প্রেমিকাকে ধর্ষণ ও হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্তকে ক্ষমা করে ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠালেন পুতিন 

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ৩৭
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১৯: ৪৪

ইউক্রেন যুদ্ধে যেতে রাজি হওয়ায় সাজাপ্রাপ্ত এক খুনিকে ক্ষমা করে দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ক্ষমা পাওয়া ওই ব্যক্তির নাম ভ্লাদিস্লাভ কানিউস। নিজের প্রেমিকা ভেরা পেখতেলেভাকে নৃশংসভাবে হত্যার দায়ে তাঁর ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। কিন্তু তিনি এই সাজার মাত্র এক বছর কারাগারে কাটিয়েছেন। 

যুক্তরাজ্যর সংবাদমাধ্যম দ্য সান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছ। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বান্ধবী ভেরা সম্পর্ক ছিন্ন করলে ক্ষুব্ধ হন কানিউস। প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ভেরাকে নির্যাতন, ধর্ষণ ও ১১১ বার ছুরিকাঘাত করেন। এতেও ক্ষান্ত হননি কানিউস। এরপরে তিনি তাঁকে লোহার তার দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মেয়েটির চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা সাতবার পুলিশকে ফোন করলেও তাঁরা সাড়া দেয়নি। 

ভেরা পেখতেলেভার মা ওকসানা একটি সামরিক ইউনিফর্মে অস্ত্র হাতে কানিউসের একটি ছবি পাওয়ার পরে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। শোকার্ত মা বিলাপ করে বলেন, ‘এটা আমার ওপর বড় একটা আঘাত। আমার সন্তান কবরে পচে যাবে আর খুনি স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াবে! আমি সবকিছু থেকে বঞ্চিত হয়েছি। 

‘আমি বেঁচে নেই, শুধু একটি ধড় আছে। এটি আমাকে শেষ করে দিয়েছে, আমাকে সম্পূর্ণভাবে শেষ করে দিয়েছে। আমি খুব শক্ত ছিলাম। কিন্তু রাষ্ট্রের এই অনাচার আমাকে মৃত প্রান্তের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমি জানি না পরবর্তী করতে হবে।’ 

নারী অধিকার কর্মী অ্যালিওনা পপোভা গত বুধবার বলেছেন, কানিউস বর্তমানে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভে রয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

পপোভা গত ৩ নভেম্বর রাশিয়ান প্রসিকিউটর জেনারেলের অফিস থেকে একটি চিঠি শেয়ার করেছেন, সেখানে বলা হয়েছে যে কানিউসকে ক্ষমা করা হয়েছে এবং ২৭ এপ্রিল প্রেসিডেন্টের ডিক্রির মাধ্যমে তাঁর সাজা বাতিল করা হয়েছে। 

এ খবরে ভেঙে পড়েছেন মা ওকসানা এবং পুতিনকে এর জন্য দায়ী করেছেন। মেয়েকে হত্যার খুনিকে যুদ্ধে পাঠানোর সিদ্ধান্তে তিনি বিভ্রান্ত এবং নিজের নিরাপত্তা নিয়েও উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘একজন নিষ্ঠুর খুনিকে অস্ত্র দেওয়া যায় কী করে? কেন তাকে ফ্রন্টে পাঠানো হয়েছে। রাশিয়াকে রক্ষা করতে? সে তো নোংরা। সে তো কোনো মানুষ নয়। প্রতিশোধের জন্য যেকোনো মুহূর্তে সে আমাদের হত্যা করতে পারে।’ 

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ পুতিনের এই নীতির পক্ষ নিয়ে এএফপিকে বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠানো রাশিয়ান বন্দীরা তাঁদের অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত করছেন ‘রক্ত দিয়ে’। গুরুতর অপরাধসহ যারা দোষী সাব্যস্ত হয়েছে, তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে অপরাধের জন্য রক্ত দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত