গবেষণার ফল পেতে সার্কে ক্যানসার প্রতিরোধ কর্মসূচিতে জোর দেওয়া জরুরি: ল্যানসেটের প্রতিবেদন

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩: ২৯
Thumbnail image
সার্কভুক্ত দেশগুলোতে (২০১৯–২১) জরায়ুমুখ ক্যানসারের (শনাক্ত, মৃত্যুহার এবং পরীক্ষা) চিত্র। ছবি: রিসার্চগেট

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে বিশ্বের ২৪ শতাংশ মানুষের বাস। বিশ্বব্যাপী ক্যানসার রোগীর ৯ শতাংশই এই অঞ্চলের। আর এখানে ক্যানসারে মৃত্যুর হার ১২ শতাংশ। সার্ক অঞ্চলে বিশেষভাবে গ্রামীণ এবং সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় ক্যানসার নির্ণয় এবং চিকিৎসা সুবিধাসহ স্বাস্থ্যসেবা পরিকাঠামো উন্নত করার জন্য অবিলম্বে বিনিয়োগ জরুরি বলে মত দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।

বিজ্ঞান সাময়িকী ল্যানসেট অনকোলজির একটি নতুন চার–পত্রের সিরিজে সার্কে জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনের লেখকেরা তাঁদের গবেষণার ফলাফলগুলো ব্যাপক ক্লিনিক্যাল প্রয়োগে রূপান্তর করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার করতেই সার্কে (আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা) সমন্বিত ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি জোরদার করার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ভারতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন স্কুলের রেডিয়েশন অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম সাইফুল হক, ক্যানসারের বাড়তে থাকা বোঝা এবং গবেষণা ও বাস্তবায়নের তাৎপর্যের মধ্যে অসামঞ্জস্য নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি এই প্রতিবেদনের লেখকদের মধ্যে একজন।

একটি ই–মেইল সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক সাইফুল হক বলেন, ‘দেশে ক্যানসারের ধরন জেনেটিক, জীবনধারা এবং পরিবেশগত পার্থক্যের কারণে অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। এসব বিষয় বিভিন্ন দেশের ফলাফলগুলোকে সাধারণীকরণ কঠিন করে তোলে। এ ছাড়া, ক্যানসার চিকিৎসা কেন্দ্র এবং গবেষণা অবকাঠামোগুলো শহুরে এলাকায় কেন্দ্রীভূত। ফলে গ্রামীণ এলাকাগুলো সুবিধাবঞ্চিত থাকে।’

তাঁর মতে, এসব দেশকে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা মেটাতে এবং নীতিনির্ধারকদের কাছে ফলাফল প্রচারের লক্ষ্যে গবেষণার ওপর মনোযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, ‘এই পদ্ধতিটি রোগীর সেবার মান উন্নত করার জন্য তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দেবে।’ স্নাতক পর্যায় থেকেই গবেষক এবং চিকিৎসকদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা, সহযোগিতামূলক গবেষণাকে উৎসাহিত করা, ক্যানসার গবেষণার পক্ষে প্রচারণা চালানো এবং শক্তিশালী গবেষণা কর্মসূচির জন্য দাতব্য তহবিল সংগ্রহ করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন অধ্যাপক সাইফুল।

বাস্তব চিত্র তুলে ধরে অধ্যাপক সাইফুল বলেন, ব্যক্তিগত স্তরে, সার্কভুক্ত দেশের চিকিৎসকেরা প্রায়ই অতিরিক্ত কাজের চাপে থাকেন এবং তাঁদের আনুষ্ঠানিক গবেষণা প্রশিক্ষণের অভাব থাকে।

এ ক্ষেত্রে তাঁর পরামর্শ হলো, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা অনকোলজিতে গবেষণা পদ্ধতির উন্নয়ন (আইসিআরএমডিও) এবং টাটা মেমোরিয়াল সেন্টারের মতো সংস্থাগুলোর মাধ্যমে ক্লিনিক্যাল গবেষণা পদ্ধতির ওপর স্বল্পমেয়াদি কোর্স বা কর্মশালার ব্যবস্থা করে প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষকদের দক্ষতা উন্নত করা যেতে পারে।

শ্রী রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ–এর ডিন (গবেষণা) অধ্যাপক কল্যাণা বালাকৃষ্ণন দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, সার্ক অঞ্চলে স্থানীয়ভাবে প্রাসঙ্গিক গবেষণা পরিচালনার সক্ষমতার অভাব কেবল ক্যানসার বা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।

অধ্যাপক বালাকৃষ্ণন অবশ্য এই গবেষণার সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।

তিনি বলেন, ক্যানসার বিশেষভাবে চ্যালেঞ্জিং কারণ, আমরা কেবল প্রকৃত সংক্রমণের হার বুঝতে রেজিস্ট্রি প্রচেষ্টাগুলো বাড়ানোর কাজ শুরু করেছি। ক্যানসার চিকিৎসা ও সেবার পরিকাঠামো উন্নত করার যেকোনো উদ্যোগকে একসঙ্গে ঝুঁকি উপাদানের মানচিত্রায়ন, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং থেরাপিউটিক রেজিমেনগুলোর ওপরও গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে, আমাদের জনসংখ্যার জন্য সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবার সুযোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য আরও বাড়ার ঝুঁকি থাকবে।

অবশেষে, কার্যকর স্ক্রিনিং (পরীক্ষা) এবং রোগ ব্যবস্থাপনা প্রোটোকলের জন্য প্রামাণিক তথ্য–উপাত্তের ফাঁকগুলো বন্ধ করতে মহামারি–সংক্রান্ত বিশ্লেষণ সক্ষমতা গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন অধ্যাপক বালাকৃষ্ণন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

যৌন সম্পর্কের পর বিয়েতে অস্বীকৃতি: আজিজুল হক কলেজের শিক্ষক নেতাকে বদলি

সাইফ আলী খানের পরিবারের ১৫ হাজার কোটি রুপির সম্পত্তি যাচ্ছে ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রণে

সিএসইতে লেনদেনের সময় পরিবর্তন, শেয়ারবাজারে কারসাজির আশঙ্কা

ওবায়দুর হত্যা: গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যানকে বিশেষ অতিথি করে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণপত্র

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছে ভারত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত