Ajker Patrika

ইসরায়েল ছাড়ছেন ইহুদিরা, দৈনিক হাজারখানেক যাচ্ছেন সাইপ্রাসে

আপডেট : ১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০: ৪৬
ইসরায়েল ছাড়ছেন ইহুদিরা, দৈনিক হাজারখানেক যাচ্ছেন সাইপ্রাসে

হলোকাস্ট থেকে বাঁচতে যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল, সেখানেই ফিরছে ইসরায়েলি ইহুদিরা। দৈনিক প্রায় ১ হাজার ইহুদি ইসরায়েল ছেড়ে সাইপ্রাসে পাড়ি জমাচ্ছে। এখন তারা এ দেশকেই সবচেয়ে নিরাপদ মনে করছে। 

এখানেই ছিল ব্রিটিশদের বন্দিশিবির, যেখানে ১৯৪৬ থেকে ১৯৪৯ সালের দিকে ৫৩ হাজার ইহুদিকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। তারা নাৎসিদের হলোকাস্ট থেকে প্রাণে বাঁচতে দলে দলে এখানে জড়ো হয়েছিল। সেখান থেকেই পরে নবগঠিত ইসরায়েল রাষ্ট্রে তাদের শেষ ১০ হাজার জনকে স্থানান্তর করা হয়। 

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর ইহুদিরা আর সেখানে নিরাপদ বোধ করছে না। ওদিকে গাজায় নির্বিচারে বোমা হামলা চালিয়ে সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত করছে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের এই সামরিক শক্তির প্রদর্শনীতে বেঘোরে প্রাণ হারাচ্ছে ফিলিস্তিনের নারী, শিশুসহ বেসামরিক মানুষ। 

কিন্তু এর পরও ‘ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি’ ইসরায়েলকে নিরাপদ মনে করতে পারছে না ইহুদিরা। হাজার হাজার ইহুদি দেশ ছাড়ছে। মূলত ৭ অক্টোবরের পর থেকেই দেশত্যাগী মানুষের স্রোত দেখা যাচ্ছে ইসরায়েলি বিমানবন্দরে। 

সাইপ্রাসের মধ্য লারনাকায় ইহুদি কমিউনিটি সেন্টার এখন লোকে লোকারণ্য। রীতিমতো সংকট পরিস্থিতিতে চলে গেছে এই কমিউনিটি সেন্টার। করিডর ও বিনোদনের স্থানগুলো ভরে গেছে যুবক, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষে। ইসরায়েল থেকে মাত্র ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে সাইপ্রাস দ্বীপে একটু নিরাপত্তা ও শান্তি খুঁজতে ছুটছে ইহুদিরা। 

দ্বীপের প্রধান রাব্বি অ্যারি জিভ রাসকিন দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘দৈনিক প্রায় ১ হাজার লোক এখানে আসছে। সেই ভয়ানক দিন (৭ অক্টোবর) থেকে ১৬ হাজারের বেশি মানুষ এখন মানসিক শান্তির সন্ধানে সাইপ্রাসে এসেছে।’ 

সংঘাত শুরু হওয়ার পর সেই মাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক পরিবার সাইপ্রাসে গেছে। গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রতিশোধমূলক পাল্টা আক্রমণের পরিপ্রেক্ষিতে অপর পক্ষের পাল্টা আক্রমণের ভয়েও অনেকে দেশ ছেড়ে সাইপ্রাসে পাড়ি জমিয়েছে, যেখানে ইসরায়েলের আক্রমণে এখন পর্যন্ত ১১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অসংখ্য মানুষ। 

সাম্প্রতিক সপ্তাহে সাইপ্রাসে ইসরায়েলিদের ঢল নেমেছে। কিন্তু সংকটকালে সাইপ্রাসে শরণার্থীদের এমন আগমন নতুন নয়। হামাস-ইসরায়েল সংঘাত আঞ্চলিক যুদ্ধে রূপ নেওয়ার আশঙ্কার মধ্যে দেশটির সংঘাত-বিভক্ত রাজধানী নিকোসিয়ায় পশ্চিমা দূতাবাসগুলোও ‘কৌশলগত ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপটি আবারও মানবিক সহায়তা বিতরণের জন্য একটি আশ্রয়কেন্দ্র এবং পরিচালনাকেন্দ্রে’ পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা মাথায় রেখে তৎপরতা চালাচ্ছে। 

এর আগে ২০০৬‍ সালে লেবানন যুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা ৩০ হাজার বিদেশি নাগরিকের জন্য একটি ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সবচেয়ে পূর্বের এই দেশকে ব্যবহার করা হয়েছিল। চলতি বছরের শুরুর দিকে সুদান থেকে হাজার হাজার ব্রিটিশ পাসপোর্টধারীকে উড়োজাহাজে করে দেশে ফেরানোর সময়ও সাইপ্রাসকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। 

সাইপ্রাসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কনস্ট্যান্টিনোস কম্বোস আশঙ্কা করছেন, গাজা-ইসরায়েল সংঘাত বাড়তে থাকলে লেবানন এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য অংশ থেকে সাইপ্রাসে ১ লাখের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। পার্লামেন্টে তিনি জানিয়েছেন, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ৩৫টি দেশের ১ হাজারেরও বেশি পুরুষ, নারী ও শিশুকে দ্বীপে স্থানান্তর করা হয়েছে। 

জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের এসএএস সৈন্য এবং অন্যান্য বিশেষ বাহিনীকে সাইপ্রাসে তাদের সামরিক ঘাঁটিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যেখানে সাবেক এই উপনিবেশে এখনো যুক্তরাজ্যের উপস্থিতি রয়েছে। এই অভিজাত বাহিনীগুলো মূলত জিম্মি উদ্ধার অভিযানে দক্ষ বলে জানা যায়। 

গ্রিসের মতো সাইপ্রাসের দৃষ্টিভঙ্গিও দীর্ঘদিন ধরেই ইসরায়েলের চেয়ে আরবের দিকে বেশি ঝুঁকে থাকার পক্ষে। ইসরায়েল ও তুরস্কের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এবং ইসরায়েলের উপকূলে গ্যাসের মজুত আবিষ্কারের পর সমুদ্র পরিস্থিতি পরিবর্তিত হলে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হওয়ার পথ খুলে গেছে। 

সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডৌলিডস এবং গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিৎসোতাকিস ৭ অক্টোবরের ঘটনার পরপরই ‘ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারকে’ প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে হামাসের আক্রমণের নিন্দা জানিয়েছেন। 

তবে দুই নেতা কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টাও করেছেন। মিৎসোতাকিস গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে নিরীহ বেসামরিক মানুষ নিহত, আহত এবং বাস্তুচ্যুত হওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ক্রিস্টোডৌলিডস প্রস্তাব করেছেন, অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার জন্য সাইপ্রাসে একটি মানবিক সামুদ্রিক করিডর স্থাপন করা যেতে পারে। ত্রাণ পরিবহনের জন্য এই করিডর হতে পারে তাৎক্ষণিক, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি। গাজায় বিপুল মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর একটি টেকসই ও নিরাপদ পথ হতে পারে সাইপ্রাস। 

সাইপ্রাসের কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধবিরতি এবং স্থল পরিস্থিতি অনুকূলে আসার সঙ্গে সঙ্গে সাইপ্রাসের প্রধান সমুদ্রবন্দর লিমাসল থেকে মাত্র ২৫৫ মাইল দূরে গাজায় ত্রাণের জাহাজ পাঠানো যেতে পারে। 

ব্রাসেলসভিত্তিক জার্মান মার্শাল ফান্ড ইউএসের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়ান লেসার গত বুধবার সাইপ্রাস সফরের সময় বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই সাইপ্রাস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে জোর দেয়, তবে প্রধান পরীক্ষাটিই দিতে হবে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে হুমকি, বিবৃতিতে যা বলল ভারত

বিএনপির সময় গণমাধ্যম তুলনামূলক বেশি স্বস্তিদায়ক অবস্থায় ছিল: প্রথম আলো সম্পাদক

‘আমি ওর সঙ্গে এক মিনিট কথা বলতে চাই, শুধু এক মিনিট’

পপুলার ফার্মায় এক্সিকিউটিভ পদে চাকরি, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত