Ajker Patrika

দিল্লির আবদারে শিখদের ‘দমনে’ তৎপর যুক্তরাজ্য

আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১: ০৯
দিল্লির আবদারে শিখদের ‘দমনে’ তৎপর যুক্তরাজ্য

কানাডায় খালিস্তান বিচ্ছিন্নতাবাদী শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার খুন হওয়ার ঘটনায় ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংশ্লিষ্টতা অভিযোগ উঠেছে। এই অভিযোগের সপক্ষে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে বলে দাবি করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পরবর্তী সময় সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এই ঘটনায় পশ্চিমের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

পশ্চিমের অনেকে দেশেই বিপুলসংখ্যক শিখ অভিবাসী রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্য। এখন যুক্তরাজ্যসহ অন্য দেশে প্রভাবশালী কয়েকজন শিখের মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে শিখদের আলাদা রাষ্ট্র খালিস্তান প্রতিষ্ঠায় সোচ্চার হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন অবতার সিং খন্দ (৩৫)। চলতি বছরের জুনে বার্মিংহামে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। ঘনিষ্ঠজনদের সন্দেহ, তাঁর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না। এর পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য ছিল।

যুক্তরাজ্যের পশ্চিম মিডল্যান্ড পুলিশ বলছে, তারা এ ঘটনা ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে এবং সন্দেহজনক কিছু পায়নি। এ ঘটনার পুনঃতদন্তের প্রয়োজন নেই।

তবে ব্রিটিশ শিখরা দীর্ঘদিন ধরেই নানামুখী চাপে থাকার অভিযোগ করে আসছেন। কারণ, ভারত সরকার শিখ ‘চরমপন্থীদের’ দমন করার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারকে বেশ কয়েকবার আহ্বান করেছে। 

স্কটল্যান্ডের ডাম্বারটন শহরের বাসিন্দা গুরপ্রীত জোহাল পেশায় আইনজীবী ও শ্রম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তাঁর পরিবারের সঙ্গে যা ঘটেছে, সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়ই তিনি রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন।

ছয় বছর আগে গুরপ্রীতের ভাই জগতার বিয়ে করার জন্য ভারতে গিয়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন তিনি বিনা বিচার জেলা খাটছেন। জগতার খালিস্তানপন্থী ও শিখ অধিকারকর্মী হিসেবে সুপরিচিত।

জোহালের পরিবার বলে, পাঞ্জাবের রামি মন্ডি নামে একটি শহরে জগতারকে অপরিচিত একটি গাড়িতে জোর করে তোলা হয়। এর পর থেকে জগতার বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ভারতের কারাগারেই আছেন। 

জগতার জোহাল বলেন, তাঁকে নির্যাতন করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সই করতে বাধ্য করা হয়েছে। কয়েক বছর পর তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে তাঁর বিচার প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।

জাস্টিন ট্রুডো ঠিক কাজ করেছেন উল্লেখ করে গুরপ্রীত জোহাল বলেন, ‘কানাডার প্রধানমন্ত্রী তাঁর নাগরিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, যেখানে যুক্তরাজ্য সরকার ব্যর্থ হয়েছে।’ 

মানবাধিকার সংস্থা রিপ্রিভ বলে, ভারতে জোহালের গ্রেপ্তারের পেছনে ব্রিটিশ সিকিউরিটি এজেন্সির হাত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। 
 
জগতারের ঘটনায় ব্রিটিশ শিখ কমিউনিটি ক্ষুব্ধ। এমনকি কোনো ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া এবং বৈষম্যমূলকভাবে আটক করা হয়েছে উল্লেখ করে জগতার জোহালের মুক্তি চেয়েছে জাতিসংঘের একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ। যুক্তরাজ্য সরকার এ ক্ষেত্রে কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে।

জোহাল বলেন, ‘মনে হচ্ছে, যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে নাগরিকদের চেয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ 

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, জগতার জোহালের মুক্তি দাবি করে কোনো লাভ হবে না, বরং পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে। প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেছেন, তিনি জোহালের মামলার যত দ্রুত সম্ভব সমাধান দেখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বেশ ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ভারতীয় কর্মকর্তারা প্রায়ই ব্রিটেনে শিখদের তৎপরতার বিষয়টি উত্থাপন করেন।

চলতি বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিখ অধিকার ও খালিস্তানপন্থী বিক্ষোভকারীরা লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনে ভাঙচুর চালানোর ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। ভারত সরকার বারবার ব্রিটেনকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা চরমপন্থীদের দমন করার আহ্বান জানিয়ে আসছে।

 ১৯৮০-এর দশকে আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে সোচ্চার হন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষেরা। পরবর্তী সময় ভারতের সব রাজনৈতিক দল এমন ধারণার তীব্র বিরোধিতা করলে আন্দোলন কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়ে। তবে, সম্প্রতি শিখ প্রবাসীদের মধ্যে আবারও এ আন্দোলনের পুনরুত্থান দেখা যাচ্ছে।

যুক্তরাজ্যে খালিস্তানপন্থীদের সমর্থন শান্তিপূর্ণ তৎপরতায় রূপ নিয়েছে। যুক্তরাজ্যে খালিস্তান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা প্রায়ই ভারত-যুক্তরাজ্যের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করে। একে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি সহিংসতার ঘটনাও ঘটেছে। 

২০১৪ সালে লন্ডন সফরকালে অবসরপ্রাপ্ত ভারতীয় জেনারেল কুলদীপ সিং ব্রারকে গলায় ও মুখে ছুরিকাঘাত করা হয়। ১৯৮৪ সালে শিখ অধ্যুষিত পাঞ্জাব প্রদেশে অস্থিরতা বেড়ে যাওয়ার সময় লেফটেন্যান্ট জেনারেল ব্রার অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অভিযানে নেতৃত্ব দেন। শিখ ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র এ স্থান সে সময় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের প্রধান আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল।   

স্বর্ণ মন্দিরে চালানো সে অভিযানে শত শত শিখ নিহত হন। তাঁদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী থাকলেও বেশির ভাগই ছিলেন তীর্থযাত্রী। এর প্রতিশোধ হিসেবে চার মাস পরেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তাঁরই শিখ দেহরক্ষীর হাতে নিহত হন।

সে ঘটনার কিছুটা হলেও প্রভাব আজও শিখদের চেতনায় রয়ে গেছে।

২০১৪ সালে লন্ডনে হামলায় জেনারেল ব্রার বেঁচে যান। তাঁকে হামলাকারীর মধ্যে একজন ব্রিটিশ শিখ, যিনি স্বর্ণ মন্দির অভিযানে তাঁর বাবা ও ভাই হারিয়েছেন। হামলাকারীদের আটক করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।     

সম্প্রতি কয়েক বছরে স্কটল্যান্ডের নাগরিক জগতার জোহালের কারাদণ্ডসহ অনেক ব্রিটিশ শিখই দিল্লির চাপে নিজ দেশে হয়রানি বা জেল-জরিমানার শিকার হয়েছেন। ২০১৮ সালে লন্ডন ও মিডল্যান্ডের পাঁচ শিখ নেতার বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়।

তাঁদের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। শিখ সংগঠনগুলো বলছে, এ অভিযানের বিস্তারিত ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশের পক্ষ থেকে তল্লাশি তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। এ থেকে বোঝা যায়, এ অভিযানে দিল্লির হাত ছিল। 

এদিকে চলতি বছর ব্রিটেনের ধর্মবিশ্বাস ও বিশ্বাসীদের তৎপরতা নিয়ে একটি পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন ব্রিটিশ সরকারের ফেইথ এনগেজমেন্ট অ্যাডভাইজর কলিন ব্লুম। সেখানে অন্য ধর্মবিশ্বাসের তুলনায় শিখদের যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে ব্রিটেনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শিখরা তাঁদের অবস্থান নিয়ে একধরনের বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা উদ্বিগ্নও। 

কয়েক বছরের গবেষণা শেষে কলিন ব্লুম চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলেছেন, শিখদের ‘চরমপন্থী এবং নাশকতামূলক কার্যক্রম’ সামগ্রিকভাবে মুসলিম, চরম ডানপন্থী এবং হিন্দু চরমপন্থীদের চেয়েও বেশি। ব্রিটিশ সরকারের এই প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে এ বার্তাই দিচ্ছে যে বিশেষ করে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোতে শিখ জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তাঁর যে অবস্থান সেটি যথার্থ।

গত মাসে ‘খালিস্তানপন্থী উগ্রবাদ’ মোকাবিলায় নতুন করে ৯৫ হাজার পাউন্ড তহবিল ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

পত্রিকা অফিসে হামলার গোয়েন্দা তথ্য ছিল, আমলে নেওয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত