যুক্তরাষ্ট্রকে তালেবানের কঠোর হুঁশিয়ারি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২১, ০৭: ০০

আফগানিস্তানে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ শহর আর প্রদেশ দখলে নিচ্ছে তালেবান বাহিনী। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, দুই দশক পর আফগানিস্তানের মাটিতে তাদের পুনরুত্থান ঘটতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই তারা মার্কিন যে কোন ধরনের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে সাবধান হতে বলেছে। রোববার কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল–জাজিরাকে এমন হুঁশিয়ারির কথা বলেন তালেবান মুখপাত্র।

তালেবান রাজনৈতিক শাখার মুখপাত্র সাইদ মুহাম্মাদ নাইম ওয়ারদাক দাবি করেছেন, আফগান সরকারের সঙ্গে তাদের কোন অস্ত্র বিরতির চুক্তি হয়নি। এ অবস্থায় তালেবানের সামরিক বিজয় অব্যাহত আছে। 

রোববার কুন্দুজ শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরই এসব মন্তব্য করেন তালেবান মুখপাত্র। কৌশলগত দিক থেকে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় কুন্দুজ প্রদেশের রাজধানী শহরটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বলা হচ্ছে, গত মে মাস থেকে অগ্রসরমাণ তালেবান বাহিনীর কাছে এখন পর্যন্ত কুন্দুজ শহর দখল করাই সবচেয়ে বড় অর্জন। একই সঙ্গে এই ঘটনাটি আফগান সরকারের জন্যও একটি বড় আঘাত।

কুন্দুজের রাজধানী দখলের আগে গত শুক্রবার ইরানের সীমান্তবর্তী প্রাদেশিক রাজধানী জারাঞ্জও দখল করে নিয়েছে তালেবানরা। তার পরদিনই অর্থাৎ শনিবার তুর্কমিনিস্তান সীমান্তবর্তী আরেক প্রাদেশিক রাজধানী শেরবার্গানের দখলও নেয় তালেবানরা। তিন দিনের মধ্যেই তিনটি প্রাদেশিক রাজধানীর দখল নিয়ে তালেবানদের মনোবল এখন তুঙ্গে। 
এদিকে, রোববারই আরেক প্রাদেশিক রাজধানী শের–ই–পাল দখলেরও কাছাকাছি ছিল বাহিনীটি। তালেবানের এই অগ্রযাত্রা দেশটির সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। যে কোন মুহূর্তে মূল রাজধানী কাবুল দখল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

এদিকে, তালেবানের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে গত সপ্তাহ থেকেই বিমান হামলা বাড়িয়েছে মার্কিন বাহিনী। আফগানিস্তান ছেড়ে গেলেও দেশটির সরকারি বাহিনীর সমর্থনে এ ধরনের হামলা অব্যাহত রাখার ঘোষণা আগেই দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তালেবানরা অভিযোগ করেছে, হেলমান্দ প্রদেশে একটি হাসপাতাল ও একটি স্কুল সহ বেশ কয়েকটি সাধারণ স্থাপনায় বোমাবর্ষণ করেছে মার্কিন বাহিনী। তবে তাদের এই অভিযোগের সত্যাসত্য যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে সিএনএন।

গতকাল সোমবার সিএনএন–এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়– তালেবানদের লক্ষ্য করে মার্কিন বিমান হামলার খবরটি রোববার নিশ্চিত করেছেন মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের মুখপাত্র মেজর নিকোল ফ্যারেরা। তিনি বলেন, ‘আমাদের আফগান সহযোগিদের নিরাপত্তা দিতে বেশ কয়েকটি বিমান হামলা চালানো হয়েছে।’

তবে, এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র সাইদ মুহাম্মাদ নাইম ওয়ারদাক। এ ছাড়াও তিনি অভিযোগ করেছেন, সাম্প্রতিক যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীই দায়ী। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীই একতরফাভাবে দেশের বিভিন্ন প্রদেশে যুদ্ধ শুরু করেছিল। আর তাই এর জবাব দিতে তালেবানরাও এবার প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করেছে।’

এদিকে, বিভিন্ন শহর দখল করে নেওয়ার তালেবান প্রবণতাকে তীব্র সমালোচনা করেছে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস। দাবি করা হয়– এ ধরনের আগ্রাসী মনোভব দোহার শান্তি চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত