Ajker Patrika

‘টাইম’ বিশ্বসেরা স্থানের তালিকায় অনন্য সেই জেবুন নেসা মসজিদ

অনলাইন ডেস্ক
সাভারে আশুলিয়ার জামগড়ায় অবস্থিত জেবুন নেসা মসজিদ। ছবি: টাইম
সাভারে আশুলিয়ার জামগড়ায় অবস্থিত জেবুন নেসা মসজিদ। ছবি: টাইম

গত বছরের ৩ মে ব্যতিক্রম স্থাপত্য শৈলীর জেবুন নেসা মসজিদ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল আজকের পত্রিকা। ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় গড়ে ওঠা ওই মসজিদ এবার ঠাঁই করে নিয়েছে বিশ্বের সেরা স্থানগুলো নিয়ে করা টাইম ম্যাগাজিনের তালিকায়।

সম্প্রতি ‘পোশাকশ্রমিকদের জন্য প্রশান্তির আশ্রয়’ শিরোনামে এই মসজিদ নিয়ে টাইম-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের স্থপতিরা দীর্ঘদিন ধরেই আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর মসজিদ নির্মাণে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছেন। তবে ঢাকার উপকণ্ঠে নির্মিত গোলাপি রঙের জেবুন নেসা মসজিদ শিল্পাঞ্চলের ধূসর পরিবেশের মাঝে এক ব্যতিক্রমী স্থাপত্যকীর্তি হিসেবে দৃষ্টি কাড়ে।

প্রয়াত মায়ের স্মরণে সাড়ে ৬ হাজার পোশাকশ্রমিকের জন্য এই মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন স্থানীয় একটি বৃহৎ তৈরি পোশাক কারখানার মালিক। মসজিদটির স্থপতি সাইকা ইকবাল মেঘনা ঢাকায় অবস্থিত স্টুডিও মর্ফোজেনেসিস-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক। টাইম ম্যাগাজিনকে তিনি বলেছেন, ‘একজন নারীর নামে মসজিদের নামকরণ করার ধারণাটি আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে এমন একটি স্থান তৈরি করতে, যা শ্রমিকদের জন্য একটি কোমল, প্রশান্তিময় আশ্রয় হয়ে উঠবে।’

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়—বাংলাদেশের বেশির ভাগ মসজিদেই নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা থাকে না। কিন্তু জেবুন নেসা মসজিদে নারীদের প্রবেশ, সমবেত হওয়া ও প্রার্থনার জন্য বিশেষ স্থান রাখা হয়েছে। আর মসজিদটির বাইরের অংশে গোলাপি সিমেন্টের ব্যবহার এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী টেরাকোটা ও মাটির স্থাপত্যশৈলীর প্রতিচ্ছবি বহন করে।

স্থাপত্য শৈলী নিয়ে বলা হয়েছে—মসজিদের বাঁকানো দেয়ালে সূক্ষ্ম ছিদ্র রাখা হয়েছে, যা বাংলার ঐতিহ্যবাহী লতাপাতার জালি নকশার মতো দেখা যায়। পাশাপাশি বাংলাদেশের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় স্বাভাবিক বাতাস চলাচলের সুবিধা দেয় এই ব্যবস্থাটি।

নারীদের নামাজের স্থানটিতে ওঠার জন্য একটি সুচারু নকশার সিঁড়ি রাখা হয়েছে। মূলত একটি ছাতিম গাছকে বেষ্টন করে এই সিঁড়ি ওপরের দিকে উঠেছে। আর ওই গাছটির বিস্তৃত ডাল-পালা ও পাতা ছায়ার মতো ছড়িয়ে আছে, যা মসজিদের প্রশান্ত পরিবেশকে আরও মাধুর্যমণ্ডিত করে।

কেবলার দিক নির্দেশ করা মসজিদের মিহরাবটি স্বচ্ছ কাচের তৈরি। শিল্পী ওয়াকিলুর রহমানের সঙ্গে যৌথভাবে এটির নকশা করা হয়েছে।

প্রার্থনার জন্য রয়েছে উদ্যান, খোলা লন ও জলাধারের ধারে বসার ব্যবস্থা—যেখানে শ্রমিকেরা শুধু নামাজের সময়ই নয়, দিনের অন্যান্য সময়েও প্রশান্তি খুঁজে নিতে পারেন।

স্থপতি মেঘনা বলেছেন, ‘এই স্থানটি যেন সব পোশাকশ্রমিকের নিজের মনে হয়—এটাই স্থপতি হিসেবে আমার সবচেয়ে বড় অর্জন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত