Ajker Patrika

জাপানে মুসলিমদের গোরস্থানের অনুরোধ বিতর্কের মুখে পড়েছে

অনলাইন ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

জাপানের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর হিজিতে মুসলিম সম্প্রদায়ের নিজস্ব কবরস্থান গড়ার একটি অনুরোধ দেশটির সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েছে।

রোববার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট জানিয়েছে, ওই বিরোধিতার শুরুটা হয়েছিল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে। সে সময় ‘বেপ্পু মুসলিম অ্যাসোসিয়েশন’ নামে একটি সংগঠন ধারণা করেছিল, তারা শিগগিরই হিজি শহর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গোরস্থানের জন্য অনুমোদন পেয়ে যাবে।

সংগঠনটির উদ্দেশ্য ছিল, জাপানে প্রচলিত দাহ প্রথার পরিবর্তে মুসলিম ঐতিহ্য অনুযায়ী মুসলিমদের কবর দিয়ে দাফন করা। কিন্তু চার বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই অনুমোদন মেলেনি।

বেপ্পু মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মুহাম্মদ তাহির আব্বাস খান। তিনি ২০০১ সাল থেকে জাপানে বসবাস করছেন এবং এক দশকেরও বেশি সময় ধরে জাপানের নাগরিক। এখনো অনুমোদন না পাওয়ার বিষয়ে তিনি হতাশা প্রকাশ করেছেন।

তাহির আব্বাস বলেন, ‘এটি খুবই সাধারণ একটি অনুরোধ। অথচ ভুয়া খবর ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপপ্রচারের কারণে আমাদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হচ্ছে। অথচ জাপানে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের দাফনের অনুমতি রয়েছে।’

কেবল প্রশাসনিক জটিলতাই নয়, মুহাম্মদ তাহির আব্বাস খানকে একজন ইউটিউবারের ব্যক্তিগত আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে। ওই ইউটিউবার দাবি করেছেন, তাহির জাপানকে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে পরিণত করতে চান এবং কবরস্থানের দাবিটি সেই পরিকল্পনার প্রথম ধাপ।

এই ধরনের প্রতিক্রিয়ার কারণেই মুসলিম সম্প্রদায়ের কবরস্থান নির্মাণের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন তাহির। তিনি বিষয়টি জাপানের আদালতে নিয়ে গেছেন।

জাপানের সংস্কৃতিতে দাহ প্রথা প্রচলিত। এই প্রথা অনুযায়ী, মৃত্যুর পর বেশির ভাগ জাপানি পরিবার তাদের প্রিয়জনদের মরদেহ পুড়িয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করে। ফলে জাপানের সমাজে কবর দেওয়ার ধারণাটি অনেকের কাছে অপরিচিত ও অস্বস্তিকর।

জাপান ধর্মীয় স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু মুসলিমদের নিজস্ব কবরস্থানের জন্য আলাদা জায়গা চাওয়া নিয়েই মূলত অনেকের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করেছে। কিছু ব্যক্তি ও প্ল্যাটফর্ম এই বিষয়টিকে ‘মুসলিম সম্প্রদায়ের আগ্রাসী সম্প্রসারণ’ বলে উপস্থাপন করছেন। তবে তাহির বলেছেন, ‘আমরা শুধু ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী কবরস্থানের অনুমতি চাইছি এর বাইরে কিছু নয়।’

বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়া তাহির খান ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা করছেন। তিনি জানিয়েছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ও চেষ্টা করছে সাধারণ জাপানিদের বোঝাতে যে, এটি কোনো রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রচেষ্টা নয়—এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় স্বাধীনতার অংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত