বৈঠাচালিত নৌকায় আটলান্টিক পাড়ির চ্যালেঞ্জ, ১০০০ মাইল পেরোলেন জারা

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২: ০৭
অভিযাত্রী জারা লকলান। ছবি: বিবিসি

২১ বছর বয়সী জারা লকলান ইউরোপের ভূখণ্ড থেকে রোয়িং করে (দুই হাতে নৌকার বৈঠা চালিয়ে) আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকা পর্যন্ত পৌঁছানোর চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। সুদীর্ঘ এই অভিযান একা একাই সম্পন্ন করছেন তিনি।

বুধবার বিবিসি জানিয়েছে, জারা ইতিমধ্যেই তাঁর প্রথম ১ হাজার মাইল (১৬০৯ কিলোমিটার) পাড়ি দিয়েছেন। যাত্রাটি সম্পন্ন করলে তিনিই হবেন বিশ্বের প্রথম নারী এবং সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি, যারা এই দূরত্ব রোয়িং করে অতিক্রম করেছেন।

জারা লকলান যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজের বাসিন্দা। গত ২৭ অক্টোবর পর্তুগালের আলগার্ভ অঞ্চল থেকে তিনি তাঁর রোয়িং অভিযান শুরু করেছেন। প্রতিদিন তিনি ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত রোয়িং করছেন।

বিবিসি যোগাযোগ করলে প্রথম ১ হাজার মাইল পাড়ি দেওয়ার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জারা বলেন, ‘এটি রোয়িংয়ের সবচেয়ে কঠিন অংশ ছিল। ধীর গতির কারণে প্রতিটি মাইল এগোনোর জন্য অনেক দীর্ঘ সময় ধরে রোয়িং করতে হয়েছে।’

জানা গেছে, দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ফ্রেঞ্চ গায়ানায় পৌঁছানোর পরিকল্পনা করেছেন জারা। এর জন্য তাঁকে ৩ হাজার ৬০০ নটিক্যাল মাইল বা ৬ হাজার ৬৬৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। এই যাত্রা সম্পন্ন করতে তাঁর প্রায় ৯০ দিন সময় লাগবে। মূলত নারীদের ফিটনেসে উৎসাহিত করতেই এমন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন জারা।

বিবিসি জানিয়েছে, জারা বর্তমানে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের কাছে অবস্থান করছেন। তিনি বলেছেন, ‘এখন ক্যানারির কাছাকাছি আছি এবং ভূমি দেখতে পাচ্ছি। ক্যানারির পরে আটলান্টিকের আবহাওয়া অনেক বেশি পূর্বাভাসযোগ্য হবে, যা স্বস্তিদায়ক।’

অভিযান শুরু করার পর যাত্রাপথে খারাপ আবহাওয়া এবং প্রতিকূল বাতাসের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে জারাকে। বিগত দিনগুলোতে নিজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি জানান—ডলফিন, পেঙ্গুইন এবং এমনকি একটি অক্টোপাসও তাঁর যাত্রায় সঙ্গ দিয়েছে। তবে কিছু অর্কা তিমির সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া তাঁর আনন্দদায়ক ছিল না। প্রচণ্ড ভয় পেয়েছিলেন। কারণ এই প্রাণীগুলো ছোট নৌকা ডুবিয়ে দেওয়ার জন্য পরিচিত।

জারা আশা করছেন, এই যাত্রায় তার শরীরের এক-তৃতীয়াংশ ওজন কমে যাবে। দৈনিক তিনি ৫ হাজার ৫০০ ক্যালোরির খাবার ও স্ন্যাকস গ্রহণ করছেন।

জারার মা ক্লেয়ার লকলান বলেন, ‘জারা আমাদের গর্ব। ক্যানারি পর্যন্ত তার পৌঁছানো একটি বিশাল অর্জন। বিশেষ করে এই কঠিন পরিস্থিতিতে।’

এই যাত্রার মাধ্যমে নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের প্রতি উৎসাহিত করতে চান জারা। তিনি ‘উইমেন ইন স্পোর্ট’ এবং ‘টিম ফোর্সেস’ নামে দুটি দাতব্য সংস্থার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন। এই সংস্থাগুলো নারীদের খেলাধুলায় আরও সক্রিয় করতে এবং সশস্ত্র বাহিনীর জন্য চ্যালেঞ্জ ও অ্যাডভেঞ্চারকে উৎসাহিত করতে কাজ করে।

জারার অভিযান সম্পর্কে টিম ফোর্সেস-এর প্রধান নির্বাহী মেজর জেনারেল ল্যামন্ট কিরকল্যান্ড বলেছেন, ‘অভিযানের প্রথম ও সবচেয়ে কঠিন পর্যায়ে জারা যে সাহসিকতা ও ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’

লফবোরো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় স্নাতক হওয়া জারা লকলান এই যাত্রা শেষে সেনাবাহিনীতে একজন প্রযুক্তি কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত