বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১০ দেশে প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে স্থূলতার মহামারি: গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ৪৭
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৯: ১৩

এশিয়ার প্রজননক্ষম নারীদের মধ্যে স্থূলতার ক্রমবর্ধমান প্রবণতা একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। দ্রুত নগরায়ণ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনের ফলেই এমনটি হচ্ছে বলে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। গবেষকেরা দেখেছেন, বাংলাদেশসহ কম্বোডিয়া, ভারত, কিরগিজস্তান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তিমোর লেসতের মতো এশিয়ার ১০টি দেশে স্থূলতার এই প্রবণতা মহামারি আকার ধারণ করেছে। 

আজ রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) নেচার জার্নালে প্রকাশিত ওই গবেষণাপত্রে ২০০০ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে এশিয়ার ১০টি দেশের তথ্য বিশ্লেষণ করে স্থূলতার প্রবণতা এবং এর নেপথ্যে সামাজিক কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

এই সম্পর্কিত একটি সমীক্ষায় গবেষকেরা এশিয়ার দেশগুলোতে ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী (প্রজননে সক্ষম নারী) ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৪৯৪ জন নারীর ওজনসহ বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। এর মাধ্যমে দেশগুলোতে স্থূলতার উল্লেখযোগ্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পাওয়া গেছে। উদাহরণস্বরূপ, পাকিস্তানে স্থূলতার হার ২০১২ সালে যেখানে ১৭ দশশিক৩ শতাংশ ছিল, ২০১৮ সালে তা বেড়ে ২১ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। এই প্রবণতাটি স্বাস্থ্যগত পরিস্থিতির একটি বিস্তৃত পরিবর্তন নির্দেশ করে। যেখানে স্থূলতা এবং অপুষ্টি সহাবস্থান করে, বিশেষ করে দ্রুত নগরায়ণ হচ্ছে এমন অঞ্চলগুলোতে এ ধরনের সমস্যা প্রকট। 

সমীক্ষার ফলাফলগুলো স্থূলতার পেছনে ভূমিকা রয়েছে এমন পাঁচটি গুরুতর ঝুঁকিকে চিহ্নিত করেছে। এগুলো হলো—বিবাহিত হওয়া, ৩৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সী হওয়া, ধনী পরিবারে বসবাস করা, নিয়মিত টেলিভিশন দেখা এবং শহরাঞ্চলে বসবাস করা। এই কারণগুলো প্রজননক্ষম নারীদের স্থূলতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ৭৩ দশমিক ৩ শতাংশ অবদান রাখে। 

আরেকটি বিষয় হলো, গবেষণায় শিক্ষা এবং পরিবারের আর্থিক অবস্থার মধ্যে মিথস্ক্রিয়া কোনো নারীর স্থূলতার পেছনে একটি মূল বিবেচ্য হিসেবে উঠে এসেছে। দেখা গেছে, ধনী পরিবারের মাধ্যমিক বা উচ্চশিক্ষার স্তর পার হওয়া নারীদের মধ্যে তাঁদের চেয়ে কম শিক্ষিতদের তুলনায় স্থূলতার হার কম। এর ফলে এটিই প্রতীয়মান হয় যে, শিক্ষা নারীকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন বেছে নিতে সক্ষম করে। ফলে শিক্ষিত নারীর মাঝে স্থূলতার ঝুঁকি কম। তবে গবেষণায় ধনী পরিবারের শিক্ষিত নারীদের মধ্যে কম ওজনের (আন্ডার ওয়েট) ঝুঁকিও উল্লেখ করা হয়েছে। 

গবেষণার ফলাফলগুলো এশিয়ার এই দেশগুলোকে জরুরি নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেয়; বিশেষ করে পাকিস্তানের মতো দেশগুলোতে, যেখানে স্থূলতার হার দ্রুত বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত শিক্ষার উদ্যোগ এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তনগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বিশেষ করে, শহুরে এলাকাগুলোতে, যেখানে অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং অলস জীবনযাত্রার নানাবিধ উপাদান রয়েছে। 

এ ছাড়া পুষ্টি শিক্ষায় বিনিয়োগ এবং শারীরিক কাজকর্মে উদ্বুদ্ধকরণ বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উল্লেখযোগ্য উত্তরণ ঘটাতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, স্থূলতা প্রতিরোধে ব্যয় করা প্রতিটি ডলার, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সাড়ে ৫ ডলারের বেশি অর্জন বয়ে আনতে পারে। এই ধরনের কর্মসূচি শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের উন্নতি করে না, বরং স্থূলতা–সম্পর্কিত রোগের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যসেবা খরচও কমিয়ে দিতে পারে। এর ফলে জাতীয় অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতাও শক্তিশালী হতে পারে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত