কোনো একদিন ওষুধ খেতে ভুলে গেলে আমার আবারও আগের মতো হার্টবিট বেড়ে যায় এবং আমি কোনো কাজ বা পড়ার আগ্রহ পাই না। মনোবল হারিয়ে ফেলি।

এখন আমার কী করা উচিত?

মৃত্তিকা চৌধুরী, পঞ্চগড়

আপনার যে সমস্যা হচ্ছে তার জন্য থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা আগে দেখে নেওয়া উচিত। অনেক সময় সে হরমোনের মাত্রার তারতম্যের জন্য এমন লক্ষণ দেখা যায়। আর সেটা ঠিক থাকলে আপনাকে জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। দুশ্চিন্তা বা মানসিক চাপ নেওয়া যাবে না। প্রতিদিন পরিমিত ঘুম, মেডিটেশন বা ব্যায়াম করার অভ্যাস করলে ভালো হবে। এতেও কাজ না হলে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

ডা. অদিতি সরকার

চিকিৎসক, সহকারী সার্জন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কেশবপুর, যশোর

মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে চিঠি ও ই-মেইলের মাধ্যমে প্রশ্ন পাঠাতে পারেন আমাদের কাছে।

চিঠি পাঠানোর ঠিকানা
বিভাগীয় সম্পাদক
আজকের জীবন 
(জেনে নিই, ভালো থাকি)
আজকের পত্রিকা
বাড়ি-৮, সড়ক-২, ব্লক-সি,
বনশ্রী, রামপুরা, ঢাকা

ই-মেইল: [email protected]

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত