
গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস নিয়ে ক্যাঁচাল নতুন নয়। এর প্রধান কারণ এ নিয়ে দেশে কোনো আইন নেই। এ ছাড়া সারা বছর যানজটে মানুষের এত কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়ার পরও গণপরিবহন কখনো শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে। আবার শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে গণপরিবহনের বদলে আলাদা পরিবহন ব্যবস্থাও আছে যুক্তরাজ্যের মতো কিছু দেশে। এ ক্ষেত্রে সরকারই এই পরিবহনের ব্যবস্থা করে, অথবা স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিভাবকের কাছ থেকে নির্দিষ্ট ফির বিনিময়ে পরিবহন রাখে অথবা স্থানীয় কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্পনসর করে।
ইদানীংকালে অবশ্য শিক্ষার্থীদের হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। যেমন, ব্রিটেনে শিক্ষার্থীকে তার বাড়ির কাছাকাছি স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় এবং হেঁটে যাতায়াত করতে উৎসাহিত করা হয়।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পরিবহন ব্যবস্থাটি দেশ ভেদে বিভিন্ন রকমের। যেমন:
সাধারণ গণপরিবহন
পাবলিক ট্রান্সপোর্ট (সরকারি পরিবহন) ব্যবহার করা কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য খুবই সাধারণ মাধ্যম। অস্ট্রেলিয়ার মতো কিছু দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ রুট এবং সময়সূচি রয়েছে। এ সময়টা একচেটিয়াভাবে রুটগুলো শুধু শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে। তবে এখনো পাবলিক ট্রান্সপোর্ট পরিষেবা নিতে হয় তাদের। কখনো অভিভাবক বা শিক্ষার্থীরা গণপরিবহনের টিকিট কেনার সময় টাকা ফেরত পান।
স্কুল বাস
দেশ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পরিবহনে বিশেষভাবে ডিজাইন করা স্কুল বাস ব্যবহার করা হয়। কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রের অনেক কাউন্টিতে বিশেষভাবে নির্মিত এবং সজ্জিত স্কুল বাস ব্যবহার করে। হলুদ রং করা বা বিভিন্ন ধরনের সতর্কবার্তা এবং সুরক্ষা ডিভাইস দিয়ে সজ্জিত থাকে এসব বাস। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে স্কুল বাসগুলো উত্তর আমেরিকার দেশগুলোর মতো অতটা বিশেষ নয়। এগুলো প্রায় সাধারণ বাসের মতোই হয়।
ব্যক্তিগত গাড়ি
অনেক দেশে পরিবারের প্রাইভেট কারে করে শিক্ষার্থীরা আসা-যাওয়া করে। অভিভাবকেরাই এ কাজটি করেন। তবে গণপরিবহন বা স্কুল বাসের তুলনায় এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু দেশে শিক্ষার্থীরা গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়। বেশির ভাগ দেশে গাড়ি চালানোর ন্যূনতম বয়স ১৭ বা ১৮। অবশ্য কসোভোতে ১৪ বছর বয়সেই ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হয়।
হাঁটা
‘ওয়াক টু স্কুল’ ক্যাম্পেইন ইদানীং জনপ্রিয় হচ্ছে। প্রাপ্তবয়স্কদের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীদের দল বেঁধে স্কুলে যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়। এর জন্য আলাদা রুট বা লেন থাকতে পারে।
সাইক্লিং
ইউরোপের অনেক দেশে সাইকেল চালিয়ে স্কুলে যাওয়া বেশ জনপ্রিয়। স্কুলগুলোতে বিশাল বাইক শেড দেখলেই সেটি বোঝা যায়। বাইসাইকেল বা প্যাডেল স্কুটারের মতো মানবচালিত যানবাহনে শিক্ষার্থীরা বড়দের তত্ত্বাবধানে দল বেঁধে যাতায়াত করে থাকে।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাতায়াত ব্যবস্থার নিরাপত্তা নিয়ে বেশ কিছু জরিপ হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সড়ক নিরাপত্তা পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে ১৯৯৪ সালের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে,
বাসে যাতায়াত করলে-
পারিবারিক গাড়িতে যাতায়াতের চেয়ে গুরুতর আঘাত বা মৃত্যুর আশঙ্কা সাত গুণ কম; হাঁটার চেয়ে একই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ৩১ গুণ কম; সাইকেল চালানোর তুলনায় ২২৮ গুণ কম ঝুঁকি থাকে।
ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের (যুক্তরাষ্ট্র) কর্মকর্তারা বলছেন, সিট বেল্ট না লাগানো থাকলেও স্কুল বাসগুলো অন্যান্য গাড়ির চেয়ে বেশি নিরাপদ।
বিভিন্ন দেশে শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা-
আর্জেন্টিনা
আর্জেন্টিনায় বেশির ভাগ শিক্ষার্থী হয় হেঁটে স্কুলে যায়, নয়তো অভিভাবকের সঙ্গে অথবা নিয়মিত পাবলিক ট্রানজিটে যাতায়াত করে। অনেকে প্রতিটি শহরে সরকার নির্ধারিত বেসরকারি বাসে যাতায়াত করে। এসব বাস সাধারণত সাদা বা কমলা রঙের হয়। অভিভাবকেরা ওই বেসরকারি ভ্যান মালিককে মাসিক একটা ফি দেন। ভ্যানগুলোর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনো সম্পর্ক নেই। সাধারণত একই রুটে বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের বহন করে তারা।
অস্ট্রেলিয়া
অস্ট্রেলিয়ায় শহরতলির বাইরের বা গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী শিক্ষার্থীরা সাধারণত পাবলিক বাস এবং ট্রেন বা বেসরকারি বাস কোম্পানির বিশেষ রুটে যাতায়াত করে। শহরের অভ্যন্তরীণ এলাকার স্কুলছাত্ররা সরকারি মালিকানাধীন রুটের বাসে যাতায়াত করে। ছাত্ররা হয় একটি পাবলিক রুটের বাসে, অথবা একটি ‘স্কুল স্পেশাল’ পরিষেবাতে নেয়। কিছু বেসরকারি স্কুলের নিজস্ব বাস আছে। সাধারণত কোনো স্পনসর না পেলে স্কুল থেকেই এই সেবা দেওয়া হয়।
নিউ সাউথ ওয়েলসে স্কুল বাস পরিবহনকে ট্রেনের পরেই স্থল পরিবহনের মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ বলে ধরা হয়। কিন্ডারগার্টেন-২ গ্রেডের শিক্ষার্থীরা যেখানেই থাকুক না কেন বিনা মূল্যে যাতায়াতের সুবিধা পায়। এরপর ৩-৬ বছরের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার দূরে থাকে। উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিনা মূল্যে ভ্রমণ পায় যদি তারা ২ কিলোমিটার দূরে থাকে।
কানাডা
কানাডার শিক্ষার্থী পরিবহন ব্যবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মতোই। এখানেও তাদের জন্য রয়েছে হলুদ স্কুল বাস। কানাডীয় স্কুল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী পরিবহন পরিষেবার জন্য ঠিকাদার নিযুক্ত করে। এর জন্য অভিভাবকদের কোনো পয়সা দিতে হয় না। এখানে স্কুলবাসগুলো দেখতে একই রকম এবং সাধারণত একই কোম্পানির তৈরি।
ফিনল্যান্ড
ফিনল্যান্ডে যে সমস্ত শিক্ষার্থী নিকটতম স্কুল থেকে ৫ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে থাকে বা কোনো প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তারা বিনা ভাড়ায় বাস বা ট্যাক্সিতে যাতায়াত করতে পারে। এসব বাস এবং ট্যাক্সিগুলো সাধারণ পরিবহন হিসেবেই ব্যবহার করা হয়। সাধারণত স্থানীয় কোম্পানি এই পরিবহন পরিচালনা করে। যে বাসগুলো শুধু স্কুল বাসের জন্য সংরক্ষিত সেগুলোর সামনে এবং পেছনে ‘Koulukyyti/Skolskjuts’ চিহ্ন দেওয়া থাকে। শিক্ষার্থী পরিবহনে নিয়োজিত ট্যাক্সিগুলোর ছাদে একটি ত্রিভুজাকার চিহ্ন থাকে। এসব বাসের গতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ।
জার্মানি
কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া জার্মানিতে কোনো বিশেষ স্কুল বাস নেই। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট সময়সূচি প্রায়শই মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রয়োজনের সঙ্গে মিলিয়ে রাখা হয়। কিছু জার্মান রাজ্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট টিকিটের জন্য অর্থ ফেরতের ব্যবস্থা রেখেছে।
হংকং
হংকংয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে স্কুলে আনা নেওয়ার জন্য পরিবহন আছে। প্রতিটি পরিবহনে একজন আয়া থাকেন। সরকার-নিয়ন্ত্রিত যানবাহন এই পরিবহনগুলো নির্দিষ্ট রুটে চলে।
নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে, বৃহৎ পরিসরে ছাত্র পরিবহনের কোনো সংগঠিত রূপ নেই। শিশুকালে অভিভাবক আর হাইস্কুলে নিজেই বাইক চালিয়ে স্কুলে যায়। তবে কলেজে পড়ার সময় বিনা ভাড়ায় গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারে।
নিউজিল্যান্ড
নিউজিল্যান্ডে ঠিকাদার বা সাধারণ বাস কোম্পানির সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরিবহন ব্যবস্থা করা হয়। স্কুল পরিষেবার জন্য বাস কোম্পানিগুলোতে সাধারণত পুরোনো ট্রানজিট বাস বা কোচের বহর থাকে। সেগুলো বিভিন্ন সংকেত দিয়ে চিহ্নিত করা থাকে। গতি সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার।
এ দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (৫-১২ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের (১৩ বছর বয়সী) জন্য স্কুলের ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাস করলে পরিবহন পরিষেবা দেওয়া হয় না। এ দেশে বিনা ভাড়ার স্কুল বাস পরিষেবা ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে।
যুক্তরাজ্য
যুক্তরাজ্যে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী পরিবহন সাধারণ ট্রানজিট বাসের ওপর নির্ভরশীল। এই বাসগুলো স্কুলে যাতায়াতের জন্য ব্যবহার না করলে অন্য কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশির ভাগ শিশু স্থানীয় নির্ধারিত গণপরিবহন পরিষেবা ব্যবহার করে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই যুক্তরাজ্যে ডেডিকেটেড স্কুল পরিবহন পরিষেবা স্থানীয় বাস কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে দেওয়া হয়।
লন্ডন
গ্রেটার লন্ডনে অনেক স্কুল শিশু সাধারণ বাস পরিষেবা ব্যবহার করে স্কুলে যাতায়াত করে। অয়েস্টার কার্ড সিস্টেম ব্যবহার করে তারা বিনা মূল্যে ভ্রমণ করতে পারে।
তবে ইদানীং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। ফলে ক্রমেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা পরিবহনের ব্যবস্থা করার দাবি জোরদার হচ্ছে। উত্তর আমেরিকার স্টাইলের ‘হলুদ’ স্কুল বাস ‘ফার্স্ট স্টুডেন্ট ইউকে’ এবং ‘মাই বাস’ পরিষেবা চালু করা হচ্ছে।
হাঁটার পক্ষেও ব্যাপক প্রচারাভিযান চলছে। দাতব্য সংস্থা ‘লিভিং স্ট্রিটস’ এবং ‘ট্রাভেলওয়াইজ’ এই ক্যাম্পেইন জনপ্রিয় করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে ‘স্কুল বাস’ তৈরি করা হয়। প্রায় সব সময় বিনা ভাড়ায় শিক্ষার্থীদের এসব বাসে পরিবহন করা হয়। অভিভাবকদেরও এর জন্য কোনো ফি দিতে হয় না। নিকটতম স্থানীয় স্কুল ছাড়া সব স্কুলে শিক্ষার্থীরাই এই সুবিধা পায়।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর বিশেষ স্কুল বাসগুলোতে প্রায় ১ হাজার কোটি শিক্ষার্থী ভ্রমণ করে। স্কুল বাসগুলো কিছু স্কুল প্রশাসন কেনে অথবা ইজারা নেয়। কিছু প্রশাসন আবার ঠিকাদারদের মাধ্যমে এই পরিষেবা দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের শহরাঞ্চলে সাধারণ পাবলিক ট্রানজিট বাসের ব্যবহার ক্রমেই বাড়ছে। নিউইয়র্ক সিটি গ্রেড লেভেল এবং স্কুল থেকে দূরত্বের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রদের ‘হলুদ’ স্কুল বাস পরিষেবা দেয়। তবে যেখানে ডেডিকেটেড স্কুল বাস পরিষেবা নেই সেখানে গ্রেড ৭-১২ এবং আরও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য পাবলিক নিউইয়র্ক সিটি ট্রানজিট বাস সিস্টেমের ওপর নির্ভর করে কর্তৃপক্ষ। এই উদ্দেশ্যে স্কুল প্রশাসন বিনা মূল্যে বা অর্ধেক মূল্যে ট্রানজিট পাস দেয়।
কিছু পাবলিক ট্রানজিট পরিষেবা স্থানীয় স্কুলগুলোতে পরিষেবা দেওয়ার জন্য বিশেষ ভাবে ডিজাইন করা রুটগুলো ব্যবহার করে। এ ধরনের রুট নির্ধারিত সময়ে শুধু স্কুল পরিবহনের জন্যই ব্যবহার করা হয়। অবশ্য ১৬ বছরের বেশি বয়সী অধিকাংশ শিক্ষার্থী নিজেই গাড়ি চালিয়ে স্কুলে যায়।

মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিল
১৫ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের
২ ঘণ্টা আগে
বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস...
৩ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিলেন ছেলে। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে।
নিখোঁজ এক ষাটোর্ধ্ব দম্পতির সন্ধানে নেমে এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারে পুলিশ। বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে আম্বেশকে আটক করেছে পুলিশ। পেশায় প্রকৌশলী আম্বেশ তাঁর বাবা শ্যাম বাহাদুর (৬২) ও মা ববিতা (৬০)-কে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, আম্বেশের মুসলিম স্ত্রীকে পরিবার মেনে নিতে অস্বীকার করায় দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল। একপর্যায়ে আম্বেশ ও তাঁর স্ত্রী আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় অ্যালিমনি দেওয়ার জন্য আম্বেশের অর্থের প্রয়োজন হয়। তিনি তাঁর বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলেন, কিন্তু বাবা তা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বিরোধ থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর আম্বেশের বোন বন্দনা জৌনপুরের জাফরবাদ থানায় তাঁর বাবা-মা এবং ভাই নিখোঁজ হওয়ার একটি ডায়েরি করেন।
বন্দনা জানান, গত ৮ ডিসেম্বর আম্বেশ তাঁকে ফোন করে বলেন, বাবা-মা ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গেছেন। তিনি তাঁদের খুঁজতে বের হচ্ছেন। এরপর আম্বেশের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
এক সপ্তাহ পর আম্বেশকে যখন পুলিশ আটক করে, তখন তিনি ভেঙে পড়েন এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী শ্যাম বাহাদুরের একমাত্র ছেলে আম্বেশ প্রায় পাঁচ বছর আগে এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা এই বিয়ে মেনে নেননি এবং পুত্রবধূকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তাঁদের দুটি সন্তান থাকলেও শ্যাম বাহাদুর বারবার আম্বেশকে চাপ দিচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত আম্বেশ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে রাজি হন এবং স্ত্রী খোরপোশ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
গত ৮ ডিসেম্বর সেই টাকার জন্যই আম্বেশ তাঁর বাবার সাহায্য চান। বাবা তা দিতে অস্বীকার করলে মা ববিতার সঙ্গে আম্বেশের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আম্বেশ রান্নাঘরে গিয়ে শিল-পাটার শিল দিয়ে তাঁর মায়ের মাথায় আঘাত করেন। এ সময় তাঁর বাবা প্রতিবেশিদের ডাকতে নিলে বাবার মাথায়ও আঘাত করেন আম্বেশ। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য আম্বেশ মৃতদেহগুলো সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। বড় কোনো ব্যাগ না পেয়ে গ্যারেজে থাকা ছোট বস্তা আনেন। করাত দিয়ে বাবা-মায়ের দেহ ছয় টুকরো করে বস্তায় ভরে গাড়ির ডিকিতে তুলে নেন। পরে ভোরের দিকে নদীতে ফেলে দেন।
বোন বন্দনাকে ফোন করার পর ছয় দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন আম্বেশ। এ সময় তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। ১৪ ডিসেম্বর জৌনপুরে ফিরে আসেন তিনি। বাবা-মায়ের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁরাই পুলিশে খবর দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আম্বেশ পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি ভেঙে পড়েন এবং বাবা–মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
স্বীকারোক্তির পর পুলিশ দেহ উদ্ধারের অভিযান শুরু করে। এ সময় শ্যাম বাহাদুরের দেহের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত করাত এবং শিলপাটাও উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আয়ুষ শ্রীবাস্তব জানান, নদীতে তল্লাশির জন্য ডুবুরি দল নামানো হয়েছে। বাকি দেহাংশও দ্রুত উদ্ধার করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিলেন ছেলে। এমন ঘটনা ঘটেছে ভারতের উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরে।
নিখোঁজ এক ষাটোর্ধ্ব দম্পতির সন্ধানে নেমে এই হত্যাকাণ্ডের কথা জানতে পারে পুলিশ। বাবা-মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলে আম্বেশকে আটক করেছে পুলিশ। পেশায় প্রকৌশলী আম্বেশ তাঁর বাবা শ্যাম বাহাদুর (৬২) ও মা ববিতা (৬০)-কে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, আম্বেশের মুসলিম স্ত্রীকে পরিবার মেনে নিতে অস্বীকার করায় দীর্ঘদিন ধরে বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলছিল। একপর্যায়ে আম্বেশ ও তাঁর স্ত্রী আলাদা হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ সময় অ্যালিমনি দেওয়ার জন্য আম্বেশের অর্থের প্রয়োজন হয়। তিনি তাঁর বাবার কাছে টাকা চেয়েছিলেন, কিন্তু বাবা তা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বিরোধ থেকে হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ১৩ ডিসেম্বর আম্বেশের বোন বন্দনা জৌনপুরের জাফরবাদ থানায় তাঁর বাবা-মা এবং ভাই নিখোঁজ হওয়ার একটি ডায়েরি করেন।
বন্দনা জানান, গত ৮ ডিসেম্বর আম্বেশ তাঁকে ফোন করে বলেন, বাবা-মা ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গেছেন। তিনি তাঁদের খুঁজতে বের হচ্ছেন। এরপর আম্বেশের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
এক সপ্তাহ পর আম্বেশকে যখন পুলিশ আটক করে, তখন তিনি ভেঙে পড়েন এবং নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী শ্যাম বাহাদুরের একমাত্র ছেলে আম্বেশ প্রায় পাঁচ বছর আগে এক মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর বাবা-মা এই বিয়ে মেনে নেননি এবং পুত্রবধূকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি। তাঁদের দুটি সন্তান থাকলেও শ্যাম বাহাদুর বারবার আম্বেশকে চাপ দিচ্ছিলেন তাঁর স্ত্রীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। শেষ পর্যন্ত আম্বেশ স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে রাজি হন এবং স্ত্রী খোরপোশ হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন।
গত ৮ ডিসেম্বর সেই টাকার জন্যই আম্বেশ তাঁর বাবার সাহায্য চান। বাবা তা দিতে অস্বীকার করলে মা ববিতার সঙ্গে আম্বেশের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে আম্বেশ রান্নাঘরে গিয়ে শিল-পাটার শিল দিয়ে তাঁর মায়ের মাথায় আঘাত করেন। এ সময় তাঁর বাবা প্রতিবেশিদের ডাকতে নিলে বাবার মাথায়ও আঘাত করেন আম্বেশ। ঘটনাস্থলেই বৃদ্ধ দম্পতির মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানায়, হত্যার পর প্রমাণ লোপাটের জন্য আম্বেশ মৃতদেহগুলো সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। বড় কোনো ব্যাগ না পেয়ে গ্যারেজে থাকা ছোট বস্তা আনেন। করাত দিয়ে বাবা-মায়ের দেহ ছয় টুকরো করে বস্তায় ভরে গাড়ির ডিকিতে তুলে নেন। পরে ভোরের দিকে নদীতে ফেলে দেন।
বোন বন্দনাকে ফোন করার পর ছয় দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন আম্বেশ। এ সময় তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন। ১৪ ডিসেম্বর জৌনপুরে ফিরে আসেন তিনি। বাবা-মায়ের কথা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। পরে পরিবারের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাঁরাই পুলিশে খবর দেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আম্বেশ পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি ভেঙে পড়েন এবং বাবা–মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
স্বীকারোক্তির পর পুলিশ দেহ উদ্ধারের অভিযান শুরু করে। এ সময় শ্যাম বাহাদুরের দেহের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত করাত এবং শিলপাটাও উদ্ধার করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আয়ুষ শ্রীবাস্তব জানান, নদীতে তল্লাশির জন্য ডুবুরি দল নামানো হয়েছে। বাকি দেহাংশও দ্রুত উদ্ধার করা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের
২ ঘণ্টা আগে
বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস...
৩ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের আবেদন বাতিল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষক অভিবাসী, যাদের মধ্যে একজন সুজানা। আর তাঁর এই পরিচয়ই এখন আবারও ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চিত জীবনের দিকে।
প্রায় এক দশক আগে গুয়াতেমালার সহিংসতা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন সুজানা।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়োগ বাড়লেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘অভিবাসী হঠাও’ নীতি তাঁদের জীবিকার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এভাবে শিক্ষককে হারানো শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।
ওয়াশিংটন ডিসির কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের শিক্ষক সুজানা আল জাজিরাকে বলছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই খবরটা কীভাবে জানাব ভাবছিলাম। তাদের মধ্যে অনেকের বয়স তিন থেকে চার বছর। আবার অনেকে এত ছোট বিষয়টা বোঝার ক্ষমতা নেই।’
স্প্যানিশ ভাষায় সুজানা বলতে থাকেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে আমি সবকিছু হারালাম। যখন আমি শিক্ষার্থীদের বিদায় জানালাম, তারা জানতে চেয়েছিল কেন। আমি শুধু বলতে পেরেছিলাম, ‘আমি কেবল তোমাদের বিদায় বলতে পারি।’
সুজানা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘কিছু শিশু আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। ওদের কথা ভেবে আমার মন কেঁদে উঠেছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বিদেশে জন্ম নিয়েছেন এমন শিক্ষক কাজ করছেন, এর সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে ২০১৯ সালে প্রকাশিত জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ লাখ শিক্ষকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জন অভিবাসী। তাঁরা প্রি-স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নানা শিক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত আছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুধু ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রি-কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদ পূরণের জন্য ৬ হাজার ৭১৬ জন পূর্ণকালীন শিক্ষককে অস্থায়ী এক্সচেঞ্জ ভিসায় দেশে এনেছে। এর মধ্যে অনেক শিক্ষক ফিলিপাইন থেকে এসেছিলেন, পাশাপাশি জ্যামাইকা, স্পেন ও কলম্বিয়ার মতো দেশ থেকেও অনেকে ছিলেন।
তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসীদের জন্য তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা স্কুলগুলোতে বেশ বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে, কেন না তাঁরা অভিবাসী শিক্ষকদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।
সুজানার কর্মস্থল কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রাউল ইচেভারিয়া অনুমান করে বলেন, কমিউনিকিডসের প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মী অভিবাসী। এদের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়া এবং বৈধ অনুমোদনের সঙ্গে কাজ করা অভিবাসী উভয়েই রয়েছেন।
অভিবাসনের বৈধ পথ বাতিলের কারণে কয়েকজন শিক্ষকের চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে জানান ইচেভারিয়া।
স্কুলের আরও পাঁচজন শিক্ষকের কাজের ক্ষমতা অস্থায়ী কাজের অনুমতি (Temporary Protected Status, TPS) বাতিল হয়েছে। ইচেভারিয়া জানান, এই পাঁচজন শিক্ষক মূলত ভেনেজুয়েলা থেকে এসেছেন। কিন্তু অক্টোবর মাসে ট্রাম্প প্রশাসন কমিউনিকিডসের শিক্ষকদেরসহ ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিকের টিপিএস বাতিল করে।
ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার অনুমোদন শেষ হবে।
কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইচেভারিয়া বলেন, ‘এই শিক্ষকেরা জীবিকার সুযোগ হারিয়েছেন। আর আমার স্কুলে স্প্যানিশ, ফরাসি ও ম্যান্ডারিনের মতো ভাষায় দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে।’
সরকারের এ সিদ্ধান্তে স্কুলগুলো শিক্ষক সংকটে পড়ছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যই ফেডারেল সরকারের কাছে শিক্ষক ঘাটতির তথ্য জানিয়েছে। তবে এ নীতির সমর্থকেরা বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে উচ্চ চাপ এবং কম বেতন শিক্ষকদের আকর্ষণ ও ধরে রাখাকে কঠিন করে তোলে। ফলে কিছু রাজ্য শিক্ষাক্ষেত্রে কর্মী সংগ্রহের জন্য বিদেশিদের দিকে ঝুঁকছে।
ইচেভারিয়া জানান, এই নীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীদের ওপর পড়েছে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। হঠাৎ এক রাতের মধ্যে তারা সেই শিক্ষককে হারায়। তখন তাদের মনের অবস্থা কি হতে পারে!’
তিনি মনে করেন, যখন এই সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়, তখন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চাৎপদতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে ছোট বয়সী শিশুদের মধ্যে।
আমেরিকান এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষকেরা যদি বছরের মধ্যবর্তী সময়ে বিদ্যালয় ছাড়েন, তখন শিশুদের ভাষা দক্ষতা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব শিশুর আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতিশীলতাকেও ছোঁয়।
কমিউনিকিডস-এ পড়া এক শিশু অভিভাবক মিশেল হাওয়েল জানান, শিক্ষককে হারানো ক্লাসরুমের পরিবেশকেও সংবেদনশীল করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ‘সেখানে শিক্ষকেরা শুধুমাত্র ছোট শিশুদের শিক্ষক নন। তারা যেন বাড়িতে যুক্ত হওয়া নতুন এক সদস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা শিশুদের জড়িয়ে ধরে, অভিভাবকের মতো আগলে রাখে। যখন সেই মানুষগুলো থাকে না, তা শুধু শিশুদের জন্যই নয়, সবার জন্যই মেনে নেওয়া কঠিন।’
স্কুল সাইকোলজিস্ট মারিয়া সি (ছদ্মনাম) বলেন, কোনো প্রিয় ব্যক্তি বা শিক্ষকের হঠাৎ অনুপস্থিতি শিশুর শরীরে কর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি করতে পারে, যা বিপদের মুহূর্তে শিশুকে সুরক্ষা দেয়। যখন এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন একই হরমোন সাহায্যের চেয়ে ক্ষতি করতে শুরু করে। এটি শিশুর স্মৃতি, মনোযোগ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তিনি যেসব শিশুর সঙ্গে কাজ করেন, তারা এই বহিষ্কার নীতির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করছে।
মারিয়া বলেন, ‘কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এটি উদ্বেগের মতো প্রকাশ পায়। অন্যদের ক্ষেত্রে হতাশা বা হঠাৎ রাগের প্রকাশ দেখা যায়। তারা সারাদিন “লড়াই বা পালানো” মোডে থাকে।’
পাঁচ থেকে বারো বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এটা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের আবেদন বাতিল হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১০ শতাংশ শিক্ষক অভিবাসী, যাদের মধ্যে একজন সুজানা। আর তাঁর এই পরিচয়ই এখন আবারও ঠেলে দিয়েছে অনিশ্চিত জীবনের দিকে।
প্রায় এক দশক আগে গুয়াতেমালার সহিংসতা থেকে পালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন সুজানা।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়োগ বাড়লেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘অভিবাসী হঠাও’ নীতি তাঁদের জীবিকার জন্য হুমকি সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি এভাবে শিক্ষককে হারানো শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।
ওয়াশিংটন ডিসির কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের শিক্ষক সুজানা আল জাজিরাকে বলছিলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এই খবরটা কীভাবে জানাব ভাবছিলাম। তাদের মধ্যে অনেকের বয়স তিন থেকে চার বছর। আবার অনেকে এত ছোট বিষয়টা বোঝার ক্ষমতা নেই।’
স্প্যানিশ ভাষায় সুজানা বলতে থাকেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে আমি সবকিছু হারালাম। যখন আমি শিক্ষার্থীদের বিদায় জানালাম, তারা জানতে চেয়েছিল কেন। আমি শুধু বলতে পেরেছিলাম, ‘আমি কেবল তোমাদের বিদায় বলতে পারি।’
সুজানা স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘কিছু শিশু আমাকে জড়িয়ে ধরেছিল। ওদের কথা ভেবে আমার মন কেঁদে উঠেছিল।’
যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বিদেশে জন্ম নিয়েছেন এমন শিক্ষক কাজ করছেন, এর সঠিক কোনো হিসাব নেই। তবে ২০১৯ সালে প্রকাশিত জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ৮১ লাখ শিক্ষকের মধ্যে ৮ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ জন অভিবাসী। তাঁরা প্রি-স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের নানা শিক্ষার দায়িত্বে নিযুক্ত আছেন।
যুক্তরাষ্ট্র সরকার শুধু ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রি-কিন্ডারগার্টেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শূন্যপদ পূরণের জন্য ৬ হাজার ৭১৬ জন পূর্ণকালীন শিক্ষককে অস্থায়ী এক্সচেঞ্জ ভিসায় দেশে এনেছে। এর মধ্যে অনেক শিক্ষক ফিলিপাইন থেকে এসেছিলেন, পাশাপাশি জ্যামাইকা, স্পেন ও কলম্বিয়ার মতো দেশ থেকেও অনেকে ছিলেন।
তবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে অভিবাসীদের জন্য তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা স্কুলগুলোতে বেশ বিঘ্ন সৃষ্টি করেছে, কেন না তাঁরা অভিবাসী শিক্ষকদের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল।
সুজানার কর্মস্থল কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি রাউল ইচেভারিয়া অনুমান করে বলেন, কমিউনিকিডসের প্রায় ৯০ শতাংশ কর্মী অভিবাসী। এদের মধ্যে নাগরিকত্ব পাওয়া এবং বৈধ অনুমোদনের সঙ্গে কাজ করা অভিবাসী উভয়েই রয়েছেন।
অভিবাসনের বৈধ পথ বাতিলের কারণে কয়েকজন শিক্ষকের চাকরি ঝুঁকির মুখে পড়েছে বলে জানান ইচেভারিয়া।
স্কুলের আরও পাঁচজন শিক্ষকের কাজের ক্ষমতা অস্থায়ী কাজের অনুমতি (Temporary Protected Status, TPS) বাতিল হয়েছে। ইচেভারিয়া জানান, এই পাঁচজন শিক্ষক মূলত ভেনেজুয়েলা থেকে এসেছেন। কিন্তু অক্টোবর মাসে ট্রাম্প প্রশাসন কমিউনিকিডসের শিক্ষকদেরসহ ৩ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ভেনেজুয়েলার নাগরিকের টিপিএস বাতিল করে।
ইউএস সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেসের ওয়েবসাইট থেকে জানা গেছে, ২০২৬ সালের ২ অক্টোবর তাদের যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার অনুমোদন শেষ হবে।
কমিউনিকিডস প্রি-স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ইচেভারিয়া বলেন, ‘এই শিক্ষকেরা জীবিকার সুযোগ হারিয়েছেন। আর আমার স্কুলে স্প্যানিশ, ফরাসি ও ম্যান্ডারিনের মতো ভাষায় দক্ষ শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে।’
সরকারের এ সিদ্ধান্তে স্কুলগুলো শিক্ষক সংকটে পড়ছে। এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজ্যই ফেডারেল সরকারের কাছে শিক্ষক ঘাটতির তথ্য জানিয়েছে। তবে এ নীতির সমর্থকেরা বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে উচ্চ চাপ এবং কম বেতন শিক্ষকদের আকর্ষণ ও ধরে রাখাকে কঠিন করে তোলে। ফলে কিছু রাজ্য শিক্ষাক্ষেত্রে কর্মী সংগ্রহের জন্য বিদেশিদের দিকে ঝুঁকছে।
ইচেভারিয়া জানান, এই নীতির প্রভাব সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থীদের ওপর পড়েছে। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। হঠাৎ এক রাতের মধ্যে তারা সেই শিক্ষককে হারায়। তখন তাদের মনের অবস্থা কি হতে পারে!’
তিনি মনে করেন, যখন এই সম্পর্কগুলো ভেঙে যায়, তখন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে পশ্চাৎপদতা দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে ছোট বয়সী শিশুদের মধ্যে।
আমেরিকান এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের ২০২৪ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষকেরা যদি বছরের মধ্যবর্তী সময়ে বিদ্যালয় ছাড়েন, তখন শিশুদের ভাষা দক্ষতা বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর প্রভাব শিশুর আত্মসম্মান এবং মানসিক স্থিতিশীলতাকেও ছোঁয়।
কমিউনিকিডস-এ পড়া এক শিশু অভিভাবক মিশেল হাওয়েল জানান, শিক্ষককে হারানো ক্লাসরুমের পরিবেশকেও সংবেদনশীল করে তুলেছে।
তিনি বলেন, ‘সেখানে শিক্ষকেরা শুধুমাত্র ছোট শিশুদের শিক্ষক নন। তারা যেন বাড়িতে যুক্ত হওয়া নতুন এক সদস্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা শিশুদের জড়িয়ে ধরে, অভিভাবকের মতো আগলে রাখে। যখন সেই মানুষগুলো থাকে না, তা শুধু শিশুদের জন্যই নয়, সবার জন্যই মেনে নেওয়া কঠিন।’
স্কুল সাইকোলজিস্ট মারিয়া সি (ছদ্মনাম) বলেন, কোনো প্রিয় ব্যক্তি বা শিক্ষকের হঠাৎ অনুপস্থিতি শিশুর শরীরে কর্টিসল হরমোন বৃদ্ধি করতে পারে, যা বিপদের মুহূর্তে শিশুকে সুরক্ষা দেয়। যখন এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হয়, তখন একই হরমোন সাহায্যের চেয়ে ক্ষতি করতে শুরু করে। এটি শিশুর স্মৃতি, মনোযোগ এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তিনি যেসব শিশুর সঙ্গে কাজ করেন, তারা এই বহিষ্কার নীতির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার সঙ্গে লড়াই করছে।
মারিয়া বলেন, ‘কিছু শিশুর ক্ষেত্রে এটি উদ্বেগের মতো প্রকাশ পায়। অন্যদের ক্ষেত্রে হতাশা বা হঠাৎ রাগের প্রকাশ দেখা যায়। তারা সারাদিন “লড়াই বা পালানো” মোডে থাকে।’
পাঁচ থেকে বারো বছর বয়সী শিশুদের মধ্যে এটা বেশি দেখা যাচ্ছে বলে জানান তিনি।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিল
১৫ মিনিট আগে
বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস...
৩ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস বা ‘ওয়ারিয়র ডিভিডেন্ড’ দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা লাভের ঐতিহাসিক বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে এই অঙ্কের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই বোনাস প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। এই অর্থের সংস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মূলত তাঁর প্রশাসনের আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত ব্যাপক শুল্কনীতি এবং গত ৪ জুলাই স্বাক্ষরিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ থেকে আসবে। ভাষণে ট্রাম্প অত্যন্ত দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর চেয়ে এই সম্মানের দাবিদার আর কেউ নেই। চেকগুলো ইতিমধ্যে প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়েছে এবং বড়দিনের উৎসবের আগেই তা আমাদের বীরদের হাতে পৌঁছাবে।’
মাত্র ১৮ মিনিটের এই ভাষণে ট্রাম্প তাঁর গত ১১ মাসের অর্থনৈতিক সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে এবং নিত্যপণ্যের দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে। ট্রাম্পের মতে, পেট্রল এবং ডিমের দাম কমেছে।
তিনি বর্তমান দ্রব্যমূল্যের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেন, ভাষণে সাতবার বাইডেনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা মুদি পণ্যের দাম আকাশে তুলেছিলেন, কিন্তু আমরা তা সমাধান করছি।’
যদিও সরকারি তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। সেপ্টেম্বরের অর্থনৈতিক উপাত্ত অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো ৩ শতাংশ ছুঁয়েছে। যদিও কিছু পণ্যের দাম কমেছে, তবে সাধারণ আমেরিকানদের বড় অংশই এখনো আবাসন খরচ, শিশু যত্ন এবং স্বাস্থ্যসেবার লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট।
ট্রাম্পের এই ভাষণ এমন এক সময়ে এল, যখন বিভিন্ন স্বাধীন জনমত জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তা দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ভাষণে তিনি আত্মবিশ্বাসী থাকলেও পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা।
পলিটিকোর জরিপ অনুযায়ী, অর্ধেক ভোটার এমনকি ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া ১০ জনের মধ্যে ৪ জন মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয় তাঁদের জীবদ্দশায় এখন সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে আছে।
সিবিএস নিউজ/ইউগভের নভেম্বর মাসের জরিপ বলছে, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ট্রাম্পের ওপর জনসমর্থন গত মার্চের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে মাত্র ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি, নিউইয়র্ক সিটি এমনকি মিয়ামি এবং জর্জিয়ার নির্বাচনে রিপাবলিকানদের আশানুরূপ ফল না হওয়াকে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হিসেবে স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।
২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে। সেই মাইলফলক সামনে রেখে ট্রাম্প এক দেশপ্রেমমূলক আহ্বানের মাধ্যমে তাঁর ভাষণ শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী বছর বিশ্ব যখন আমাদের দিকে তাকাবে, তারা দেখবে এমন এক জাতি, যারা তাদের নাগরিকদের প্রতি অনুগত এবং শ্রমিকদের প্রতি বিশ্বস্ত। আমরা আবার আগের মতো সম্মান পাচ্ছি।’
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের, বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর সমর্থন ধরে রাখতেই এই ‘ওয়ারিয়র ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে গত ১১ মাসে সাধারণ মানুষের জীবনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন না আসায় এই সংক্ষিপ্ত ভাষণ বা এককালীন বোনাস ভোটারদের দীর্ঘমেয়াদি অসন্তোষ কমাতে কতটা সক্ষম হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।

বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস বা ‘ওয়ারিয়র ডিভিডেন্ড’ দেওয়ার ঘোষণা দেন। ১৭৭৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা লাভের ঐতিহাসিক বছরকে স্মরণীয় করে রাখতে এই অঙ্কের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই বোনাস প্রকল্প বাস্তবায়নে ২ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে। এই অর্থের সংস্থান সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মূলত তাঁর প্রশাসনের আমদানিকৃত পণ্যের ওপর আরোপিত ব্যাপক শুল্কনীতি এবং গত ৪ জুলাই স্বাক্ষরিত ‘ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল’ থেকে আসবে। ভাষণে ট্রাম্প অত্যন্ত দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের সামরিক বাহিনীর চেয়ে এই সম্মানের দাবিদার আর কেউ নেই। চেকগুলো ইতিমধ্যে প্রক্রিয়াকরণ শুরু হয়েছে এবং বড়দিনের উৎসবের আগেই তা আমাদের বীরদের হাতে পৌঁছাবে।’
মাত্র ১৮ মিনিটের এই ভাষণে ট্রাম্প তাঁর গত ১১ মাসের অর্থনৈতিক সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসছে এবং নিত্যপণ্যের দাম দ্রুত কমতে শুরু করেছে। ট্রাম্পের মতে, পেট্রল এবং ডিমের দাম কমেছে।
তিনি বর্তমান দ্রব্যমূল্যের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ডেমোক্র্যাটদের দায়ী করেন, ভাষণে সাতবার বাইডেনের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডেমোক্র্যাটরা মুদি পণ্যের দাম আকাশে তুলেছিলেন, কিন্তু আমরা তা সমাধান করছি।’
যদিও সরকারি তথ্য বলছে ভিন্ন কথা। সেপ্টেম্বরের অর্থনৈতিক উপাত্ত অনুযায়ী, মূল্যস্ফীতির হার জানুয়ারির পর প্রথমবারের মতো ৩ শতাংশ ছুঁয়েছে। যদিও কিছু পণ্যের দাম কমেছে, তবে সাধারণ আমেরিকানদের বড় অংশই এখনো আবাসন খরচ, শিশু যত্ন এবং স্বাস্থ্যসেবার লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরম অসন্তুষ্ট।
ট্রাম্পের এই ভাষণ এমন এক সময়ে এল, যখন বিভিন্ন স্বাধীন জনমত জরিপে তাঁর জনপ্রিয়তা দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ভাষণে তিনি আত্মবিশ্বাসী থাকলেও পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা।
পলিটিকোর জরিপ অনুযায়ী, অর্ধেক ভোটার এমনকি ট্রাম্পকে ভোট দেওয়া ১০ জনের মধ্যে ৪ জন মনে করেন জীবনযাত্রার ব্যয় তাঁদের জীবদ্দশায় এখন সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ে আছে।
সিবিএস নিউজ/ইউগভের নভেম্বর মাসের জরিপ বলছে, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ট্রাম্পের ওপর জনসমর্থন গত মার্চের তুলনায় ১৫ পয়েন্ট কমে মাত্র ৩৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি ভার্জিনিয়া, নিউ জার্সি, নিউইয়র্ক সিটি এমনকি মিয়ামি এবং জর্জিয়ার নির্বাচনে রিপাবলিকানদের আশানুরূপ ফল না হওয়াকে মূল্যস্ফীতির প্রভাব হিসেবে স্বীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট নিজেই।
২০২৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৫০তম বার্ষিকী উদ্যাপন করা হবে। সেই মাইলফলক সামনে রেখে ট্রাম্প এক দেশপ্রেমমূলক আহ্বানের মাধ্যমে তাঁর ভাষণ শেষ করেন। তিনি বলেন, ‘আগামী বছর বিশ্ব যখন আমাদের দিকে তাকাবে, তারা দেখবে এমন এক জাতি, যারা তাদের নাগরিকদের প্রতি অনুগত এবং শ্রমিকদের প্রতি বিশ্বস্ত। আমরা আবার আগের মতো সম্মান পাচ্ছি।’
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছরের মধ্যবর্তী নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটারদের, বিশেষ করে সামরিক বাহিনীর সমর্থন ধরে রাখতেই এই ‘ওয়ারিয়র ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে গত ১১ মাসে সাধারণ মানুষের জীবনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন না আসায় এই সংক্ষিপ্ত ভাষণ বা এককালীন বোনাস ভোটারদের দীর্ঘমেয়াদি অসন্তোষ কমাতে কতটা সক্ষম হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েই গেছে।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিল
১৫ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের
২ ঘণ্টা আগে
ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
৪ ঘণ্টা আগেআজকের পত্রিকা ডেস্ক

ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মিলারের এই মন্তব্য ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান ঘিরে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেননা ট্রাম্প প্রশাসন এত দিন দাবি করে আসছে, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনার মূল কারণ মাদক পাচার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে স্টিফেন মিলার লেখেন, ‘ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প গড়ে উঠেছে আমেরিকানদের ঘাম, উদ্ভাবনী শক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই স্বৈরাচারী দখলদারি মার্কিন সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসে নথিভুক্ত সবচেয়ে বড় চুরি। পরে এই লুণ্ঠিত সম্পদ ব্যবহার করা হয়েছে সন্ত্রাসে অর্থ জোগাতে এবং খুনি, ভাড়াটে যোদ্ধা ও মাদক দিয়ে আমাদের সড়কগুলো প্লাবিত করতে।’
তবে আন্তর্জাতিক আইন বলছে, ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতির আওতায় ভেনেজুয়েলার তেল ওই দেশটিরই সম্পদ।
যদিও ভেনেজুয়েলায় তেল অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো যুক্ত ছিল। ১৯৭৬ সালে তেল খাত জাতীয়করণ করে ভেনেজুয়েলা। এরপর খাতটির নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পিডিভিএসএর হাতে।
পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে প্রয়াত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজ ভেনেজুয়েলার অবশিষ্ট বিদেশি তেল প্রকল্পগুলোও জাতীয়করণ করেন। এর ফলে কনোকোফিলিপস ও এক্সন মোবিলের মতো মার্কিন তেল জায়ান্টদের কার্যত ওই দেশ থেকে সরে আসতে হয়।
এ সময় তেল খাত জাতীয়করণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো আইনি লড়াই শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের একটি সালিসি ট্রাইব্যুনাল এক্সন মোবিলকে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে ভেনেজুয়েলাকে নির্দেশ দেয়। তবে এ-সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে নিজের তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি আরও জোরদার করেন ট্রাম্প।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভেনেজুয়েলার তেলবাহী জাহাজগুলোকে ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে এগুলোর ওপর অবরোধের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আর এই অবরোধ ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ক্রমেই কঠোর ও সংঘাতমুখী নীতির অংশ। আর ট্রাম্পের এই নীতির লক্ষ্য দেশটির বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজের আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প আবারও স্টিফেন মিলারের বক্তব্যের সুরে বলেন, ভেনেজুয়েলাবাসী যুক্তরাষ্ট্রের তেল চুরি করেছে।
ট্রাম্প লেখেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠা সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ভেনেজুয়েলাকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এটি আরও বড় আকার নেবে। তাদের জন্য যে ধাক্কা আসবে, তা তারা আগে কখনো দেখেনি। যত দিন না তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আগে চুরি করা সব তেল, ভূমি ও অন্যান্য সম্পদ ফিরিয়ে দিচ্ছে, তত দিন এটা চলবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। গত নভেম্বরে প্রশাসন ‘কার্টেল দে লস সোলেস’-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। যদিও এই নামটি কোনো সংগঠিত গোষ্ঠীকে নির্দেশ করে না।
বরং এটি ভেনেজুয়েলার সরকার ও সামরিক বাহিনীর ভেতরে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ বোঝাতে ব্যবহৃত একটি পরিভাষা। মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, তিনি ভেনেজুয়েলার শাসনব্যবস্থাকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করবেন। এর পেছনে তিনি যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করেছে।
তবে গত বুধবার অজ্ঞাত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ব্যক্তিগত তেল কোম্পানিগুলোর কাছে যোগাযোগ করেছে। তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যদি মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হন, তাহলে তারা ভেনেজুয়েলায় আবার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী কি না।
এদিকে ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মারিয়া করোনা মাচাদো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদি মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হন, দেশের তেল খাত বেসরকারীকরণ করা হবে এবং বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তিনি এ বছরের শুরুতে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।

ভেনেজুয়েলার তেল যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ সহযোগী স্টিফেন মিলার। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির তেলশিল্প জাতীয়করণকে ‘চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল বুধবার মিলার এসব কথা বলেন।
এদিকে হোয়াইট হাউসের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ মিলারের এই মন্তব্য ভেনেজুয়েলা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান ঘিরে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। কেননা ট্রাম্প প্রশাসন এত দিন দাবি করে আসছে, ভেনেজুয়েলার সঙ্গে উত্তেজনার মূল কারণ মাদক পাচার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে স্টিফেন মিলার লেখেন, ‘ভেনেজুয়েলার তেলশিল্প গড়ে উঠেছে আমেরিকানদের ঘাম, উদ্ভাবনী শক্তি ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই স্বৈরাচারী দখলদারি মার্কিন সম্পদ ও সম্পত্তির ইতিহাসে নথিভুক্ত সবচেয়ে বড় চুরি। পরে এই লুণ্ঠিত সম্পদ ব্যবহার করা হয়েছে সন্ত্রাসে অর্থ জোগাতে এবং খুনি, ভাড়াটে যোদ্ধা ও মাদক দিয়ে আমাদের সড়কগুলো প্লাবিত করতে।’
তবে আন্তর্জাতিক আইন বলছে, ‘প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর স্থায়ী সার্বভৌমত্ব’ নীতির আওতায় ভেনেজুয়েলার তেল ওই দেশটিরই সম্পদ।
যদিও ভেনেজুয়েলায় তেল অনুসন্ধানের প্রাথমিক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের কোম্পানিগুলো যুক্ত ছিল। ১৯৭৬ সালে তেল খাত জাতীয়করণ করে ভেনেজুয়েলা। এরপর খাতটির নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান পিডিভিএসএর হাতে।
পরবর্তী সময়ে ২০০৭ সালে প্রয়াত বামপন্থী প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজ ভেনেজুয়েলার অবশিষ্ট বিদেশি তেল প্রকল্পগুলোও জাতীয়করণ করেন। এর ফলে কনোকোফিলিপস ও এক্সন মোবিলের মতো মার্কিন তেল জায়ান্টদের কার্যত ওই দেশ থেকে সরে আসতে হয়।
এ সময় তেল খাত জাতীয়করণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো আইনি লড়াই শুরু করে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১৪ সালে বিশ্বব্যাংকের একটি সালিসি ট্রাইব্যুনাল এক্সন মোবিলকে ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে ভেনেজুয়েলাকে নির্দেশ দেয়। তবে এ-সংক্রান্ত আইনি প্রক্রিয়া এখনো চলমান রয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার পর ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে নিজের তথাকথিত ‘সর্বোচ্চ চাপ’ নীতি আরও জোরদার করেন ট্রাম্প।
গত মঙ্গলবার গভীর রাতে ভেনেজুয়েলার তেলবাহী জাহাজগুলোকে ‘নিষেধাজ্ঞাভুক্ত’ হিসেবে উল্লেখ করে এগুলোর ওপর অবরোধের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আর এই অবরোধ ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ক্রমেই কঠোর ও সংঘাতমুখী নীতির অংশ। আর ট্রাম্পের এই নীতির লক্ষ্য দেশটির বামপন্থী প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজের আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি।
বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প আবারও স্টিফেন মিলারের বক্তব্যের সুরে বলেন, ভেনেজুয়েলাবাসী যুক্তরাষ্ট্রের তেল চুরি করেছে।
ট্রাম্প লেখেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠা সবচেয়ে বড় নৌবহর দিয়ে ভেনেজুয়েলাকে পুরোপুরি ঘিরে ফেলা হয়েছে।’
তিনি আরও লেখেন, ‘এটি আরও বড় আকার নেবে। তাদের জন্য যে ধাক্কা আসবে, তা তারা আগে কখনো দেখেনি। যত দিন না তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে আগে চুরি করা সব তেল, ভূমি ও অন্যান্য সম্পদ ফিরিয়ে দিচ্ছে, তত দিন এটা চলবে।’
ট্রাম্প প্রশাসন মাদুরো সরকারের বিরুদ্ধেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। গত নভেম্বরে প্রশাসন ‘কার্টেল দে লস সোলেস’-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা দেয়। যদিও এই নামটি কোনো সংগঠিত গোষ্ঠীকে নির্দেশ করে না।
বরং এটি ভেনেজুয়েলার সরকার ও সামরিক বাহিনীর ভেতরে কথিত দুর্নীতির অভিযোগ বোঝাতে ব্যবহৃত একটি পরিভাষা। মঙ্গলবার ট্রাম্প বলেন, তিনি ভেনেজুয়েলার শাসনব্যবস্থাকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করবেন। এর পেছনে তিনি যুক্তি হিসেবে দেখিয়েছেন, ভেনেজুয়েলা যুক্তরাষ্ট্রের সম্পদ চুরি করেছে।
তবে গত বুধবার অজ্ঞাত সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসন ব্যক্তিগত তেল কোম্পানিগুলোর কাছে যোগাযোগ করেছে। তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যদি মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হন, তাহলে তারা ভেনেজুয়েলায় আবার বিনিয়োগ করতে আগ্রহী কি না।
এদিকে ভেনেজুয়েলার বিরোধী নেতা শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মারিয়া করোনা মাচাদো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যদি মাদুরো ক্ষমতাচ্যুত হন, দেশের তেল খাত বেসরকারীকরণ করা হবে এবং বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। তিনি এ বছরের শুরুতে নোবেল শান্তি পুরস্কার পেয়েছেন।

বিশ্বের অনেক দেশেই বিশেষ করে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা আছে। বিনা ভাড়া বা অর্ধেক ভাড়ায় তারা যাতায়াত করতে পারে। অনেক দেশে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য আলাদা রাস্তা পর্যন্ত আছে।
০১ ডিসেম্বর ২০২১
মুসলিম নারীকে বিয়ে করেছিলেন ছেলে। বাবা-মা মেনে নিলেন না এ বিয়ে। দীর্ঘদিন ধরে মনোমালিন্যের পর ছেলে ও তাঁর স্ত্রী সিদ্ধান্ত নিলেন বিবাহ বিচ্ছেদের। কিন্তু খোরপোশ দিতে যে অর্থের প্রয়োজন, তা না থাকায় বাবার কাছে টাকা চেয়েও পেলেন না। আর এই ক্ষোভের জেরে বাবা-মাকে হত্যার পর দেহ খণ্ড-বিখণ্ড করে নদীতে ফেলে দিল
১৫ মিনিট আগে
যুক্তরাষ্ট্রে একটি স্কুলে পড়ান সুজানা। গত দুই বছরে সপ্তাহের প্রতিটি দিন সুজানার কেটেছে শিশুদের জিনিসপত্র সযত্নে সাজানো, ছবি ও বইয়ের মাধ্যমে শেখানো এবং গানের চর্চা করিয়ে। কিন্তু গত অক্টোবরে পাল্টে গেল তাঁর এই জীবন। খবর পেলেন, শিশুদের শিক্ষক হিসেবে যে উপভোগ্য সময় তিনি কাটাতেন, সেই কাজের অনুমতি নবায়নের
২ ঘণ্টা আগে
বড়দিনের ঠিক আগে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদস্যদের জন্য বড় ধরনের উপহার ঘোষণা করলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক বিশেষ টেলিভিশন ভাষণে তিনি সাড়ে ১৪ লাখ সক্রিয় ও রিজার্ভ সেনার প্রত্যেকের জন্য ১ হাজার ৭৭৬ ডলারের একটি বিশেষ বোনাস...
৩ ঘণ্টা আগে