ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলতে দিচ্ছে না ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম: এইচআরডব্লিউ 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০: ৩৪

ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলতে দিচ্ছে না জনপ্রিয় দুই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও মেটা। এই প্ল্যাটফর্ম দুটির মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা সিস্টেমেটিক্যালি ফিলিস্তিনের পক্ষের কণ্ঠস্বরকে ‘থামিয়ে বা নীরব’ করে দিচ্ছে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেলেও এই আচরণ বজায় রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বা এইচআরডব্লিউ এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। 

গতকাল বৃহস্পতিবার হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৫১ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ‘মেটাস ব্রোকেন প্রমিজেস: সিস্টেমেটিক সেন্সরশিপ অব প্যালেস্টাইন কনটেন্ট অন ইনস্টাগ্রাম অ্যান্ড ফেসবুক’—শীর্ষক শিরোনামে মানবাধিকার গোষ্ঠীটি প্যালেস্টাইনের সমর্থনে শান্তিপূর্ণ মতামতসহ বিভিন্ন বক্তব্য ও মানবাধিকার বিষয়ে বিভিন্ন বিতর্ক কীভাবে মেটা অবৈধভাবে সরিয়ে ফেলছে তার প্রমাণ নথিভুক্ত করেছে। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৬০ টিরও বেশি দেশ থেকে অনলাইন সেন্সরশিপের ১০৫০টি ঘটনা পর্যালোচনা করেছে। এই ঘটনাগুলো ফিলিস্তিন ইস্যুতে মেটার আচরণের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বছরের পর বছর প্রকাশিত প্রতিবেদনকে সমর্থন করে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচর সেন্সরশিপের ছয়টি মূল প্যাটার্ন চিহ্নিত করেছে। এসব প্যাটার্নের প্রতিটি অন্তত ১০০টি ঘটনার ক্ষেত্রে পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এসব প্যাটার্নের মধ্যে রয়েছে—বিষয়বস্তু সরিয়ে ফেলা, অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা বা স্থায়ীভাবে ডিলিট করে দেওয়া, ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে কথা বলে এমন অ্যাকাউন্টের রিচ কমিয়ে দেওয়া যাতে অন্য কেউ এগুলোতে অংশগ্রহণ করতে না পারে, নির্দিষ্ট কোনো অ্যাকাউন্ট অনুসরণ বা ট্যাগ করতে না দেওয়া, অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভের মতো ফিচার ব্যবহার করতে না দেওয়া। এর বাইরে আরেকটি বিষয় সবচেয়ে বেশি হয়। হিউম্যান রাইটস ওয়াচর একে বলছে ‘শ্যাডো ব্যানিং’। এর অর্থ হলো—ব্যবহারকারীকে কোনো নোটিফিকেশন না দিয়েই সেই অ্যাকাউন্টের পোস্ট, স্টোরি বা রিলসের রিচ কমিয়ে দেওয়া। 
 
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দেখতে পেয়েছে যে, অন্তত ৩০০টি ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে—ফিলিস্তিন সংক্রান্ত কোনো ইস্যু নিয়ে শেয়ার করা পোস্ট, রিলস বা স্টোরি সরিয়ে ফেলার পর সেই বিষয়ে কোনো আপিলও করা যাচ্ছে না মেটা কর্তৃপক্ষের কাছে। আপিল করতে গেলেই দেখা যাচ্ছে, ব্যবস্থাটি কাজ করছে না। 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রযুক্তি ও মানবাধিকার বিষয়ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহযোগী পরিচালক ডেবোরা ব্রাউন বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনিদের ওপর যে নৃশংসতা ও নিপীড়ন চলছে তা তাদের কথা বলার সুযোগ কমিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় ফিলিস্তিনের সমর্থনে যেসব বিষয় নৃশংসতা ও নিপীড়ন তুলে ধরে যেসব কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে মেটা সেগুলো সেন্সর করার মাধ্যমে সেই কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিচ্ছে।’ 

ডেবোরা ব্রাউন আরও বলেন, ‘নৃশংসতা ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের কথা বলা ও সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজিরের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি অপরিহার্য প্ল্যাটফর্ম কিন্তু মেটার সেন্সরশিপ বরং ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগকেই আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।’ 

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, মেটা শত শত বার মার্কিন সরকার প্রযুক্ত ‘বিপজ্জনক সংস্থা ও ব্যক্তি (ডিওআই) নীতি প্রয়োগ করেছে। এমনকি মেটা হিংসাত্মক গ্রাফিক বিষয়বস্তু, সহিংসতা ও উসকানি, ঘৃণামূলক বক্তব্য, নগ্নতা ও যৌন ক্রিয়াকলাপ বিষয় নীতিগুলোও ‘ভুলভাবে প্রয়োগ’ করেছে। এমনকি মেটা ফিলিস্তিনি হতাহতদের সংখ্যা নিয়ে তথ্য-প্রমাণ সহকারে প্রচার করা একাধিক ‘সংবাদ’ এবং ‘সংবাদ হওয়ার যোগ্য’ বিষয়বস্তুও সরিয়ে ফেলেছে স্রেফ ভুল নীতি প্রয়োগ করে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পুলিশের ভিন্ন বক্তব্যের পরও সালমা হত্যায় নিজ ভাষ্য়ে অনড় র‍্যাব

ফারুকীরা কীভাবে এই উপদেষ্টা পরিষদে আসে: সারজিস আলম

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য ডাক্তারের তদবিরের ঘোষণা

এই সরকারের সংবিধান সংশোধনের সুযোগ কি আছে, অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রশ্ন

বাংলাদেশ সিরিজের আগে ধাক্কা খেয়েই চলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত