তিব্বতের ভিক্ষুরাও বলছেন তাঁদের আধ্যাত্মিক নেতা সি চিন পিং

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১২ জুন ২০২১, ১৪: ৪৭

ঢাকা: নীল আকাশ, ছোট–বড় পাহাড় আর ঐতিহ্যবাহী পোতালা প্রাসাদ। সেখানে রাখা হয়েছে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের পাশাপাশি কমিউনিস্ট পার্টির অন্য নেতাদের ছবি। শুধু পোতালা প্রাসাদেই নয় তিব্বতের বিভিন্ন শ্রেণিকক্ষ, রাস্তা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, শয়নকক্ষের মধ্যেও টাঙানো রয়েছে সি চিন পিংদের ছবি।

গত সপ্তাহে তিব্বত সফরে গিয়ে এমনটি দেখেছেন বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন সাংবাদিক। এই সফরে সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও ছিলেন।

এ বছর তিব্বত দখলের ৭০ বছর উদ্‌যাপন করেছে চীন। সেখানে একটি রাজনৈতিক শিক্ষার প্রচার প্রসারে কাজ করছে সি চিন পিং সরকার। চীনের কর্মকর্তারা বলছেন, চীনের ভবিষ্যৎ এই প্রচারণার ওপর নির্ভর করছে। তিব্বতে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষের বাস। যাদের মধ্যে বেশির ভাগই জাতিগতভাবে তিব্বতি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সাংবাদিকদের পাঁচ দিনব্যাপী এই সফরে চীন সরকার সেসব ব্যক্তির সাক্ষাৎকার নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে যাঁরা চীন সরকারের প্রতি অনুগত। তিব্বতের রাজধানী লাসার ঐতিহাসিক জোখাং মন্দিরে লাকপা নামের ভিক্ষুকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান, তাঁর আধ্যাত্মিক নেতার নাম সি। যখন লাকপার সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছিল তখন তাঁকে চোখে চোখে রাখছিল চীনের সরকারি বাহিনী। সাক্ষাৎকারে লাকপা বলেন, আমি মাতাল নই। আমি স্বাধীনভাবে কথা বলছি।

তিব্বতের সব জায়গাতেই সি চিন পিংয়ের ছবি এবং পোস্টার দেখেছেন রয়টার্সের প্রতিবেদক। তবে কখন এই পোস্টার এবং ছবি টাঙানো হয়েছে এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের তিব্বত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ রবার্ট বার্নেট বলেন, পোস্টারগুলো একটি বিশাল রাজনৈতিক শিক্ষামূলক কর্মসূচির অংশ। যা ‘দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা বোধ’ বাড়াতে করা হচ্ছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, চীনের কেন্দ্রীয় সরকারের তত্ত্বাবধানে তিব্বতের অর্থনীতি এবং সমাজের অর্জন দুর্দান্ত। সেখানকার সব নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার চীনের আইন এবং সংবিধান দ্বারা সংরক্ষিত।

রয়টার্সের সাংবাদিকের এই তিব্বত ভ্রমণের সময় চীনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে চীনের পতাকা এবং সি-এর ছবি দেশপ্রেমের প্রতীক হিসেবে টাঙানো হয়েছে।

চীন বলছে, তাঁরা শান্তিপূর্ণভাবে ১৯৫১ সালে তিব্বত স্বাধীন করেন। ১৯৫৯ সালে আধ্যাত্মিক নেতা দালাইলামা তিব্বত ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি একটি নির্বাসিত সরকারও গঠন করেন। চীন দালাইলামাকে বিপজ্জনক বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে মনে করে। রয়টার্সের সাংবাদিক পুরো তিব্বতের কোথাও দালাইলামার ছবি দেখেনি।

তিব্বতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো তিব্বত কলেজ অব বুড্ডিজম। এটি তিব্বতের রাজধানী লাসায় অবস্থিত। এই প্রতিষ্ঠানের প্রত্যেক শ্রেণিকক্ষে সি-এর ছবি দেখেছেন রয়টার্সের প্রতিবেদক। তিব্বত কলেজ অব বুড্ডিজমের সহকারী পরিচালক কেলসাং ওয়ানদুই বলেন, আমরা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে অভিভূত। আমাদের অবশ্যই রাজনীতি শিখতে হবে। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ৪০ শতাংশ পড়াশোনাই সংস্কৃতি এবং রাজনীতি বিষয়ক।

কেলসাং আরও বলেন, আগামী জুলাইয়ের ১ তরিখ ভিক্ষুরা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির ১০০ বছর উদযাপন করবেন।

তিব্বতের নির্বাসিত সরকার দ্য সেন্ট্রাল তিব্বতিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের তথ্য অনুযায়ী, তিব্বতের প্রায় দেড় লাখ নাগরিক নির্বাসিত। তিব্বতকে ঘৃণা করার জন্য সেখানে রাজনৈতিক শিক্ষার প্রচার প্রসার করা হচ্ছে।

লাসায় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক মতাদর্শ বিষয়ক একটি ক্লাস পর্যবেক্ষণ করেছেন রয়টার্সের প্রতিবেদক। সেখানে একজন শিক্ষক চীনের নীতি কীভাবে তিব্বতের জন্য মঙ্গলজনক সেটি পড়াচ্ছিলেন। এ নিয়ে তিব্বতের শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ওয়াং ঝেন বলেন, একটি সুন্দর নতুন তিব্বত গড়ে তুলতে আমাদের যুবকদের অবশ্যই পার্টির প্রতি অনুগত হতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত