Ajker Patrika

আঞ্চলিক সহযোগিতা: মধ্যপ্রাচ্যে নজর দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর

অনলাইন ডেস্ক
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, অভ্যন্তরীণ বৈষম্য ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে থাকা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান ও মালদ্বীপকে বিশ্বব্যাপী অতি গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অঞ্চল হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু এ অঞ্চলের রাষ্ট্রগুলোর নিজেদের মধ্যে ঐক্য ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা প্রত্যাশার চেয়ে কম। বিশাল জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও বৃহৎ বাজার থাকা সত্ত্বেও এসব দেশের পারস্পরিক বাণিজ্য আন্তর্জাতিক মাপকাঠিতে উল্লেখযোগ্য নয়। এমন বাস্তবতায় দৃশ্যত মধ্যপ্রাচ্যের দিকে ঝুঁকছে তারা। এতে নিজ অঞ্চলে সম্ভাব্য ঐক্য ও বাণিজ্য সহযোগিতা আরও অনিশ্চয়তার মুখে পড়বে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সামগ্রিক বাণিজ্য ২৩ বিলিয়ন ডলার। এটি প্রতিশ্রুত ও সম্ভাব্য ৬৭ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় অনেক কম, যেখানে চীনের সঙ্গে ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ১৩০ বিলিয়নের বেশি।

উপসাগরীয় দেশগুলোতে ১ কোটি ৭০ লাখের বেশি দক্ষিণ এশীয় কর্মী কর্মরত। তাঁদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রায় ১৯০ বিলিয়ন ডলার, যা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জিডিপিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দক্ষিণ এশিয়ার অভ্যন্তরীণ চাহিদার প্রায় ৮০ শতাংশ এলএনজি আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার থেকে। আবার মধ্যপ্রাচ্যে খাদ্য সরবরাহের বড় উৎস পাকিস্তান ও ভারত।

দ্য আরব গালফ স্টেটস ইনস্টিটিউট ইন ওয়াশিংটনে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়াকে ভূরাজনৈতিক দিক থেকে ‘প্রাচীন এশিয়া’ বলা যেতে পারে। এ অঞ্চল খনিজ জ্বালানিসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে একটি সেতুবন্ধের ভূমিকা পালন করে। উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে এ সম্পর্ক যতই কৌশলগত হোক না কেন, এ অঞ্চল অভ্যন্তরীণভাবে বেশ দুর্বল। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ছাড়াও অঞ্চলটিকে নানা ধরনের অভ্যন্তরীণ সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২৪ সালে ৬ দশমিক ৩ এবং ২০২৫ সালে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। তবে এ অঞ্চলের মোট অর্থনীতির প্রায় ৮০ শতাংশ অবদান রাখে ভারত। অন্যদিকে দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি সরকারি ঋণ ২০১২ সালে ছিল ২২১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার, সেটি ২০২২ সালে বেড়ে হয় ৪১৮ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার। বিপুল ঋণের চাপে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার মতো দেশের অর্থনীতি রীতিমতো খাদের কিনারায় পৌঁছেছে। এ তিন দেশের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও উচ্চ বৈদেশিক ঋণের কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও ধীর হয়ে পড়েছে।

ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের কারণে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) সক্রিয় হচ্ছে না। বাংলাদেশ বারবার এটিকে সক্রিয় করার জন্য আহ্বান জানালেও মূলত ভারতের অনীহার কারণে এ ক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ দেখা যাচ্ছে না।

সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করতে পাকিস্তানের সঙ্গে কাজ করছে বাংলাদেশ। বিপরীতে সার্ককে নিষ্ক্রিয় রেখে ভারতের দৃষ্টি বিমসটেকের (বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) দিকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত