Ajker Patrika

নাইজারে অভ্যুত্থান: ফরাসি সেনা ও রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারে মাখোঁর নির্দেশ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ২২
নাইজারে অভ্যুত্থান: ফরাসি সেনা ও রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহারে মাখোঁর নির্দেশ

নাইজারে অভ্যুত্থানের পর দেশটি থেকে ফরাসি সেনা এবং রাষ্ট্রদূতকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ‍ইমানুয়েল মাখোঁ। তিনি বলেছেন, ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আমাদের রাষ্ট্রদূত এবং কয়েকজন কূটনীতিক ফ্রান্সে ফিরে আসবেন।’

মাখোঁ আরও বলেছেন, ‘নাইজারে ফরাসি সামরিক সহযোগিতার সমাপ্তি টানা হচ্ছে এবং কয়েক মাসের মধ্যে সৈন্যরাও দেশটি ত্যাগ করবে।’

গত জুলাইয়ে নাইজারের ক্ষমতা দখলকারী সামরিক জান্তা ফ্রান্সের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। জান্তা এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘এই রোববার সার্বভৌমত্বের দিকে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল নাইজার।’

পশ্চিম আফ্রিকার স্থলবেষ্টিত দেশ নাইজারে এখন প্রায় দেড় হাজার ফরাসি সৈন্য অবস্থান করছেন। ফরাসি সৈন্যদের উপস্থিতির প্রতিবাদে রাজধানী নিয়ামেতে কয়েক মাস ধরেই নিয়মিতভাবে বিক্ষোভ হয়েছে। তারই ফলে সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিল ফ্রান্স।

বৃহত্তর সাহেল অঞ্চলে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ফ্রান্সের অভিযান এবং সেখানে প্যারিসের প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টায় সৈন্য প্রত্যাহারের পদক্ষেপটিকে বড় এক আঘাত হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ফ্রান্সের টিএফওয়ান এবং ফ্রান্স টু চ্যানেলের কাছে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ বলেছেন, ‘অভ্যুত্থানকারীদের কাছে জিম্মি হবে না ফ্রান্স।’

নাইজারের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে দেশটির কারাগারে রেখেছে অভ্যুত্থানকারীরা। মোহাম্মদ বাজুমকে এখনো দেশটির ‘একমাত্র বৈধ কর্তৃত্ব’ এবং ‘জিম্মি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মাখোঁ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘জাতিগত বিরোধের নিষ্পত্তি ঘটাতে এবং রাজনৈতিক কাপুরুষতার বিরুদ্ধে তিনি (মোহাম্মদ বাজুম) কিছু সাহসী সংস্কার চালিয়েছিলেন বলেই এই অভ্যুত্থানের লক্ষ্যবস্তু হয়েছেন।’

পশ্চিম আফ্রিকার বেশ কয়েকটি সাবেক ফরাসি উপনিবেশের মধ্যে একটি হচ্ছে নাইজার; যেখানে সেই দেশের সামরিক বাহিনী সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করেছে। বুর্কিনা ফাসো, গিনি, মালি ও চাদের পথ অনুসরণ করেছে নাইজার। পশ্চিম আফ্রিকায় সর্বশেষ অভ্যুত্থান হয়েছিল গত আগস্টে, গ্যাবনে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই অঞ্চলে ফ্রান্সবিরোধী মনোভাব বেড়েছে অনেক বেশি। স্থানীয় অনেক রাজনীতিবিদ প্যারিসের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে নব্য ///ঔপনিবেশিক নীতি পরিচালনার অভিযোগ তুলেছে, যা অস্বীকার করেছে ফ্রান্স।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ‍ইমানুয়েল মাখোঁ। ছবি: এএফপিসাহেলে ভাগনার গ্রুপের ক্রমেই বাড়তে থাকা প্রভাবও বাড়িয়েছে পশ্চিমাদের মাথাব্যথা। পশ্চিমাদের অভিযোগ হচ্ছে, ভাগনার গ্রুপ এই অঞ্চলে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং কিছু দেশে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছে।

ফ্রান্সের সমর্থিত আঞ্চলিক অর্থনৈতিক জোট ইকোওয়াস নাইজারের ক্ষমতায় মোহাম্মদ বাজুমকে পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়ে অভ্যুত্থানকারীদের প্রতি হুমকিও দিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তা কার্যকরের কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

গত ২৬ জুলাই মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে অভ্যুত্থানকারীরা। এরপর গত আগস্টে দেশটিতে ফরাসি রাষ্ট্রদূত সিলভেইন ইত্তেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নাইজার ত্যাগ করতে বলে সামরিক নেতারা। কিন্তু প্যারিস নাইজারের সামরিক সরকারকে বৈধতা দেয়নি। সিলভেইন ইত্তেও নাইজার ছেড়ে যাননি।

মাখোঁর বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা আগে নাইজারের আকাশপথে ফরাসি এয়ারলাইনসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির অভ্যুত্থানকারী নেতারা। আঞ্চলিক এয়ার সেফটি অর্গানাইজেশন (এএসইসিএনএ) বলেছে, নাইজারের আকাশসীমা ফরাসি বিমান বা ফ্রান্সের চার্টার্ড বিমান যেমন এয়ার ফ্রান্স ব্যতীত সব জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক ফ্লাইটের জন্য উন্মুক্ত। পূর্বানুমতি না পাওয়া পর্যন্ত নাইজারের আকাশপথ সব সামরিক এবং অন্য বিশেষ ফ্লাইটের জন্য বন্ধ থাকবে বলে এএসইসিএনএর বার্তায় বলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এএফপিকে এয়ার ফ্রান্স জানিয়েছে, নাইজারের আকাশসীমার ওপর দিয়ে তাদের কোনো বিমান এমনিতেও উড়ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাসা ভাড়ার টাকা নেই, অফিসের টয়লেটেই থাকছেন চীনা তরুণী

ঈদের মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম না বলায় ইমামকে হেনস্তা, চাকরিচ্যুতির হুমকি

ঈদগাহে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান: আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

কোম্পানি দেউলিয়া, দেড় কোটি মানুষের ডিএনএ ডেটার এখন কী হবে

ঈদের নামাজের মধ্যে ইমামকে হত্যাচেষ্টা, চাপাতিসহ যুবক আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত