বিক্ষোভ-সহিংসতায় এক বছর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
Thumbnail image

গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন শুরু হওয়ার আগমুহূর্তে অং সান সু চির সরকারকে উৎখাত করে দেশটির ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। এর মধ্য দিয়ে অবসান ঘটে সংক্ষিপ্ত এক গণতান্ত্রিক যাত্রার। নতুন করে তৈরি হয় রক্তপাতের মঞ্চ। অভ্যুত্থানের পরপরই মিয়ানমারে শুরু হয় গণ-আন্দোলন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দমন-পীড়ন শুরু করে জান্তা সরকার। বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গেও সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়, যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এসবের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট নানা সংকট সঙ্গে নিয়েই আজ মঙ্গলবার সেনা অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্ণ করল মিয়ানমার।

স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর তথ্যানুসারে, ক্ষমতা দখলের পর থেকে জান্তার চলমান অভিযানে এ পর্যন্ত দেশটির দেড় হাজারের বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১১ হাজারের বেশি মানুষকে। আর সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, অর্থনৈতিক এবং সামাজিকভাবে ‘ধ্বংস’ করা সংকটগুলো থেকে মুক্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আপাতত মিয়ানমারের সামনে নেই। এ ছাড়া দেশটির হাজার হাজার নাগরিক জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নিচ্ছেন।

প্রতিশোধের ভয়ে নাম প্রকাশ না করা ইয়াঙ্গুনের এক ব্যবসায়ী সংবাদমাধ্যম জাপান টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এখনো অন্ধকার এক যুগে বাস করছি। আমাদের লক্ষ্য, ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই। আমাদের এখন ভাবতে হয়, কীভাবে আমরা এই সামরিক একনায়কত্বের অধীন দৈনন্দিন জীবনসংগ্রাম করব।’

এদিকে দেশটির পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) ও সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ এখন প্রায় নিয়মিত ঘটনা, যা থামার কোনো লক্ষণ নেই। মিয়ানমারে আইনপ্রণেতাদের একটি ছায়া গোষ্ঠীর দাবি, গত বছরের জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে পিডিএফের সঙ্গে লড়াইয়ে প্রায় ৩ হাজার জান্তা সেনা নিহত হয়েছে। আর জান্তা বলছে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ১৬৮ জন সেনা ও পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।

মিয়ানমারের ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের সিনিয়র উপদেষ্টা রিচার্ড হরসির মতে, জান্তা সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জের একটি বছর ছিল সংঘাতপূর্ণ ২০২১, যার বড় বড় প্রভাব পড়েছে সেনাদের মনোবলের ওপর। এমনকি নতুন সেনা সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রেও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে জান্তা।

তবে এই চ্যালেঞ্জগুলো মিয়ানমার সামরিক বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতে বা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবে—এমন সম্ভাবনাও খুব কম বলে মনে করেন রিচার্ড। কারণ, গত জানুয়ারিতেও অভ্যুত্থানবিরোধী লড়াই প্রতিরোধে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় একটি রাজ্যে বিমান ও কামান হামলার নির্দেশ দেয় জান্তা সরকার।

এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির রুদ্ধদ্বার বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে সু চির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সরকারি গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘনসহ ১১টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার সব কটিতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর ১০০ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। এর মধ্যে নির্বাচনী জালিয়াতির মামলার বিচার শুরু হতে পারে আগামী মাসে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

শপথ নিয়েই বাইডেনের নীতি বাতিল ও ১০০ নির্বাহী আদেশের ঘোষণা ট্রাম্পের

শাহজালাল বিমানবন্দরে চাকরি নেননি মনোজ কুমার, বিজ্ঞাপনচিত্র নিয়ে বিভ্রান্তি

বিপিএলে আতশি কাচের নিচে চল্লিশের বেশি ক্রিকেটার

নতুন ভোটার যাচাই: জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পাচ্ছেন শিক্ষকেরা

বিদ্যালয়ে একই পরিবারের ১৬ জনের চাকরি, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত