ফিলিপাইনে পরিবারের চাপে ‘লাইভ সেক্স শোতে’ বাধ্য হচ্ছে শিশুরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৪: ১৪
আপডেট : ২৯ নভেম্বর ২০২২, ১৫: ৩২

ফিলিপাইনে এক ভীতিকর পরিবেশের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠছে শিশুরা। দেশটিতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে যৌন নির্যাতনের ঘটনা। সেখানকার শিশুদের সরাসরি যৌনকর্মে অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। 

ফিলিপাইনের মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন পশ্চিমা বেশির ভাগ দেশ জেগে থাকে। সেই সময়েই এসব ‘লাইভ সেক্স শো’ বানানো হয় বলে আজ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি। 

এতে বলা হয়, পরিবারের চাপেই শিশুরা এসব কাজে বাধ্য হচ্ছে। তারা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সাত বছর বয়সী এক শিশুর সঙ্গে কথা বলে বিবিসি জানায়, ওই শিশুসহ তার অন্য ভাই-বোনদের ‘লাইভ সেক্স শোতে’ বাধ্য করতেন তাদের মা। তাদের বাবা, চাচা ও চাচিও এসবের অংশ ছিলেন। একপর্যায়ের শিশুদের বাবা স্ত্রী ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানান। 

তদন্তকারীরা জানান, ওই পরিবারের অ্যাকাউন্টে যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ড থেকে টাকা এসেছে। এ ঘটনার কয়েক মাস পর ওই শিশুদের ঠাঁই হয় প্রিডা নামের এক দাতব্য সংস্থায়। সংস্থাটি যৌন নির্যাতনের শিকার শিশুদের সহায়তায় কাজ করে। 

১৭ বছর ধরে প্রিডায় কাজ করেন মিসেস বাল্ডো। তিনি বলেন, ফিলিপাইনে যৌন নির্যাতনের এসব ঘটনা ক্রমেই ‘স্বাভাবিক’ হয়ে উঠছে এবং দেশের অন্যান্য দরিদ্র শ্রেণির বাসিন্দাদের মাঝেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দারিদ্র্য, উচ্চগতির ইন্টারনেট এবং ইংরেজি ভাষায় নির্দেশাবলি গ্রহণের সক্ষমতা—এই তিন কারণে ফিলিপাইনে ‘লাইভ সেক্স শো’ ফুলেফেঁপে উঠছে। এমনকি এটি দিনদিন বিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত হচ্ছে। মূলত করোনা মহামারির দুই বছরেরও বেশি সময় সব বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাড়িতে বন্দী ছিল। ওই সময়ই এসব ঘটনা বেশি ঘটে। বাড়িতে বন্দী থাকা শিশুদের দিয়ে পরিবারগুলো তখন নগদ অর্থ কামাতে মরিয়া হয়ে ওঠে। 

ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেনের একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষার অনুমানে বলা হয়, ফিলিপাইনের প্রায় পাঁচ শিশুর মধ্যে অন্তত একজন যৌন নির্যাতনের ঝুঁকিতে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার প্রায় ২০ লাখ শিশু। 

ইউনিসেফের বিশেষ দূত নিকি প্রিটো-তেওডোরো বলেছেন, ফিলিপাইনে এ সংক্রান্ত ঘটনা চলতি বছর ২৮০ শতাংশ বেড়েছে। 

ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বংবং মার্কোস শিশু যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ’ ঘোষণা করলেও তাঁর কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। 

আরও খবর পড়ুন:

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত