Ajker Patrika

ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের পথে আফগানিস্তান

অনলাইন ডেস্ক
ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের পথে আফগানিস্তান

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সৈন্যরা আফগানিস্তান ছেড়ে যেতে না যেতেই আবারও অশান্ত হয়ে উঠেছে দেশটি। দীর্ঘ সময় ধরে ওত পেতে থাকা তালেবানরা দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিতে এবার মরিয়া। আফগান জেলাগুলোর প্রায় অর্ধেক এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। এ অবস্থায় গত ১ আগস্ট হুংকার ছেড়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানিও। দেশটির সংসদে তিনি দাবি করেছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই তালেবানদের ঠেকিয়ে দেবে সরকারি বাহিনী! 

আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে–দুই পক্ষই এখন সমানে সমান। এ অবস্থায় সামনের দিনগুলোতে ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের দিকেই যাচ্ছে আফগানিস্তান। এই যুদ্ধে কে জয়ী হবে তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়। তবে, দুটি পক্ষের শক্তি ও সামর্থ্যের একটি তুলনা করা যেতে পারে। 

দেশের প্রায় অর্ধেক জেলার নিয়ন্ত্রণ নিলেও তালেবানের বিজয় এত সহজ নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শক্তিমত্তা ও সম্পদে আফগান বাহিনী এখনো তালেবানের চেয়ে এগিয়ে। তা ছাড়া সরকারি বাহিনী এখনো গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোর নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। 

লোকবলের ক্ষেত্রে দুই পক্ষের তুলনা করলে দেখা যায়–সেনাবাহিনী, স্পেশাল ফোর্স, বিমানবাহিনী, পুলিশ আর গোয়েন্দা বাহিনী মিলিয়ে আফগান বাহিনীতে ৩ লাখ ৭ হাজারের বেশি সদস্য রয়েছে। গত সপ্তাহে এক মার্কিন জেনারেল এমন তথ্য জানিয়েছেন। বিপরীতে তালেবান যোদ্ধাদের প্রকৃত সংখ্যাটি এখনো অজানা। তবে গত বছর জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিল ধারণা করেছিল–সংখ্যাটি ৫৫ থেকে ৮৫ হাজারের মধ্যে হতে পারে। 
বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র দেশ হলেও আফগান সামরিক খাতে প্রতি বছর ৫০০ থেকে ৬০০ কোটি ডলার খরচ হয়। এই অর্থের ৭৫ ভাগই দেয় যুক্তরাষ্ট্র। 

তালেবানদের আয়–ব্যয় নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। জাতিসংঘ পর্যবেক্ষকদের ধারণা–তাদের আয় ৩০ থেকে ১৫০ কোটি ডলারের মধ্যে। নিজেদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে হেরোইনের কাঁচামাল পপি চাষ করেই তাদের বেশির ভাগ অর্থ আসে। মাদক ছাড়াও নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড এবং নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে কর আদায় করেও তারা বিপুল আয় করে। বিদেশি সহায়তা পাওয়ার কথাও শোনা যায়। 

এদিকে, তালেবান সরকারকে উচ্ছেদের পর ২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত আফগান বাহিনীকে কয়েক হাজার কোটি ডলারের বিপুল অস্ত্রের মজুত গড়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ফলে তালেবানদের চেয়ে আফগান বাহিনীর অস্ত্রশস্ত্র বেশ আধুনিক। আছে বিপুলসংখ্যক স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, রাতে স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যায় এমন চশমা। ভারী সামরিক যান, আর্টিলারি এবং ছোট আকারের বেশ কিছু গোয়েন্দা ড্রোনও আছে তাদের। 

আরেকটি ব্যাপার স্থল–আফগান পক্ষের বিমানবাহিনী, যার ছিটে ফোটাও নেই তালেবানদের। আফগানদের ১৬৭টি যুদ্ধবিমান রয়েছে। আছে বেশ কিছু আক্রমণাত্মক হেলিকপ্টারও। 

সরকারি বাহিনীর তুলনায় তালেবানদের অস্ত্রের মজুত খুবই কম। তাদের প্রধান অস্ত্রই হল একে–৪৭ রাইফেল। কয়েক দশকের সংঘাতে এই অস্ত্রের বন্যা বয়ে গেছে আফগানিস্তানে। একে–৪৭ ছাড়াও তালেবানদের হাতে আছে স্নাইপার রাইফেল এবং মেশিনগান। আছে রকেটাকৃতির গ্রেনেডও। এগুলো দিয়ে যুদ্ধবিমান এবং ট্যাংকের মত ভারী যান ধ্বংস করায় বেশ কৃতিত্ব আছে তাদের। আরেকটি অস্ত্রের কথা না বললেই নয়; সেটি হল–আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী। গত দুই দশক আফগানিস্তানে বিদেশি সৈন্যদের আতঙ্ক ছিল এই হামলাকারীরা। 

বিভিন্ন দিক তুলনা করলে আফগান সরকারি বাহিনীকেই এগিয়ে রাখতে হয়। তবে যুদ্ধের মাঠ সব সময়ই অনিশ্চিত। আর যুদ্ধ মানেই প্রাণ ও সম্পদের সীমাহীন ক্ষতি। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বদলাচ্ছে বিসিএসের সিলেবাস

আত্মীয়দেরই শুধু চেনেন প্রকৌশলী রাশেদুল

জাবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় মদদ: ৯ শিক্ষক বরখাস্ত, উপাচার্যের পেনশন বাতিল

বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র

সংখ্যালঘু নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান তুলসী গ্যাবার্ডের মন্তব্যের প্রতিবাদ জানাল সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত