লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় ২০০০ জনেরও বেশি প্রাণহানির আশঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭: ৫১
আপডেট : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৯: ৪৮

ভূমধ্যসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ডেনিয়েলের আঘাতে লিবিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ বন্যার। আর এই বন্যায় ২ হাজররও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন দেশটির নেতারা। নিখোঁজের সংখ্যা ৫ থেকে ৬ হাজার। বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ডেনিয়েলের কারণে লিবিয়ার উপকূলীয় অঞ্চলের অধিকাংশ শহরই বিধ্বস্ত হয়েছে। শহররক্ষা বাঁধ, রাস্তাঘাট, বাড়িঘরসহ অধিকাংশ স্থাপনাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপকূলীয় শহর দেরনা। শহরটিতে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব এতটাই বেশি ছিল যে, ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরপরই সেখানকার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনুমান করা সম্ভব হয়নি। 

এপিকে মুঠোফোনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লিবিয়ার পূর্বাংশের প্রধানমন্ত্রী ওসামা হামাদ জানান, ‘দেরনায় ২ হাজার জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে বলে আশঙ্কা করছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘একই শহরে আরও কয়েক হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।’ দেরনাকে ‘দুর্যোগকবলিত’ ঘোষণা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। 

লিবিয়ার পূর্বাংশের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ আল-মসমারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘দেরনায় প্রাণহানির সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই এলাকায় ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি।’ 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, দেশটির বেনগাজি, সোসি, আল-বায়দা, আল-মারজ এবং দেরনা শহরে ঘূর্ণিঝড় ডেনিয়েলের আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় তলিয়ে যাওয়া গাড়ির ছাদে অনেক মানুষ আটকা পড়েছে। সোমবার টেলিফোনে রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেরনা শহরের বাসিন্দা আহমেদ মোহাম্মদ বলেন, ‘আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম, ঘুম ভাঙার পর দেখতে পাই বাড়িতে পানি। আমরা ঘরের ভেতরে রয়েছি এবং বের হওয়ার চেষ্টা করছি।’ 

পূর্ব লিবিয়ার আলমোস্তকবাল টেলিভিশনে সম্প্রচারিত ফুটেজ দেখা যায়, প্রবল বন্যায় যানবাহন ভেসে যাচ্ছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, উপকূলীয় শহর দেরনায় পানির স্তর বিপৎসীমার তিন মিটার (১০ ফুট) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলভিত্তিক সংসদ ঘূর্ণিঝড় ও বন্যায় প্রাণহানির ঘটনায় দেশে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে, ত্রিপোলির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবদুলহামিদ আল-বেইবাহও ক্ষতিগ্রস্ত সব শহরে তিন দিনের শোক ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে তাঁদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলকে ‘দুর্যোগকবলিত’ এলাকা বলে অভিহিত করেছেন। 

দেশটির প্রধান চারটি তেলবন্দর রাস লানুফ, জুয়েতিনা, ব্রেগা ও এস সিদ্রা শনিবার সন্ধ্যা থেকে তিন দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে সেখানকার দুই তেল প্রকৌশলী রয়টার্সকে জানিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। স্কুল ও দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছে এবং কারফিউ জারি করেছে। 

উল্লেখ্য, ২০১১ সালে বিদেশি হস্তক্ষেপের মাধ্যমে লিবিয়ার তৎকালীন শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফিকে অপসারণ এবং হত্যার পর থেকেই দেশটিতে কখনোই কোনো একক সরকার ছিল না। দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে। দেশটির পূর্ব ও পশ্চিমাংশে বর্তমানে পৃথক দুটি সরকার রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত