চলতি বছর বিশ্বজুড়ে নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব খুব বেশি নয়: মেটা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩: ৪৩
মেটা দাবি করেছে, চলতি বছর সারা বিশ্বের নির্বাচনগুলোতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সেই অর্থে প্রভাব ফেলতে পারেনি। প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

বিশ্বজুড়ে নির্বাচনের ফলাফলের ওপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থাকার পরও যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মেটা বলেছে, ২০২৪ সালে সারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তার প্ল্যাটফর্মগুলোর ওপর এআই—এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। এমনটা সম্ভব হয়েছে মূলত, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলোর কারণে—যা ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডসে সমন্বিত অ্যাকাউন্ট বা বটের মাধ্যমে মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা প্রতিরোধ করতে ডিজাইন করা হয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, মেটার গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের প্রেসিডেন্ট নিক ক্লেগ গতকাল মঙ্গলবার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, জেনারেটিভ এআই তাদের আমাদের ট্রিপওয়্যার এড়াতে খুব একটা কার্যকর টুল ছিল।’

মেটা জানিয়েছে যে,২০২৪ সালে তারা বিশ্বব্যাপী একাধিক নির্বাচনী অপারেশন সেন্টার পরিচালনা করেছে। এই অপারেশন সেন্টার নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় মনিটর করেছে। যেমন যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সময় এআই কীভাবে প্রভাব বিস্তার করে সেই বিষয়টি নজরদারি করেছে।

নিক ক্লেগ বলেন, গত কয়েক বছরে মেটা যে কয়টা ‘গোপন প্রভাব বিস্তার কার্যক্রম’ ভেস্তে দিয়েছে সেগুলো মূলত রাশিয়া, ইরান এবং চীন থেকে পরিচালিত হয়েছিল এবং মেটা এ বছরের মধ্যে প্রায় ২০টি গোপন প্রভাব বিস্তারের কার্যক্রম তাদের প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে সরিয়ে দিয়েছে।

ক্লেগ জানান, রাশিয়া এই কার্যক্রমগুলোর সবচেয়ে বড় উৎস ছিল। ২০১৭ থেকে রাশিয়ার থেকে পরিচালিত এমন মোট ৩৯টি নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এর পরেই রয়েছে ইরান (৩১ টি) এবং চীন (১১ টি)। মোটের ওপর, চলতি বছরের নির্বাচনে এআই দিয়ে তৈরি করা বিভ্রান্তিকর তথ্যের পরিমাণ ছিল কম এবং মেটা দ্রুত এটি চিহ্নিত বা সরিয়ে ফেলতে সক্ষম হয়েছে।

মেটার এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘লোকেরা নিঃসন্দেহে উদ্বিগ্ন ছিল এই ভেবে যে, জেনারেটিভ এআই নির্বাচনে কী প্রভাব ফেলবে। তবে আসলে, এমন প্রভাব ছিল সীমিত এবং এর পরিসরও কম।’ তিনি জানান, রাজনৈতিক প্রার্থীদের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হওয়া এআই কনটেন্ট—যেমন: ডিপফেক ভিডিও এবং অডিও দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও তা জনমতকে বিভ্রান্ত করতে ব্যর্থ হয়েছে।

মার্কিন নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন থেকে এক মাস আগে পর্যন্ত সময়ে মেটা ৫ লাখ ৯০ হাজার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। এসব অনুরোধ করা হয়েছিল মূলত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এবং গভর্নর টিম ওয়ালজের কৃত্রিম ছবি তৈরি করার জন্য।

মার্কিন সাময়িকী দ্য কনভারসেশনে লিখিত এক নিবন্ধে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্রুস শ্নেইয়ার এবং নাথান স্যান্ডার্স লিখেছেন, ‘এটি সত্যি যে, এআই-সৃষ্ট মিথ্যা তথ্য প্রচার যতটা ভয়াবহ হবে বলে ভাবা হয়েছিল, তেমন কিছু হয়নি।’ তবে ক্লেগ এবং অন্যান্যরা সতর্ক করেছেন যে, বিভ্রান্তিকর তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ম্যাসেজিং সাইটগুলোতে চলে গেছে যেগুলোর মালিকানা মেটার নয়, বিশেষ করে টিকটকে। কিছু গবেষণায় টিকটকে রাজনীতি সম্পর্কিত মিথ্যা এআই সৃষ্ট ভিডিওর উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত