Ajker Patrika

কর্মীর বাহুতে হাত রেখে তোপের মুখে নিউজিল্যান্ডের মন্ত্রীর পদত্যাগ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৭: ৪১
নিউজিল্যান্ডের পদত্যাগ করা বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রু বেইলি। ছবি: সংগৃহীত
নিউজিল্যান্ডের পদত্যাগ করা বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রু বেইলি। ছবি: সংগৃহীত

নিজ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মীর ঊর্ধ্ব বাহু হাত রাখার দায়ে পদত্যাগ করেছেন নিউজিল্যান্ডের বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যান্ড্রু বেইলি। গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এই ঘটনাটিকে তিনি নিজেই ‘অত্যধিক প্রভাব বিস্তারকারী’ আচরণ বলে বর্ণনা করেছেন এবং জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চেয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ সোমবার এক বিবৃতিতে বেইলি বলেন, তিনি এ ঘটনার জন্য ‘গভীরভাবে দুঃখিত।’ তিনি আরও বলেন, তাঁর অধস্তন কর্মীর সঙ্গে তাঁর যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় তা ছিল খুবই ‘প্রাণবন্ত’ এবং এটি কোনো বিতর্ক ছিল না। এই কথোপকথনের সময়ই তিনি ওই কর্মীর বাহুতে হাত রাখেন এবং তাঁকে থামানোর চেষ্টা করেন।

তিনি জানান, মন্ত্রিত্ব ছাড়লেও তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবেন।

পদত্যাগের আগে গত অক্টোবরেও বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন বেইলি। সে সময় তিনি এক ওয়াইন প্রস্তুতকারক এক কর্মীকে ‘লুজার’ বা ‘পরাজিত ব্যক্তি’ বলে কটাক্ষ করেন এবং তাঁর কপালে আঙুল দিয়ে ‘এল’ চিহ্ন দেখান। অভিযোগ, তিনি ওই কর্মীর উদ্দেশে অশালীন শব্দও ব্যবহার করেছিলেন। পরে বেইলি প্রকাশ্যে ক্ষমা চান।

বেইলি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমি আমার মন্ত্রিত্বের দায়িত্বে পরিবর্তন আনতে যথেষ্ট আগ্রহী ছিলাম। গত সপ্তাহে এক কর্মীর সঙ্গে আমার উত্তেজিত কথপোকথন হয়, যেখানে আমি সীমা অতিক্রম করে তাঁর ঊর্ধ্ব বাহুতে হাত রাখি। এটি অনুপযুক্ত ছিল।’ তিনি জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে, তবে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি।

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টোফার লাকসন পরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বেইলি গত শুক্রবার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে ঘটনাটি ঘটে আরও তিন দিন আগে, ১৮ ফেব্রুয়ারি।

লাকসন বলেন, সরকার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই বিষয়টি সামাল দিয়েছে, যা ‘খুব দ্রুত’ এবং ‘খুবই প্রশংসনীয়’। তবে তিনি স্বীকার করেননি যে, অক্টোবরের ওয়াইনারি ঘটনার পরই বেইলিকে পদত্যাগ করতে বলা উচিত ছিল কি না। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করা হয়, বেইলি ভবিষ্যতে আবার মন্ত্রিসভায় ফিরতে পারেন কি না, তিনি বলেন, ‘কখনোই এসব বিষয়ে না বলা যায় না।’

তবে বিরোধী দলীয় নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান ক্রিস হিপকিন্স লাকসনকে ‘অত্যন্ত দুর্বল’ নেতা বলে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, বেইলির এই ঘটনায় সিদ্ধান্ত নিতে পুরো সপ্তাহ পেরিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি। হিপকিন্স আরও বলেন, ‘ক্রিস্টোফার লাকসন মন্ত্রিসভায় নৈতিকতার মান এতটাই নিচে নামিয়ে দিয়েছেন যে, সেটি অতিক্রম করা কারও পক্ষেই আর সম্ভব নয়।’

বেইলি নিজেও বলেন, তিনি প্রথমে পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন এবং আগে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলা তাঁর জন্য কঠিন হতো।

উল্লেখ্য, বেইলি ২০১৪ সালে নিউজিল্যান্ড পার্লামেন্টে ন্যাশনাল পার্টির এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালে লাকসনের সরকার গঠনের পর তিনি বাণিজ্য ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী, ক্ষুদ্র ব্যবসা ও উৎপাদন খাতের মন্ত্রী এবং পরিসংখ্যান মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। চলতি বছরের শুরুর দিকে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের পর তিনি দেশটির জাতীয় দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ সংস্থার দায়িত্বও পান।

লাকসন জানান, ন্যাশনাল পার্টির সিনিয়র হুইপ স্কট সিম্পসন এখন থেকে জাতীয় দুর্ঘটনা ক্ষতিপূরণ সংস্থা এবং বাণিজ্য ও ভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন।

বেইলি হলেন লাকসনের সরকারে প্রথম মন্ত্রী, যিনি নিজে থেকে পদত্যাগ করলেন। সাম্প্রতিক জনমত জরিপ অনুযায়ী, লাকসনের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। বর্তমান সরকার কিছু আদিবাসী মাউরিদের নিয়ে গৃহীত কিছু নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে। অনেকের কাছে এসব নীতি মাউরিদের প্রতি বৈরী বলে মনে হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নির্বাচনের আগে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে কাজ করার ইঙ্গিত বিএনপির

ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ত ও নিয়ম

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ‘বাঁচা-মরা’র ম্যাচের আগে ধাক্কা খেল পাকিস্তান

জয়পুরে সম্প্রীতির নজির, ঈদগাহে আসা মুসলিমদের ওপর ফুল ছিটালেন হিন্দুরা

অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসে অবৈধ যাত্রী ওঠানোর দায়ে ক্যাটারিং সার্ভিসের কার্যক্রম বন্ধ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত