Ajker Patrika

অভিবাসীদের গণহারে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা, জার্মানিতে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২১ জানুয়ারি ২০২৪, ১৩: ৫১
অভিবাসীদের গণহারে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা, জার্মানিতে লাখো মানুষের বিক্ষোভ

জার্মানি থেকে অভিবাসীদের গণহারে বের করে দিতে চাওয়ায় কট্টর ডানপন্থী রাজনৈতিক দল অলটারনেটিভ ফর জার্মানির (এএফডি) বিরুদ্ধে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। গতকাল শনিবার জার্মানির বড় ও ছোট শহর মিলিয়ে শতাধিক স্থানে হয়েছে এসব বিক্ষোভ। জার্মান গণমাধ্যম জানিয়েছে, গণতন্ত্রের পক্ষে অবস্থান নিয়ে এসব জমায়েতে এএফডিকে উপহাস করে ‘ফ্যাসিজম কোনো বিকল্প নয়’ লেখা ব্যানার প্রদর্শন করা হয়।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে খবরটি দিয়েছে।

এএফডি সদস্যরা সম্প্রতি কট্টর ডানপন্থী কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মীর সঙ্গে বৈঠক করে জার্মানি থেকে বিদেশি অভিবাসীদের গণহারে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন বলে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর পরই অভিবাসী বিরোধী এই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে জার্মানি জুড়ে শুরু হয় বিক্ষোভ।

পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল জার্মানির অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র ফ্রাঙ্কফুর্টে মিছিলে যোগ দেয় প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ। ‘গণতন্ত্র রক্ষা করুন—এএফডির বিরুদ্ধে ফ্রাঙ্কফুর্ট’ লেখা ব্যানার নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

উত্তরের শহর হ্যানোভারেও বিক্ষোভকারীর সংখ্যা অনেকটা একই রকম ছিল। ‘নাৎসি তাড়াও’-এর মতো পোস্টারও তাঁরা বহন করেন। এ ছাড়া ডর্টমুন্ডেও জড়ো হয়েছিলেন প্রায় ৩০ হাজার বিক্ষোভকারী। গত সপ্তাহ থেকে চলা বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় ব্রাউনশউইগ, আরফুর্ট, ক্যাসেলসহ অনেক ছোট শহরেও গতকাল বিক্ষোভ হয়েছে।

জার্মানির এআরডি পাবলিক টেলিভিশনের মতে, শনিবার জার্মানি জুড়ে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন ২ লাখেরও বেশি মানুষ। গত রোববার বার্লিনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ থেকে শুরু করে গতকাল পর্যন্ত জার্মানির অন্তত শতাধিক স্থানে এএফডির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজনীতিবিদ, চার্চ থেকে শুরু করে বুন্দেসলিগার (জার্মানির প্রিমিয়ার লিগ ফুটবল) কোচরাও জনগণের সমর্থনে এএফডির বিরুদ্ধে অবস্থান জানিয়েছেন।

জার্মানির অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম কারেকটিভ গত ১০ জানুয়ারি এক প্রতিবেদনে বলে, এএফডির সদস্যরা জার্মানদের মূল স্রোতের সঙ্গে যারা মিশে যেতে পারেনি এমন মানুষ এবং অভিবাসীদের জার্মানি থেকে বের করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। সেই বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন অস্ট্রিয়ার আইডেন্টিটারিয়ান মুভমেন্টের নেতা মার্টিন সেলনার। ‘গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ নামক এক ষড়যন্ত্রতত্ত্বের সমর্থক তিনি—যে তত্ত্ব দাবি করে যে, অশ্বেতাঙ্গ অভিবাসীরা ইউরোপ থেকে শ্বেতাঙ্গ মানুষদের বের করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

পূর্ব জার্মানিতে তিনটি বৃহৎ আঞ্চলিক নির্বাচনের মাত্র মাসখানেক বাকি থাকতে এসেছে এএফডির এই বৈঠকের খবর। সারা দেশের জরিপে জনপ্রিয়তায় এএফডির অবস্থান দ্বিতীয়। আর পূর্ব ইউরোপে রয়েছে কট্টর ডানপন্থী দলটির শক্ত ঘাঁটি। এই বৈঠকের খবরে তাই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পুরো জার্মানিতে।

তবে চ্যান্সেলর ওলাফ শলজসহ নেতৃস্থানীয় রাজনীতিবিদেরা সমর্থন জানিয়েছেন অভিবাসনবিরোধীদের বিক্ষোভে। জার্মান চ্যান্সেলর বলেন, ‘অভিবাসী বা নাগরিকদের বের করে দেওয়ার যেকোনো পরিকল্পনাই গণতন্ত্র ও আমাদের সবার বিরুদ্ধে আঘাত।’ গণতান্ত্রিক জার্মানির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জার্মান ব্যবসায়ীরাও অভিবাসনবিরোধী অবস্থানের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়েছেন। সিমেন্স এনার্জির তত্ত্বাবধায়ক বোর্ডের চেয়ারম্যান জো কায়সার বলেন, ‘যদি রিপোর্টে আসা সবকিছুই সত্য হয়, তবে তা একেবারেই ঘৃণ্য।’

চিপ প্রস্তুতকারক কোম্পানি ইনফিনিওন এবং রাসায়নিক প্রস্তুতকারক ইভোনিকসহ জার্মান সংস্থাগুলোর নেতারা এ সপ্তাহের শুরুতে ইস্যুটিতে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত