লাখ লাখ শিশু স্কুল ছেড়ে কাজে, হচ্ছে যৌন শোষণের শিকার: আইএলও

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮: ১৪
আপডেট : ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৮: ১৫

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে স্কুল ছেড়ে কাজে যোগ দিতে বাধ্য হওয়ার সংখ্যা বাড়তে থাকায় বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। শুধু তাই শিশুরা মারাত্মক যৌন শোষণেরও শিকার হচ্ছে। তাই এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার উপর জোর দিয়েছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)। 

জাতিসংঘের শ্রম সংস্থাটির মহাপরিচালক গিলবার্ট হোংবো বিবিসিকে বলেন, বিশ্বে শিশুশ্রম বৃদ্ধির কারণে লাখ লাখ শিশুর ভবিষ্যৎ ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে শিশুদের  ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত করা হচ্ছে। বিশ্বে অর্থনৈতিক সমস্যা বাড়ার ফলে বিভিন্ন অঞ্চলে শিশুদের পরিস্থিতির ‘অবনমন’ ঘটছে। 

তিনি আরও বলেন, করোনার জন্য মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এই সমস্যা বাজে অবস্থায় চলে গেছে। এ বিষয়ে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেওয়া না হলে সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করবে। 

জাতিসংঘের তথ্য মতে, ২০২০ সালে প্রায় ১৬ কোটি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ছিল। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

ইউক্রেনে যুদ্ধের ফলে খাবার ও জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে অনেক পরিবার দিনে একবার খেতে পারছে। আবার অনেকে একদিন না খেয়েও থাকছে। এসব পরিবারের শিশুদের তাদের বাবা–মা যৌনবৃত্তির মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত করছেন। 

কেনিয়ার দক্ষিণ–পূর্বের উপকূলীয় শহর মোমবাসার এক ১৪ বছর বয়সী কিশোরী বিবিসিকে জানায়, তার কাজ করা ছাড়া উপায় নেই। কারণ তার মা খাবার ও স্কুলের খরচ বহন করতে পারছিল না। 

উপার্জনের জন্য সে অন্যদের কাপড় ধুয়ে দেয়, চুলে রং দিয়ে দেয় এবং তাঁকে অনৈতিক কাজেও অংশ নিতে হয়। মাঝে মাঝে স্কুলে গেলেও ক্ষুধার কারণে তাঁর কলম বন্ধ হয়ে যায়। 

করোনা মহামারিতে চাকরি হারানোর পর তার মা পরিবার চালাতে অর্থ যোগাতে পারছে না। তার মা বলছেন, কোনো সন্তানকে দিয়ে এই কাজ করানো সহজ বিষয় না। 

কেনিয়ার শহরে যৌনপল্লী পরিচালকারী এক নারী বলছেন, তার ব্যবসার পরিধি বাড়ছে; বেশিসংখ্যক কিশোরী অর্থের জন্য মরিয়া হয়ে উঠছে। 

নিম্ন–মধ্যম ও উচ্চ আয়ের দেশে কৃষি, খনি ও নির্মাণের মত খাতে বেশি দেখা যায় বলে জানান গিলবার্ট।

ইউনিসেফের সোশ্যাল পলিসি ও সোশ্যাল প্রটেকশন প্রোগ্রামের পরিচালক নাটালিয়া উইন্ডার-রসি বলেন, বহু পরিবারকে এমন পরিস্থিতি থেকে বের করতে হবে, যার ফলে তারা এ রকম নেতিবাচক পদক্ষেপ নেয়। এই পদক্ষেপগুলো শিশুদের বর্তমান ও দীর্ঘ মেয়াদে প্রভাব ফেলে। 

লেবাননের দক্ষিণে অবস্থিত সিডন শহরের শিশুরাও স্কুল ছেড়ে তাদের পরিবারকে সাহায্য করতে কাজ করছে। 

ইউনিসেফের মতে, লেবাননের ১০টি পরিবারের মধ্যে একটি পরিবার শিশুদের কাজ করতে পাঠায়। দেশটির অর্থনীতি পতনের মুখে।

গিলবার্ট হোংবো বলেছেন, এটি ‘খুবই উদ্বেগের’ বিষয়। কিন্তু তিনি আশার বাণী শুনিয়ে বলেছেন, এর সমাধান মেলা সম্ভব। 

তিনি বলেন, সব সমস্যার সমাধানে কোনো ‘এক পদ্ধতি নেই’, এর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। শিক্ষার ও নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি অবৈধ শিল্প বন্ধের ওপর জোর দিয়ে নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। এজন্য সব দেশকে ‘এখনই’ পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত