Ajker Patrika

মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের কারণে জটিল হচ্ছে ত্রাণ কার্যক্রম

অনলাইন ডেস্ক
মিয়ানমারে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন। ছবি: সংগৃহীত
মিয়ানমারে গত শুক্রবারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন। ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীন হয়। এর পর থেকেই যুদ্ধ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশটিকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। গত শুক্রবার ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর গৃহযুদ্ধের কারণে ত্রাণ কার্যক্রম এখন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেনাবাহিনী অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করার পর এই সংঘাত শুরু হয়।

বার্তা সংস্থা এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হলো ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’ (এনইউজি)। তবে এই সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি গতকাল শনিবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা রোববার থেকে দুই সপ্তাহের জন্য একতরফা যুদ্ধবিরতি পালন করবে। তবে সেনা সরকারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সংঘাতে বাস্তুচ্যুত ৩০ লাখের বেশি মানুষের জন্য ত্রাণ সরবরাহে সেনাবাহিনী আগে থেকেই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছে। সমালোচকেরা বলছেন, সেনারা ত্রাণকে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহার করছে।

কারা জড়িত এই যুদ্ধে?

মিয়ানমারের সেনাবাহিনী স্বাধীনতার পর থেকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশটির শাসনক্ষমতায় রয়েছে। ২০২১ সালে সু চির দ্বিতীয় মেয়াদ শুরুর আগে সেনারা তাঁকে ও তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেতাদের কারাগারে পাঠায়। গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভ দমনে সেনার হাতে শত শত মানুষ নিহত হওয়ায় সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এনইউজি এই আন্দোলনের সমন্বয় করছে, যার সশস্ত্র শাখা ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। স্থানীয় সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে জোট বেঁধে তারা সেনাদের বিরুদ্ধে লড়ছে। অস্ত্র ও জনবলে পিছিয়ে থাকলেও তারা অনেক এলাকায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রস্তাব কী?

এনইউজি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পিডিএফ রোববার থেকে দুই সপ্তাহ আক্রমণাত্মক অভিযান বন্ধ রাখবে, তবে আত্মরক্ষার অধিকার বজায় থাকবে। তারা জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমে সহযোগিতা করবে। এমনকি সেনা নিয়ন্ত্রিত এলাকায়ও চিকিৎসক ও ত্রাণকর্মী পাঠাতে প্রস্তুত, যদি নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়।

যুদ্ধবিরতির তাৎপর্য কী?

পিডিএফ সাধারণত বড় ধরনের আক্রমণ চালায় না, বরং আত্মরক্ষা ও গেরিলা কৌশলে লড়াই করে। তাই এই যুদ্ধবিরতি মূলত প্রতীকী। তবে এর মাধ্যমে তারা ত্রাণ বিতরণে বাধাহীন প্রবেশের দাবিকে জোরালো করছে। সেনা সরকার বিরলভাবে বিদেশি ত্রাণ চেয়েছে, কিন্তু সমালোচকেরা সন্দেহ করছেন, তারা এটি ন্যায্যভাবে বিতরণ করবে না। ২০০৮ সালে সাইক্লোন নার্গিসে সেনারা প্রাথমিকভাবে বিদেশি সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিল, যাতে ১ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। ২০২৩ সালে সাইক্লোন মোচার সময়ও তাদের ত্রাণ প্রচেষ্টা ছিল ধীর গতির।

বিশ্বে এমন উদাহরণও রয়েছে যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর ত্রাণ কার্যক্রম শান্তি ফিরিয়ে এনেছে। ২০০৪ সালে ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশে সুনামির পর এমনটি ঘটেছিল। তবে মিয়ানমারে এই ভূমিকম্প কীভাবে সংঘাত প্রভাবিত করবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

নয়াদিল্লি হাসিনা আমলের দৃষ্টিভঙ্গিই ধরে রেখেছে: ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বৈঠক হচ্ছে

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত