প্রেম ও যৌনতাবিহীন এক বিয়ে পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে জাপানে

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১০ মে ২০২৪, ১৮: ৪৭

নতুন এই বিয়ে পদ্ধতির ইংরেজি নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ’। বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় ‘বন্ধুত্বের বিয়ে’। বিগত বছরগুলোতে এই বিয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে জাপানে। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই বিয়ে হলো এমন একটি সম্পর্ক যেখানে দুজন মানুষ প্রেম-ভালোবাসা কিংবা যৌন আকর্ষণ ছাড়াই একে অপরের আধ্যাত্মিক সঙ্গী হয়। জাপানের ১২ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ এই ধরনের সম্পর্ককে বেছে নিয়েছেন। প্রচলিত বিয়ে পদ্ধতির প্রতি বীতশ্রদ্ধ যৌনকাঙ্ক্ষা ছাড়া মানুষ, সমকামী এবং বিষমকামী সব ধরনের মানুষই বন্ধুত্বের বিয়ে করতে পারেন। 

ফ্রেন্ডশিপ বিয়ে নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করা একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ‘কালারস’। এই প্রতিষ্ঠানটির পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৫ সালের মার্চ থেকে জাপানের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ৫০০ মানুষ এই বিয়ে করেছেন। তারা পরিবারও গঠন করেছেন। এমনকি কোনো কোনো দম্পতি সন্তানও বড় করছেন। 

‘ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ’ আসলে কী? 
ফ্রেন্ডশিপ ম্যারেজ হলো এমন একটি সম্পর্ক যেখানে দুজন মানুষ আইনিভাবে দাম্পত্য জীবনে আবদ্ধ হন। তবে তাঁদের মধ্যে কোনো ভালোবাসার আবেগ থাকে না এবং তাঁদের মধ্যে কোনো যৌন সম্পর্কও গড়ে ওঠে না। তাঁরা একসঙ্গে বসবাস করতে পারেন, কিংবা আলাদাভাবেও। স্পার্ম ডোনেশানের মাধ্যমে কৃত্রিম উপায়ে তাঁরা সন্তান নেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এই সম্পর্কের মানুষেরা চাইলে বোঝাপড়ার মাধ্যমে অন্য কারও সঙ্গে বিয়ে ছাড়াই কোনো আবেগপূর্ণ সম্পর্কে লিপ্ত হতে পারেন। 

ফ্রেন্ডশিপ বিয়ের মাধ্যমে প্রায় ৩ বছর ধরে দাম্পত্য জীবন কাটানো এক ব্যক্তি এই বিয়ে সম্পর্কে বলেন, ‘এই বিয়ের মাধ্যমে আসলে একই রকম চাহিদা থাকা একজন রুমমেটের অনুসন্ধান করা হয়।’ 

এমন সম্পর্কে থাকা এক নারী বলেন, ‘আমি আসলে কারও বান্ধবী হওয়ার উপযুক্ত নই। কিন্তু আমি একজন ভালো বন্ধু হতে পারি। আমি শুধু চেয়েছিলাম আমার মতোই অনুভূতি থাকা কোনো মানুষকে। কিছু বিষয় আমরা দুজনই উপভোগ করব। গল্প আর হাসিতে যার সঙ্গে ভালো সময় কাটবে।’ 

কীভাবে কাজ করে এই বিয়ে? 
এই বিয়ে প্রচলিত বিয়ের চেয়ে কিছুটা আলাদা। প্রচলিত বিয়েতে যেমন একজন মানুষ তাঁর ভালোবাসার মানুষ কিংবা বেস্ট ফ্রেন্ডকে বিয়ে করেন, অন্যদিকে ফ্রেন্ডশিপ বিয়েতে দুজন মানুষ সাধারণত বিয়ের আগে একে অপরের সঙ্গে দেখা করেন। বিয়ের আগে তাঁরা কয়েক ঘণ্টা থেকে শুরু করে কয়েক দিন পর্যন্তও একসঙ্গে কাটাতে পারেন। মূলত এই সময়ের মধ্যে তাঁরা তাঁদের দাম্পত্য জীবন কীভাবে কাটাবেন সেই সম্পর্কে বোঝাপড়া করেন। যেমন—তাঁরা একসঙ্গে কোথায় খাবেন, খরচগুলো কীভাবে ভাগাভাগি করবেন, কে লন্ড্রি করবেন আর ফ্রিজের ব্যবস্থাপনাই বা কি হবে। 

এই ধরনের বিয়ে নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান ‘কালারস’ জানিয়েছে, কোনো আবেগপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলেও বিয়ের আগে দুজনের আলোচনার ফলে প্রায় ৮০ ভাগ দম্পতি সুখী জীবনযাপন করেন। কিছু দম্পতি কৃত্রিম উপায়ে সন্তানেরও জন্ম দেন এবং বড় করে তোলেন। 

মূলত কারা এই বিয়েতে আগ্রহী হচ্ছে? 
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যারা এই ধরনের বিয়েতে আবদ্ধ হচ্ছে তাঁদের বয়সের গড় ৩২.৫ বছর। এই বিয়েতে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে যৌন আকাঙ্ক্ষা না থাকা মানুষ এবং প্রচলিত বিয়ে এড়াতে চাওয়া সমকামীরা। 

আরেকটি বিষয় হলো—কিছু সমকামী, যারা প্রচলিত বিয়ে পছন্দ করেন না কিন্তু এসবের জন্য সামাজিক চাপের মধ্যে রয়েছেন, মূলত তাঁরাই এই নতুন পন্থা বেছে নিচ্ছেন। 

এই ধরনের সম্পর্ক কখনো কখনো বিবাহবিচ্ছেদেও গড়ায়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত