Ajker Patrika

কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে সংঘর্ষে দুই মাসে নিহত ৭ হাজারে বেশি: প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
কঙ্গোর মাসিসি শহরের কাছে উপস্থিত দেশটির সেনারা। এম-২৩ বিদ্রোহীদের আক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তুত তারা। ছবিটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে তোলা। ছবি: সিনহুয়া
কঙ্গোর মাসিসি শহরের কাছে উপস্থিত দেশটির সেনারা। এম-২৩ বিদ্রোহীদের আক্রমণ ঠেকাতে প্রস্তুত তারা। ছবিটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে তোলা। ছবি: সিনহুয়া

আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোর (ডিআরসি) পূর্বাঞ্চলে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই মাসে নিহত হয়েছেন ৭ হাজারের বেশি মানুষ। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জুডিথ সুমিনওয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

গতকাল সোমবার সুইজারল্যান্ডের জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে বক্তব্য দেওয়ার সময় সুমিনওয়া সতর্ক করে বলেন, ‘পূর্ব ডিআরসির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ এ সময় গেল মাস থেকে পূর্ব কঙ্গোতে চলমান সংঘর্ষে ৭ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানান তিনি। নিহতদের মধ্যে ‘উল্লেখযোগ্য সংখ্যক’ বেসামরিক নাগরিক বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী জানান, শুধুমাত্র উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমায় প্রায় ৩ হাজার জন নিহত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আড়াই হাজারের বেশি মরদেহ পরিচয় শনাক্ত না করেই দাফন করা হয়েছে, আর ১ হাজার ৫০০ মরদেহ এখনো মর্গে পড়ে আছে। তিনি বলেন, ‘এই নিহতদের মধ্যে বিশাল সংখ্যকই বেসামরিক নাগরিক।’

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে প্রতিবেশী রুয়ান্ডা সমর্থিত এম-২৩ বিদ্রোহীগোষ্ঠী পূর্ব ডিআরসির বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করেছে। যার মধ্যে গোমা ও দক্ষিণ কিভু প্রদেশের রাজধানী বুকাভুর মতো গুরুত্বপূর্ণ শহর অন্তর্ভুক্ত। বিদ্রোহীদের এই দ্রুত অগ্রযাত্রা বিশ্বনেতাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করেছেন যে, এই সংঘাত ‘পুরো অঞ্চলকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যেতে পারে।’

তবে রুয়ান্ডা বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও সৈন্য সহায়তা দিচ্ছে বলে যে অভিযোগ ডিআরসি, জাতিসংঘ ও পশ্চিমা দেশগুলো করেছে তা কিগালি অস্বীকার করেছে। জেনেভায় দেওয়া ভাষণে সুমিনওয়া আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে পদক্ষেপ নিতে এবং রুয়ান্ডার বিরুদ্ধে ‘প্রতিরোধমূলক নিষেধাজ্ঞা’ আরোপের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সংঘাতের ফলে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি ঘটছে এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীটি নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এই সংঘর্ষের শিকার লাখ লাখ মানুষের আর্তনাদ ও কান্না বর্ণনা করা অসম্ভব।’

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদে গুতেরেসও কঙ্গোর পরিস্থিতিকে ‘নৃশংস সহিংসতার এক ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়’ বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ‘ডিআরসির সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা অবশ্যই সম্মান করা উচিত। আরও শহর পতনের ফলে আঞ্চলিক যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়ছে। অস্ত্রের ঝনঝনানি থামানোর এখনই সময়।’

প্রথমে গত মাসে গোমা দখলের পর বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে বুকাভুর নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ সংঘাত থেকে পালিয়ে পার্শ্ববর্তী বুরুন্ডিতে আশ্রয় নিয়েছে। পূর্ব কঙ্গোর বিপুল খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা শতাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে এম-২৩ সবচেয়ে শক্তিশালী। জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞদের মতে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে রুয়ান্ডার প্রায় ৪ হাজার সেনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত