অনলাইন ডেস্ক
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’
ইন্দোনেশিয়ার উত্তর সুমাত্রা প্রদেশের হালিমা নাসুতিয়ন একসময় ভাবতেন, তাঁর জীবনে সবকিছুই আছে। বছরের পর বছর, তিনি এবং তাঁর স্বামী আগুস সাপুত্রা বিয়ে, পড়াশোনা এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান জাঁকজমকপূর্ণভাবে পালন করেও অর্থ জমাতে পারতেন। পরিবারের ভাইবোনদের ভরণপোষণের ব্যয় বহন করেও প্রতি মাসে তাঁরা প্রায় ৩০ লাখ রুপাইয়া বা ১ হাজার ৯১৭ ডলার সমপরিমাণ অর্থ উপার্জন করতেন।
মাসিক আয়ের এক-চতুর্থাংশ ব্যয় করেও হালিমা-আগুস দম্পতি ইন্দোনেশিয়ার উচ্চমধ্যবিত্ত শ্রেণির সদস্য ছিলেন। দেশটির সরকারি হিসাবে, যারা মাসে অন্তত ২০ লাখ রুপাইয়া (১২৭ ডলার) থেকে ৯ দশমিক ৯৯ লাখ রুপাইয়া (৬৩৮ ডলার) পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে তারাই মধ্যবিত্ত।
কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারির পর সবকিছু বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। হালিমা নাসুতিয়ন আল-জাজিরাকে বলেন, ‘আমরা সবই হারিয়েছে (কোভিড মহামারির কারণে)।’ সেই মহামারির পর পেরিয়ে গেছে আরও কয়েক বছর। কিন্তু এখনো হালিমা-আগুস দম্পতি খাবি খাচ্ছেন তাদের আগের অবস্থানে ফিরে যেতে।
হালিমা-আগুস দম্পতি হলেন ইন্দোনেশিয়ার সেই লাখো পরিবারের একটি যারা মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। দেশটির কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা ছিল ৫ কোটি ৭৩ লাখ। চলতি বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪ কোটি ৭৮ লাখে। তবে উদীয়মান মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংখ্যা একই সময়ে ১২ কোটি ৮৮ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩ কোটি ৭৫ লাখ। এই দুই শ্রেণি ইন্দোনেশিয়ার ২৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব এবং সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এই পতনের প্রধান কারণ। জাতীয় দারিদ্র্য হ্রাস ত্বরান্বিতকরণ টিমের নীতি বিশেষজ্ঞ এগা কুরনিয়া ইয়াজিদ বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তঃসংযুক্ত কারণ মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকোচনের জন্য দায়ী। মধ্যবিত্তরা মূলত কর রাজস্বে বড় অবদান রাখে। কিন্তু তারা খুবই সীমিত সামাজিক সহায়তা পায়। এই সহায়তার বেশির ভাগই চাকরি নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বাস্থ্য বিমার মতো আনুষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানি ভর্তুকির মতো অন্যান্য সহায়তা কার্যক্রমে প্রায়ই ভুলভ্রান্তি হয়। এসব সহায়তা সঠিকভাবে এই শ্রেণির কাছে পৌঁছায় না।’
নাসুতিয়ন ও তাঁর স্বামী মহামারির সময় সরকারি সহায়তার অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। নুসাতিয়ন বলেন, ‘মহামারির সময় কাজ হারানোর পর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে আমরা কোনো সাহায্য পাইনি। গ্রামের স্থানীয় কার্যালয় থেকে প্রতি মাসে মাত্র ৩ লাখ রুপিয়া (প্রায় ১৯ ডলার) সহায়তা পেয়েছি, যা কেবল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেই বেরিয়ে যেত।’
মহামারি শেষে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশের তালিকায় ১০ নম্বরে থাকা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল গতিতে এগিয়ে যেতে শুরু করে। যেখানে দেশটির বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫ শতাংশ। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিও বৈশ্বিক বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মন্থর হওয়ায় দেশটির বাণিজ্যও চাপে পড়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিবিদ ইয়াজিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও জাপানের মতো প্রধান বাণিজ্য অংশীদাররা সংকোচনের মধ্যে রয়েছে। এটি পিএমআই (পারচেজিং ম্যানেজারস ইনডেক্স) সূচকে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে ইন্দোনেশিয়ার পণ্যের আন্তর্জাতিক চাহিদা কমে যাচ্ছে। এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির ওপর আরও চাপ তৈরি করছে।’
আন্তর্জাতিক থিংক ট্যাংক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) অর্থনৈতিক গবেষক আদিনোভা ফাউরি বলেন, ‘ইন্দোনেশিয়ার মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংকট গভীরতর কাঠামোগত সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরে। বিশেষ করে, দেশটিতে শিল্প খাতের অবক্ষয়ের প্রভাব স্পষ্ট।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘যেখানে একসময় শিল্প খাত অধিকাংশ শ্রমিককে নিয়োজিত করত, এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না। শ্রমিকদের বড় একটি অংশ সেবা খাতে স্থানান্তরিত হয়েছে। তবে এর বেশির ভাগই অনানুষ্ঠানিক খাত, যেখানে বেতন কম এবং সামাজিক সুরক্ষা নেই বললেই চলে।’
শ্রমিকদের অবস্থা এবং উৎপাদনশীলতা উন্নয়ন জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন ফাউরি। তিনি বলেন, ‘ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশের মতো দেশের সঙ্গে শুধু কম মজুরির ভিত্তিতে প্রতিযোগিতা সম্ভব নয়, বরং শ্রমিকদের অবস্থা ও নিয়মকানুন উন্নত করতে হবে। এতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো নতুন বাজারে প্রবেশ করা সম্ভব হবে, যেখানে উন্নত শ্রম মানদণ্ডকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।’
ফাউরি আরও বলেন, ‘উৎপাদনশীলতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শুধু দক্ষতার দিক থেকে নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যগত অবস্থার দিক থেকেও। অন্যান্য দেশ থেকে শিখতে হবে। গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ এবং উদ্ভাবনের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। ”
এদিকে, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় প্রাবোও ৮ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য ও শিশুদের অপুষ্টি দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি স্কুলে বিনা মূল্যে খাবারের কর্মসূচি চালু করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
কিন্তু প্রতিশ্রুতি আর বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ, কোভিডের পর দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নাসুতিয়ন এবং তাঁর পরিবার এখনো তাদের বিপর্যস্ত জীবন গুছানোর চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁরা তাদের পরিবারের জন্য কিস্তিতে ফার্নিচার ও অন্যান্য সামগ্রী কিনেছিলেন। কিন্তু এসব কেনার পরই তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তারা আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছেন।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমরা আমাদের গাড়ি, জমি বিক্রি করেছি এবং বাড়ি বন্ধক দিয়েছি। সব শেষ। আমাদের ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।’ এরপর, নাসুতিয়নের স্বামী জীবিকার তাগিদে অন্য একটি কাজ নিতে বাধ্য হন। তিনি পাম ফল সংগ্রহের কাজে যোগ দেন। মাসিক আয় মাত্র ২৮ লাখ রুপাইয়া (প্রায় ১৭৯ ডলার)।
নাসুতিয়ন নিজেও একটি পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ নেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত, সপ্তাহে ছয় দিন কাজ করেন। মাসিক বেতন মাত্র ১০ লাখ রুপাইয়া। বর্তমানে এই দম্পতির মাসিক খরচ দুই মিলিয়ন রুপাইয়ার (প্রায় ১২৭ ডলার) মধ্যে সীমাবদ্ধ। এই পরিমাণ খরচ মধ্যবিত্তের জীবনের জন্য ন্যূনতম সীমা বলে বিবেচিত ইন্দোনেশিয়ায়।
নাসুতিয়ন বলেন, ‘আমাদের জীবন এখন একেবারেই ভিন্ন। আমরা এখন আগের মতো স্থিতিশীল নই। আবার ব্যবসা শুরু করতে পুঁজির প্রয়োজন, কিন্তু সঞ্চয় করার মতো অর্থ নেই।’ তিনি বলেন, ‘আমরা কোনোভাবে বেঁচে থাকার মতো অর্থ উপার্জন করছি। জীবন চড়াই-উতরাইয়ে ভরা। আশা করি, পরিস্থিতি একদিন বদলাবে। আল্লাহ ভরসা।’
অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী হলেও সম্মতির ভিত্তিতে তাঁর সঙ্গে যৌনসঙ্গম ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে বলে রায় দিয়েছে মুম্বাই হাইকোর্ট। আইন অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে সম্মতিকে বৈধতার জন্য যুক্তি হিসেবে প্রদর্শন গ্রহণযোগ্য হবে না।
১ ঘণ্টা আগেএখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে। অতিরিক্ত ভিড় থেকে মসজিদের কার্যক্রম বিঘ্ন হওয়া ঠেকাতে এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্য সংরক্ষণের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
২ ঘণ্টা আগেযুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের সদস্যদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন প্রায় ৯০ জন ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা। অধিকৃত ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনবিরোধী সহিংসতার অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক চিঠিতে তাঁরা এ আহ্বান জানান। বার্তা
৪ ঘণ্টা আগেশ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনূঢ়া কুমারা দিসানায়েকের নেতৃত্বে বামপন্থী দল ন্যাশনাল পিপল পাওয়ার (এনপিপি) আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় লাভ করেছে। এই জয়ের মার্ক্সবাদী প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকে কঠোর ব্যয় সংকোচন নীতি শিথিল করার জন্য ম্যান্ডেট পেয়েছেন
৫ ঘণ্টা আগে