Ajker Patrika

শস্যচুক্তি বাতিলের পর এবার ওদেসা বন্দরে হামলা চালাল রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আপডেট : ১৮ জুলাই ২০২৩, ১৭: ১৭
শস্যচুক্তি বাতিলের পর এবার ওদেসা বন্দরে হামলা চালাল রাশিয়া

জাতিসংঘ এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার শস্যচুক্তি বাতিল হয়ে গেছে এক দিন আগেই। চুক্তি শেষ হতে না হতেই এবার কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী ইউক্রেনীয় বন্দর ওদেসায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। আজ মঙ্গলবার রুশ সশস্ত্র বাহিনী ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করে এই হামলা চালায়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ওদেসা বন্দরে এই হামলা এমন এক সময়ে এল যখন রাশিয়া ক্রিমিয়া ব্রিজে হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর আগে, গত সোমবার রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন ক্রিমিয়া ব্রিজটি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাশিয়া এই হামলার জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করেছে। 

ক্রিমিয়া ব্রিজে হামলার কয়েক ঘণ্টা পরই রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত শস্যচুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয়। সেই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই এবার ওদেসা বন্দরে রুশ হামলা হলো। 

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ড জানিয়েছে, ওদেসায় রুশ হামলায় বেশ কয়েকটি বাড়ি এবং বন্দরের কিছু অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাইকোলাইভ বন্দরের কর্তৃপক্ষও সেখানে ভয়াবহ হামলার কথা জানিয়েছে। 

ওদেসা বন্দরে রুশ হামলার তীব্র সমালোচনা করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান কর্মকর্তা আন্দ্রেই ইয়ারমাক টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন, ইউক্রেনের বন্দরে রাতের বেলা হামলা চালিয়ে রাশিয়া প্রমাণ করেছে, দেশটির সন্ত্রাসীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪০ কোটি মানুষের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে। কারণ, এরা কোনো না কোনোভাবে ইউক্রেন থেকে যাওয়া খাদ্যশস্যের ওপর নির্ভরশীল। 

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তারা সোমবার রাতে রাশিয়ার ৬টি ক্যালিব্র ক্ষেপণাস্ত্র এবং ৩৬টি অ্যাটাক ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোনের অধিকাংশই ভূপাতিত করা হয়েছে ওদেসা বন্দর অঞ্চল এবং মাইকোলাইভ অঞ্চলের আশপাশে। 

এদিকে রাশিয়া জানিয়েছে, তারা রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের ড্রোন হামলাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই হামলায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ক্রিমিয়া ব্রিজের ব্যাপারে তারা আরও জানিয়েছে, ব্রিজের একমুখী চলাচল চালু করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আল জাজিরার প্রতিবেদন /ফিলিস্তিনিদের প্রলোভনে ফেলে গাজা খালি করার মিশনে ইসরায়েলঘনিষ্ঠ ভুয়া সংস্থা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ৫২
কিছুদিন আগে মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র ছাড়াই একদল ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠায় এক ভুয়া সংস্থা। যার সঙ্গে আবার ইসরায়েলের যোগ আছে। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
কিছুদিন আগে মিথ্যা আশ্বাস দেখিয়ে প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র ছাড়াই একদল ফিলিস্তিনিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় পাঠায় এক ভুয়া সংস্থা। যার সঙ্গে আবার ইসরায়েলের যোগ আছে। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পৃক্ত একটি নামসর্বস্ব বা ‘শেল’ কোম্পানি গাজার নিরুপায় ফিলিস্তিনিদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে তাদের জোরপূর্বক সরিয়ে দেওয়ার কাজে সহায়তা করছে। মানবিক সহায়তার নামে বিপুল অর্থের বিনিময়ে দেশত্যাগে প্ররোচিত করার এই প্রক্রিয়াকে ভূখণ্ডটি থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘জাতিগত নিধনের’ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক অনুসন্ধানে গত মাসে গাজা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৫৩ জন যাত্রী নিয়ে যাওয়া রহস্যময় ফ্লাইটের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এতে দেখা যায়, ‘আল-মাজদ ইউরোপ’ নামের একটি অনিবন্ধিত ফ্রন্ট অর্গানাইজেশন এই কাজের নেপথ্যে রয়েছে। যারা ভুয়া মানবিক সহায়তার দাবি করে আসছিল।

গত ১৩ নভেম্বর এই ফিলিস্তিনিরা জোহানেসবার্গ ও প্রিটোরিয়ার ওআর তাম্বো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। তাদের পাসপোর্টে ইসরায়েলের কোনো ডিপারচার বা বহির্গমন সিল না থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্ত পুলিশ তাদের প্রবেশাধিকার দিতে অস্বীকার করে। ১২ ঘণ্টা উড়োজাহাজে আটকে থাকার পর অবশেষে তাদের নামার অনুমতি দেওয়া হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা ‘মানবিক কারণে’ তাদের গ্রহণের কথা স্বীকার করলেও জানান, তাঁর সরকার বিষয়টি তদন্ত করবে। দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনিদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের সন্দেহ, এই লোকগুলোকে গাজা উপত্যকা থেকে পরিকল্পিতভাবে ‘বের করে দেওয়া’ হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এর আগে প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন, তাঁরা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগের বিষয়টিকে ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ হিসেবে সমর্থন করেন। তবে বাস্তবে এটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ ছাড়া আর কিছুই নয়। ২০২৫ সালের মার্চ মাসে ইসরায়েলের নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা ফিলিস্তিনিদের গাজা ত্যাগে উৎসাহিত করতে একটি বিতর্কিত ব্যুরো গঠন করে, যার প্রধান করা হয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাবেক উপপরিচালক ইয়াকভ ব্লিটস্টাইনকে। সে সময় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ দাবি করেছিলেন, গাজার ৪০ শতাংশ বাসিন্দা ‘দেশত্যাগে আগ্রহী’।

এর ঠিক আগের মাসে আল-মাজদ ইউরোপ তাদের ওয়েবসাইট চালু করে। সেখানে বলা হয়, তারা মুসলিম দেশগুলোতে ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে এবং বিশেষ করে ‘গাজাবাসীদের গাজা থেকে বের হতে’ সাহায্য করছে। তারা গাজায় ভ্রাম্যমাণ স্বাস্থ্য ক্লিনিক এবং ফিলিস্তিনি চিকিৎসকদের বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থা করার মিথ্যা দাবিও করে।

দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়া সেই ফ্লাইটের এক যাত্রী নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে জানান, অনলাইনে লিংক পেয়ে তিনি এই সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সংস্থাটি শুধু গাজা থেকে বের হওয়ার পথই নয়, নিরাপত্তা ও চিকিৎসার আশ্বাসও দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শুরুতে তারা বলেছিল এটি ফ্রি। এরপর জনপ্রতি ১ হাজার ৪০০ ডলার চাইল। শেষ পর্যন্ত সেই দাম ২ হাজার ৫০০ ডলারে গিয়ে ঠেকেছিল।’

আল জাজিরার সংগ্রহ করা সাক্ষ্য প্রমাণে দেখা গেছে, জনপ্রতি ১ হাজার থেকে ২ হাজার ডলার পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। যাত্রীদের গোপনীয়তা বজায় রাখার কঠোর শর্ত দেওয়া হয়েছিল এবং ফ্লাইটের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে বিস্তারিত জানানো হতো।

যাত্রীরা জানিয়েছে, তাদের দক্ষিণ গাজার কারেম আবু সালেম (ইসরায়েলে যেটিকে কেরেম শালম বলা হয়) ক্রসিংয়ে যেতে বলা হয়েছিল। সেখানে পৌঁছানোর পর তাদের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র কেড়ে নেওয়া হয় এবং ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে বাসে করে ইলাত শহরের কাছে র‍্যামন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।

দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজকর্মী নাইজেল ব্রাঙ্কেন আফ্রিকায় ওই যাত্রীদের সহায়তা করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘এই অভিযানে ইসরায়েলের জড়িত থাকার স্পষ্ট ছাপ রয়েছে...এটি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করার একটি প্রক্রিয়া।’ উদ্বাস্তুরা জানায়, ফ্লাইটে ওঠার আগমুহূর্ত পর্যন্ত তারা জানত না তাদের গন্তব্য কোথায়।

ফ্লাইইউ নামক একটি নতুন এয়ারলাইনসের বিমানে তাদের তোলা হয়, যদিও তাদের নথিপত্রে কোনো বহির্গমন সিল ছিল না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই এয়ারলাইনসটি ইসরায়েলি বিমানবন্দর থেকে রোমানিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও কেনিয়ার মতো দেশগুলোতে এমন আরও অনেক ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

আল-মাজদ ইউরোপ নিজেদের ২০১০ সালে জার্মানিতে প্রতিষ্ঠিত একটি মানবিক ফাউন্ডেশন হিসেবে দাবি করে, যাদের প্রধান কার্যালয় অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের শেখ জারাহ এলাকায়। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে এটি একটি প্রতারণা। জার্মানি বা ইউরোপের কোনো ডেটাবেসে এই নামে কোনো কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। জেরুজালেমের নথিতেও তাদের দেওয়া ঠিকানার কোনো হদিস মেলেনি; গুগল ম্যাপে ওই স্থানে একটি হাসপাতাল ও ক্যাফে দেখা গেছে।

অনুসন্ধানে এই সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ফিলিস্তিনি মুখ শনাক্ত করা হয়েছে। একজন মুয়াদ হিশাম সাইদাম, যাকে গাজায় সংস্থাটির মানবিক প্রকল্পের ম্যানেজার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেখা গেছে, ২০২৪ সালের মে মাসে তাঁর স্ত্রী দেশত্যাগের সাহায্যের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছিলেন। এক বছর পর সাইদাম একটি রোমানিয়ান বিমানে ওঠার ছবি পোস্ট করে জানান তিনি গাজা ছাড়ছেন।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিনি সম্ভবত ২০২৫ সালের ২৭ মে র‍্যামন বিমানবন্দর থেকে বুদাপেস্টের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, তাঁর পরিবার বর্তমানে ইন্দোনেশিয়ায় আছে, তবে আল-মাজদ ইউরোপের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের বিষয়টি অস্পষ্ট। দ্বিতীয় ব্যক্তির নাম কেবল ‘আদনান’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যার কোনো ডিজিটাল উপস্থিতি খুঁজে পাওয়া যায়নি।

১৩ নভেম্বর জোহানেসবার্গ ফ্লাইটের দিনই আল-মাজদ তাদের ওয়েবসাইট থেকে অংশীদার কোম্পানিগুলোর একটি তালিকা মুছে ফেলে। আল জাজিরা সেটি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। সেখানে রেডক্রসের মতো প্রথিতযশা সংস্থার নাম থাকলেও একটি নাম নজর কাড়ে—‘ট্যালেন্ট গ্লোবাস।’ ২০২৪ সালে এস্তোনিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এই রিক্রুটিং কোম্পানির তহবিলে ছিল মাত্র ৩৫০ ডলার। এর পরিচালক টম লিন্ড একজন ইসরায়েলি ও এস্তোনীয় নাগরিক।

ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজের রিপোর্টেও টম লিন্ডের নাম এসেছে গাজা ত্যাগের ফ্লাইটের সমন্বয়ক হিসেবে। ২০২৫ সালের মে মাসে লিন্ড দাবি করেন, তিনি ‘ফিলিস্তিনিদের মানবিক সহায়তায়’ মনোনিবেশ করেছেন এবং অনেক মানুষকে গাজা থেকে সরাতে সাহায্য করেছেন। তবে তাঁর কোম্পানির অন্য তিন কর্মীর ছবি ইন্টারনেটে পাওয়া ‘স্টক ইমেজ’ বা ভুয়া ছবি হিসেবে শনাক্ত হয়েছে।

আল-মাজদ ইউরোপ আসলে একটি ভুয়া মানবিক সংস্থা। প্রশ্ন উঠেছে, এই আড়ালে তারা আসলে কী লুকাতে চাইছে? প্রকাশ্যে ইসরায়েল ‘স্বেচ্ছা হিজরত’ পরিকল্পনা থেকে পিছু হটার কথা বললেও আল জাজিরার অনুসন্ধান বলছে ভিন্ন কথা। এই গোপন ফ্লাইটগুলো কি গাজাকে জনশূন্য করার কোনো বড় পরিকল্পনারই অংশ?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

মার্কিন সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ট্রাম্পের ছবিসহ ১৬ এপস্টেইন নথি গায়েব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০৬
মার্কিন সরকারি ওয়েবসাইট থেকে ট্রাম্পের ছবিসহ ১৬ এপস্টেইন নথি গায়েব

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি ওয়েবসাইটে দেশটির পার্লামেন্টের নির্দেশে প্রকাশিত জেফরি এপস্টেইন ফাইল সিরিজের ১৬টি নথি গায়েব হয়ে গেছে। এর মধ্যে কিছু নথিতে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কিছু ছবি ছিল। নিখোঁজ ফাইলগুলো গত শুক্রবার দেখা গেলেও শনিবার থেকে আর দেখা যাচ্ছে না।

বার্তা সংস্থা এপির খবরে বলা হয়েছে, জেফরি এপস্টেইন-সংক্রান্ত নথিপত্রের জন্য মার্কিন বিচার বিভাগের নির্ধারিত পাবলিক ওয়েব পেজ থেকে অন্তত ১৬টি ফাইল গায়েব হয়ে গেছে, যার মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ছবিও ছিল।

ফাইলগুলো পোস্ট করার ২৪ ঘণ্টার কম সময়ের মধ্যে কোনো ব্যাখ্যা বা নোটিশ ছাড়াই সরিয়ে ফেলা হয়।

নিখোঁজ ফাইলগুলোর মধ্যে ছিল নগ্ন নারীদের আঁকা কিছু ছবি এবং একটি ড্রয়ার ও ক্রেডেনজারের ওপর রাখা কিছু ছবির দৃশ্য। সেই ছবির ভেতর একটি ড্রয়ারে ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ছবি দেখা যায়, যেখানে তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেফরি এপস্টেইন, মেলানিয়া ট্রাম্প এবং এপস্টেইনের দীর্ঘদিনের সহযোগী ঘিসলেইন ম্যাক্সওয়েল।

বিচার বিভাগ ফাইলগুলো সরিয়ে ফেলার কোনো কারণ জানায়নি বা এটি ইচ্ছাকৃত কি না, তা-ও স্পষ্ট করেনি। বিভাগের একজন মুখপাত্রের কাছে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।

এই ব্যাখ্যাহীন অন্তর্ধান ফাইলগুলো নিয়ে জল্পনা উসকে দিয়েছে যে কেন এগুলো সরানো হলো এবং কেন জনগণকে জানানো হয়নি। এটি এপস্টেইন এবং তাঁর চারপাশের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নিয়ে দীর্ঘদিনের রহস্যকে আরও ঘনীভূত করেছে। হাউস ওভারসাইট কমিটির ডেমোক্র্যাটরা এক্সে ট্রাম্পের ছবি থাকা নিখোঁজ ফাইলটির দিকে ইঙ্গিত করে লিখেছেন, ‘আর কী কী গোপন করা হচ্ছে? মার্কিন জনগণের জন্য আমাদের স্বচ্ছতা প্রয়োজন।’

এই ঘটনা বিচার বিভাগের বহুল প্রতীক্ষিত নথি প্রকাশের বিষয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। জনসম্মুখে আনা হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথিতে এপস্টেইনের অপরাধ বা তাঁকে বছরের পর বছর গুরুতর ফেডারেল অভিযোগ থেকে বাঁচিয়ে দেওয়ার নেপথ্য সিদ্ধান্তগুলো সম্পর্কে খুব সামান্যই নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু উপাদান; যেমন ভুক্তভোগীদের এফবিআই সাক্ষাৎকার এবং বিচার বিভাগের অভ্যন্তরীণ মেমো এতে বাদ দেওয়া হয়েছে।

আশা করা হয়েছিল, এপস্টেইন সম্পর্কে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডগুলো পাওয়া যাবে, কিন্তু বিচার বিভাগের প্রাথমিক প্রকাশনায় সেগুলো কোথাও নেই। সেখানে বিশেষ করে ২০০৮ সালে এপস্টেইনকে কীভাবে একটি মামুলি অপরাধ স্বীকার করে পার পাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তার কোনো সদুত্তর নেই।

এখানেই শেষ নয়। কংগ্রেসের সাম্প্রতিক আইন অনুযায়ী এই রেকর্ডগুলো প্রকাশ করার কথা থাকলেও, এতে এপস্টেইনের সঙ্গে দীর্ঘকাল যুক্ত থাকা ব্রিটেনের সাবেক প্রিন্স অ্যান্ড্রুর মতো প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম খুব কমই এসেছে।

এখন পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে তার মধ্যে রয়েছে ২০০০-এর দশকে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধ করার বিষয়ে বিচার বিভাগের সিদ্ধান্তের কিছু অন্তর্দৃষ্টি এবং ১৯৯৬ সালের একটি অভিযোগ যেখানে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে শিশুদের ছবি চুরির অভিযোগ আনা হয়েছিল।

এ পর্যন্ত প্রকাশিত নথিতে মূলত নিউইয়র্ক এবং ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডে এপস্টেইনের বাড়ির ছবি, এবং কিছু সেলিব্রিটি ও রাজনীতিবিদের ছবি রয়েছে। এর মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কিছু নতুন ছবি থাকলেও ট্রাম্পের ছবি ছিল খুবই নগণ্য। যদিও ক্লিনটন এবং ট্রাম্প উভয়েই এপস্টেইনের সঙ্গে মেলামেশার কথা অস্বীকার করেছেন এবং কারও বিরুদ্ধেই এপস্টেইন-সংক্রান্ত কোনো অপরাধের অভিযোগ নেই।

কংগ্রেসের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পার হলেও বিচার বিভাগ জানিয়েছে যে তারা পর্যায়ক্রমে নথিগুলো প্রকাশ করবে। ভুক্তভোগীদের নাম গোপন করার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হওয়ায় এই দেরি হচ্ছে বলে তারা দাবি করেছে।

এই ধীরগতিতে এপস্টেইনের হাতে নির্যাতিত নারী এবং কংগ্রেসের সদস্যরা ক্ষুব্ধ। মারিনা লাসার্ডা, যিনি অভিযোগ করেছেন যে ১৪ বছর বয়সে এপস্টেইন তাঁকে যৌন নির্যাতন শুরু করেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হচ্ছে বিচারব্যবস্থা আবারও আমাদের ব্যর্থ করছে।’

প্রকাশিত নথিগুলোর একটি বড় অংশই আগে কোনো না কোনোভাবে জনসম্মুখে এসেছিল। তবে এবারই প্রথম এগুলো এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। যদিও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল পুরোপুরি কালো কালি দিয়ে ঢেকে (Blacked out) দেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের রিপাবলিকান সহযোগীরা ক্লিনটনের ছবির দিকে ইঙ্গিত করেছেন, যেখানে তাঁকে মাইকেল জ্যাকসন এবং ডায়ানা রসের মতো তারকাদের সঙ্গে দেখা গেছে। এ ছাড়াও অভিনেতা ক্রিস টাকার, কেভিন স্পেসি এবং নিউজকাস্টার ওয়াল্টার ক্রনকাইটের সঙ্গেও এপস্টেইনের ছবি পাওয়া গেছে। তবে এসব ছবির কোনো ক্যাপশন বা ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।

প্রকাশিত নথির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশটি হলো ২০০৭ সালের একটি ঘটনা, যেখানে দেখা গেছে ফেডারেল প্রসিকিউটরদের হাতে এপস্টেইনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তারা তখন কোনো চার্জ গঠন করেননি। গ্র্যান্ড জুরির কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, ১৪ বছর বয়সী কিশোরীসহ অনেক ভুক্তভোগী এপস্টেইনের যৌন লালসার বর্ণনা দিয়েছিলেন।

সবে শ্রমমন্ত্রী আলেকজান্ডার অ্যাকোস্টা, যিনি সেই সময় মামলার দায়িত্বে ছিলেন, তিনি পরে জানিয়েছিলেন, জুরিরা ভুক্তভোগীদের কথা বিশ্বাস করবেন কি না, তা নিয়ে তাঁর সন্দেহ ছিল। তবে বর্তমানে ভুক্তভোগীদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি অনেক বদলেছে বলে তিনি স্বীকার করেন। এপস্টেইনের নির্যাতনের শিকার মারিয়া ফারমারের আইনজীবী জেনিফার ফ্রিম্যান বলেন, ‘এটি একই সঙ্গে একটি জয় এবং একটি ট্র্যাজেডি। মনে হচ্ছে, সরকার কিছুই করেনি। যদি তারা সামান্যতম তদন্তও করত, তবে তাঁকে অনেক আগেই থামানো যেত।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

গাজায় নতুন শাসনকাঠানো কার্যকর শিগগির: মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, গাজার নতুন শাসন কাঠামো খুব শিগগির কার্যকর হতে যাচ্ছে। একটি আন্তর্জাতিক পরিষদ এবং ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাটদের (কৌশলগত বিশেষজ্ঞ) সমন্বয়ে গঠিত হবে এই শাসনকাঠামো। এই শাসনকাঠামো গঠনের পরপরই সেখানে বিদেশি সৈন্য মোতায়েন করা হবে। ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের চালানো গণহত্যামূলক যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিচ্ছে।

সৌদি আরবের সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের খবরে বলা হয়েছে, বছরের শেষ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রুবিও বলেন, গাজায় বর্তমান অবস্থা বজায় রাখা সম্ভব নয়। গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও সেখানে ইসরায়েল হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা অব্যাহত রেখেছে এবং হামাসও পুনরায় তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।

রুবিও বলেন, ‘এ কারণেই আমরা প্রথম ধাপটি পুরোপুরি সম্পন্ন করার বিষয়ে জরুরি তাগিদ অনুভব করছি। এই ধাপের মধ্যে রয়েছে বোর্ড অব পিস বা শান্তি পরিষদ গঠন এবং সেখানে কাজ করার জন্য ফিলিস্তিনি টেকনোক্র্যাট কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা। এর পরপরই সেখানে স্থিতিশীলতা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হবে।’

রুবিও জানান, টেকনোক্র্যাট গ্রুপে যোগ দেওয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের শনাক্ত করার ক্ষেত্রে সম্প্রতি অগ্রগতি হয়েছে এবং ওয়াশিংটন কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ না করলেও ‘খুব শিগগিরই’ এই শাসনকাঠামো চালু করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।

গাজার জন্য ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যাবিলাইজেশন ফোর্স বা আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) গঠনের পরিকল্পনা করতে চলতি সপ্তাহে দোহায় সহযোগী দেশগুলোর সাথে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড একটি সম্মেলনের আয়োজন করার পর রুবিও এই মন্তব্য করলেন।

গত সপ্তাহে দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন, গত নভেম্বরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এই বাহিনী অনুমোদনের পর আগামী মাসেই আন্তর্জাতিক সৈন্য গাজায় মোতায়েন হতে পারে। তবে হামাসকে কীভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা হবে তা এখনও অস্পষ্ট। এছাড়া, আইএসএফ-এ সৈন্য পাঠানোর কথা বিবেচনা করছে এমন দেশগুলো এই ভয়ে আছে যে, হামাস তাদের সৈন্যদের সাথে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে পারে।

রুবিও নির্দিষ্ট করে বলেননি যে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব কার হবে। তবে তিনি স্বীকার করেছেন, যেসব দেশ সৈন্য দিতে আগ্রহী তারা এই বাহিনীর সুনির্দিষ্ট ম্যান্ডেট এবং অর্থায়ন সম্পর্কে জানতে চায়।

রুবিও বলেন, ‘কাউকে চূড়ান্ত প্রতিশ্রুতি দিতে বলার আগে আমার মনে হয় আমাদের আরও কিছু উত্তর দেওয়া উচিত। তবে আমি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে, এমন বেশ কিছু রাষ্ট্র রয়েছে যারা সব পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য এবং তারা এই স্থিতিশীলতা রক্ষাকারী বাহিনীর অংশ হতে ইচ্ছুক।’ তিনি উল্লেখ করেন যে, পাকিস্তান এই বাহিনীতে আগ্রহ প্রকাশকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।

রুবিও আরও যোগ করেন যে, গাজা পুনর্গঠনের জন্য দাতাদের তহবিল নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। পুনর্গঠন তহবিল সংগ্রহের জন্য একটি দাতা সম্মেলনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার সময় তিনি বলেন, ‘আবার যুদ্ধ শুরু হয়ে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে জেনে কে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেবে? তারা (দাতারা) জানতে চায় গাজার দায়িত্বে কে আছে এবং তারা সেখানে নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা দেখতে চায়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার উপকূলে আবার তেলের ট্যাংকার জব্দ করল যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি বিদেশি তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত
গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার উপকূলে একটি বিদেশি তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে ঘোষিত ‘সর্বাত্মক অবরোধের’ অংশ হিসেবে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার জব্দ করেছে মার্কিন কোস্টগার্ড। আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ঘোষণা দেন, ভেনেজুয়েলায় প্রবেশ এবং সেখান থেকে বের হওয়া সব তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক অবরোধ’ আরোপ করা হচ্ছে। তাঁর এমন ঘোষণার মাত্র কয়েক দিনের মাথায় এই অভিযান চালানো হলো।

এর আগে গত সপ্তাহে একটি বিদেশি তেলের ট্যাংকার জব্দের পর এটি দ্বিতীয় ঘটনা। তবে এই ট্যাংকারের নাম বা নির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে পেন্টাগন বা হোয়াইট হাউস এখনো বিস্তারিত প্রকাশ করেনি। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্টগার্ড এই অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে।

ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোলিওস দে ভেনেজুয়েলা (পিডিভিএসএ) তাৎক্ষণিকভাবে এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে আগের অভিযানকে ‘আন্তর্জাতিক জলদস্যুতা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল মাদুরো সরকার।

এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অবরোধ ঘোষণার পর থেকে ভেনেজুয়েলার তেল রপ্তানিতে ধস নেমেছে। আটকের ভয়ে ভেনেজুয়েলার জলসীমার ভেতরে কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল তেল নিয়ে বহু ট্যাংকার নোঙর করে আছে।

গত সপ্তাহের অভিযানের পর থেকে দেশটির অপরিশোধিত তেল রপ্তানি আরও কমেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই অবরোধ দীর্ঘস্থায়ী হলে দৈনিক প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল সরবরাহ বন্ধ হবে। এর প্রভাবে বিশ্ববাজারে তেলের সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় এশীয় ও ইউরোপীয় বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামও কিছুটা বেড়েছে।

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়া উপকূলে ‘মাদকবিরোধী অভিযানের’ নামে যুক্তরাষ্ট্র অন্তত ২৬টি সামরিক হামলা চালিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও গার্ডিয়ানের তথ্যমতে, এসব হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরো অভিযোগ করেছেন, এই অবরোধ ও সামরিক তৎপরতা আসলে তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করে ভেনেজুয়েলার বিশাল তেল সম্পদ দখলে নেওয়ার একটি সুপরিকল্পিত পরিকল্পনা।

ভেনেজুয়েলার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। ডিসেম্বরে দেশটি প্রতিদিন গড়ে ৬ লাখ ব্যারেল তেল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল, যা এখন চরম ঝুঁকির মুখে। ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ডেমোক্র্যাট কিছু কংগ্রেসম্যান ‘যুদ্ধের শামিল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সতর্ক করেছেন, শিগগির ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরে স্থল হামলাও শুরু হতে পারে।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ভেনেজুয়েলার ওপর জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর থেকে দেশটির তেল কিনতে আগ্রহী ব্যবসায়ী ও শোধনাগারগুলো তথাকথিত ‘শ্যাডো ফ্লিট’ ব্যবহার করে আসছে। এসব ট্যাংকার নিজেদের অবস্থান গোপন রাখে এবং অনেক ক্ষেত্রে ইরান বা রাশিয়ার তেল পরিবহনের জন্য নিষেধাজ্ঞাভুক্ত জাহাজ ব্যবহার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাগেরহাটের চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যাঁরা

ধর্ষণের অভিযোগ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেত্রীর, থানায় মামলা

বন্ধু ট্রাম্পকে খুশি করতে মোদির ‘শান্তি’ বিল পাস, বিরোধীদের সমালোচনা

দিপুকে হত্যার পর ঝুলিয়ে পোড়ানোর ঘটনায় আরও তিনজন গ্রেপ্তার

জুলাইকে দক্ষিণপন্থী ভাবাদর্শ বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে নব্য ফ্যাসিবাদী শক্তি: উদীচী

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত