বন্যায় বিপর্যস্ত সিকিম: পর্যটকদের বুকিং বাতিলের হিড়িক, পর্যটনে ধস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৩, ০০: ২৬

ভারতের বন্যা–বিপর্যস্ত সিকিমকে এবার পর্যটন খাতে মোটা অঙ্কের লোকসান গুনতে হচ্ছে। পূজা মৌসুমের সময় তিস্তায় প্রবল বন্যার কারণে সিকিমের উত্তরাঞ্চলের বিশাল এক অংশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ায় পর্যটকেরা বুকিং বাতিল করছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং এক জরুরি বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে সোমগো হ্রদ, বাবা মন্দির এবং নাথু লার মতো পর্যটন এলাকাগুলোতে শুক্রবার থেকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করার সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া সিকিম সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সিকিমে ভ্রমণ স্থগিত করতে পর্যটকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সতর্কবার্তা প্রকাশ করেছে। 
 
সিকিমের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল বিভাগের দেওয়া এই সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ‘তিস্তা নদী উপচে বন্যার কারণে অনাকাঙ্ক্ষিত জরুরি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। যেসব পর্যটক সিকিমে ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ভ্রমণ স্থগিত রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’ 

যাদবপুরের বাসিন্দা শুভশ্রী বসু বলেন, ‘আমার দুর্গাপূজার সময় পাঁচ দিনের সফরে লাচেন ও লাচুং যাওয়ার কথা। কিন্তু এখন তিন সপ্তাহের মধ্যে রাস্তাঘাট আবার স্বাভাবিক হওয়া অসম্ভব মনে হচ্ছে। আমরা অন্য কোথাও ঘুরতে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’ 

সিকিমের উত্তরাঞ্চল ও জঙ্গু উপত্যকায় চার বছরের মেয়েসহ সপরিবারে ভ্রমণে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল পশ্চিমবঙ্গের সল্ট লেকের বাসিন্দা সৌম্য চ্যাটার্জির। তিনি বলেন, ‘এই ধ্বংসযজ্ঞ দেখে এ আবহাওয়ায় সিকিম যাওয়ার সাহস নেই আমার। এ ছাড়া জঙ্গু উপত্যকার সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমি এ সফর বাতিল করছি।’ 

সরকারের তথ্য অনুসারে, উত্তর সিকিমের আটটি সেতু ভেসে গেছে। দশ নম্বর ন্যাশনাল হাইওয়ের প্রায় পাঁচটি জায়গা ধসে গেছে।

পর্যটন সংস্থাগুলো বলছে, গত বুধবারের পর থেকে তাঁদের মোবাইলে ফোনে কল আসা থামছে না। পর্যটকেরা বারবার পরিস্থিতির আপডেট জানতে চাচ্ছেন। তাঁদের বেশির ভাগই তিন সপ্তাহের মধ্যেই আসার কথা।

সিকিমের সিতংয়ে একটি হোম–স্টের মালিক গুঞ্জন গিমজো বলেন, ‘আমার দুর্গাপূজার পাঁচ দিনসহ পরবর্তী কয়েক সপ্তাহ পর্যন্তই বুকিং ছিল। কিন্তু এখন পর্যটকেরা তাঁদের বুকিং বাতিল করে দিচ্ছেন। আমরা তাঁদের অপেক্ষা করতে এবং কী হয় দেখতে বলছি, কিন্তু তাঁরা খুব বেশি উদ্বিগ্ন হয়ে আছেন। তাঁরা এখনই বুকিং বাতিল করতে চান এবং তাঁদের অগ্রিম অর্থ ফেরত চান।’ বর্তমানে দুর্যোগে আটকে পড়া স্থানীয় বাসিন্দা এবং পর্যটকদের জন্য হোম–স্টে খুলে দিয়েছেন গুঞ্জন।

সিকিমের ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠনের প্রেসিডেন্ট নরগে লাচুংপা বলেন, ‘উত্তর সিকিমের হোটেল এবং হোম–স্টেগুলোতে পূজার ছুটিতে ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ বুকিং থাকে। আমাদের খাতে এটা অনেক বড় লোকসান। আমরা আমাদের সদস্যদের বলেছি, দুর্গাপূজা পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হলে পর্যটকদের পূর্ব বা পশ্চিম সিকিম চলে যাওয়ার পরামর্শ দিতে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত