Ajker Patrika

ইতিহাসের এই দিনে /নাদির শাহর দিল্লি দখল, হত্যাযজ্ঞ ও লুটের শুরু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

১৭৩৯ সালের ২০ মার্চ ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। এ দিন পারস্য সম্রাট নাদির শাহ ভারতে আগ্রাসন চালিয়ে মোগল সাম্রাজ্যের রাজধানী দিল্লি দখল করে নেন। নাদির শাহ ১৭৩৬ থেকে ১৭৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত পারস্য শাসন করেন। তিনি ছিলেন আফশারিদ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ও ইরানের শাহ।

পারস্যে কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ দমন করে নিজের শাসন দৃঢ় করছিলেন। সময়টা ছিল ১৭৩৭ সাল। তখন তাঁর নজর পড়ে আফগানিস্তানের খিলজি এলাকার দিকে। ওই বছর তিনি খিলজি দখলে আগ্রাসন শুরু করেন। এই অভিযানে কান্দাহারের কাছে একটি শহর দখল করে নাদিরাবাদ নাম দেন তিনি। সেখানে দুর্গ স্থাপন করে খিলজিতে অভিযান চালান তিনি। খুব দ্রুতই আফগান খিলজিদের নেতা শাহ হুসেইন হোতাককে পরাজিত করে কান্দাহার দখল করেন নাদির শাহ।

এরপর ১৭৩৮ সালের ২১ মে নাদিরাবাদ থেকে কাবুলের পথে অগ্রসর হন নাদির শাহ। ১১ জুন তিনি গজনি পৌঁছান এবং পারস্য-মোগল সীমান্ত অতিক্রম করেন। মোগলদের তিনি জানান, ভারতের প্রতি তাঁর কোনো বৈরী মনোভাব নেই, তিনি শুধু আফগান বিদ্রোহীদের খুঁজছেন।

ভারতীয় ঐতিহাসিকদের কেউ কেউ বলেন, মোগলদের অধীনে কিছু শাসক নিজেদের স্বাধীন অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করতে চাইছিলেন। তাঁরা নাদির শাহকে ভারত আক্রমণে প্ররোচিত করেন। পারস্যবিষয়ক বিশেষজ্ঞ লরেন্স লকহার্টের মতে, নাদির শাহ বুঝতে পেরেছিলেন, তিনি ভারতের সম্পদ লুট করে তাঁর সাম্রাজ্য সম্প্রসারণের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারবেন। কারণ, বিগত কয়েক বছরের ক্রমাগত যুদ্ধ পারস্যকে অর্থনৈতিক সংকটের দিকে ঠেলে দিয়েছিল।

অষ্টাদশ শতকের শুরুতে মোগল সাম্রাজ্য একাধিক রাজনৈতিক সমস্যার মুখোমুখি হয়। ১৭০৭ সালে সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর ভারত বিভক্ত হতে থাকে। পরবর্তী সম্রাট মুহাম্মাদ শাহর প্রতি নামমাত্র আনুগত্য প্রকাশ করলেও একাধিক রাজা ভেতরে ভেতরে মোগলদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

এ ছাড়া প্রথম বাজিরাওয়ের নেতৃত্বে মারাঠা সাম্রাজ্যের উত্থান মোগলদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। মারাঠারা ভারতের রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে মুসলিম শাসনের অপরিহার্যতার প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মোগল শাসনের কর্তৃত্ব খর্ব করতে থাকে।

অর্থনৈতিকভাবে ভারত তখনও বিশালাকারের সমৃদ্ধ কৃষিভিত্তিক ছিল। কিন্তু ক্রমাগত বিভক্তির কারণে শক্তি হারিয়ে আর্থিক সংকটে থাকা বিজেতার জন্য অত্যন্ত লোভনীয় শিকারে পরিণত হয়।

নাদির শাহ মোগল ভূখণ্ডে প্রবেশ করে গজনির দক্ষিণে কারাবাগে অবস্থান নেন। তাঁর ছেলে নাসরুল্লাহ খানকে তিনি গোরবন্দ ও বামিয়ান এলাকার আফগানদের ওপর আক্রমণের জন্য পাঠান। নাদিরের আগমনের খবর শুনে গজনির গভর্নর পালিয়ে গেলে শহরের ধনী ও ধর্মীয় নেতারা উপঢৌকনসহ আত্মসমর্পণ করেন।

এরপর নাদির শাহ কাবুলের দিকে অগ্রসর হন। শহরের কিছু শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি শান্তিপূর্ণ আত্মসমর্পণ করতে চাইলেও শারজা খান প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১০ জুন কাবুলে পৌঁছে নাদির শাহর বাহিনী শহরের সৈন্যদের আক্রমণের মুখে পড়ে। কিন্তু পরদিন নাদিরের বাহিনী কাবুল অবরুদ্ধ করে। তাঁদের আক্রমণে এক সপ্তাহ পর ১৯ জুন শহরের দুর্গের একটি অংশ ধসে পড়লে কাবুল আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়।

এরপর নাদির শাহ দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি ১৭৩৯ সালে কারনালের যুদ্ধে মোগল বাহিনীকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করেন। সম্রাট মুহাম্মদ শাহ আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন এবং নাদির শাহর সঙ্গে দিল্লিতে প্রবেশ করেন। সেদিন ছিল ২০ মার্চ। নাদির শাহর হাতে শহরের চাবি তুলে দেওয়া হয়। লাল কেল্লায় এক নারী রক্ষী নাদির শাহকে হত্যা করেছে বলে ২১ মার্চ রাতে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এতে উত্তেজিত জনতা আফশারিদ বাহিনীর প্রায় ৩ হাজার সৈন্যকে হত্যা করে।

২২ মার্চ সকালে নাদির শাহ দিল্লির সুনেহরি মসজিদে বসে তরবারি উঁচিয়ে সৈন্যদের দিল্লিতে গণহত্যার (কতল-এ-আম) নির্দেশ দেন। এর পরপরই দিল্লির নিরস্ত্র জনগণের ওপর আফশারিদ সেনারা ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। চাঁদনি চক, দরিবার, ফতেহপুরি, হাউজ কাজি, লাহোরি গেটসহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় নির্বিচারে হত্যা করা হয় সাধারণ মানুষকে।

ধর্ষণসহ অন্যান্য অবমাননার ভয়ে মুসলমানেরা আত্মহত্যা করেন বা একে অন্যকে হত্যা করেন। সমকালীন বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থ যেমন ‘তারিখ-ই-হিন্দি’, ‘বায়ান-ই-ওয়াকাই’ ও ‘তাজকিরা’তে এ ঘটনার বিবরণ রয়েছে। মোগলদের ব্যাপক অনুরোধের পর হত্যাযজ্ঞ বন্ধের নির্দেশ দেন নাদির শাহ।

ইরানে ফিরে যাওয়ার সময় দিল্লি থেকে বিপুল সম্পদ লুট করে নিয়ে যান নাদির শাহ, যার মধ্যে ছিল কোহিনূর হীরা ও ময়ূর সিংহাসন। এ ঘটনার পর মোগল সাম্রাজ্য নামমাত্র টিকে ছিল। শিগগির আঞ্চলিক শক্তিগুলোর মধ্যে বিভক্তি ব্রিটিশদের ভারত দখলের পথ সুগম করে দেয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ভারতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, সুরক্ষিত এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে প্রবেশ করল—প্রশ্ন ঢাকার

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টাকে প্রতিহতের ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি
উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। ছবি: এএফপি

জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার (২১ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা যে কোনো মূল্যে রোধ করা উচিত, কারণ এটি মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ’-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তাঁর ভাষায়, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়ার পেছনে রয়েছে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্য। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে বলেছেন, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।

এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের বহুদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই প্রতিফলন।

উত্তর কোরিয়ার মতে, জাপান তাদের তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার কথা বলে কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, জাপানের কর্মকর্তাদের মন্তব্যগুলোই বলে দিচ্ছে, টোকিও এখন প্রকাশ্যেই পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের বাসনা জানাচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র যখন গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেয়, তার পরপরই জাপানে এই ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা ইস্যুতে শীর্ষ বৈঠকের পর ওই অনুমোদন দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন—জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

ধারণা করা হয়, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান থাকার পরও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের ঘোষণা দিয়ে আসছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন—পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি এবং সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো পরিস্থিতিতেই ত্যাগ করবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ভারতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, সুরক্ষিত এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে প্রবেশ করল—প্রশ্ন ঢাকার

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলার আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন বাহিনী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩: ১৪
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
ক্যারিবিয়ান সাগরে পানামা পতাকাবাহী সেঞ্চুরি নামের একটি তেলবাহী জাহাজের ওপর মার্কিন সামরিক বাহিনীর টহল। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

ভেনেজুয়েলা উপকূলে আন্তর্জাতিক জলসীমায় আরও একটি তেলের ট্যাংকার ধাওয়া করছে মার্কিন কোস্ট গার্ড। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এটি সফল হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট তিনটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করার ঘটনা ঘটবে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে ভেনেজুয়েলার ওপর ‘সর্বাত্মক নৌ অবরোধ’ ঘোষণার পর থেকে এই চিরুনি অভিযান শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মার্কিন কোস্ট গার্ড বর্তমানে একটি তেল ট্যাংকারকে ধাওয়া করছে। তবে অভিযানের সুনির্দিষ্ট অবস্থান বা জাহাজটির পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।

এই অভিযান নিয়ে হোয়াইট হাউস বা পেন্টাগন থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের ডিরেক্টর কেভিন হ্যাসেট আজ জানিয়েছেন, এর আগে জব্দ করা দুটি ট্যাংকার ‘ব্ল্যাক মার্কেট’ বা কালোবাজারের মাধ্যমে বিভিন্ন নিষিদ্ধ দেশে তেল সরবরাহ করছিল।

কেভিন হ্যাসেট দাবি করেছেন, এই আটকের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। তাঁর মতে, এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং কেবল কালোবাজারি জাহাজগুলোকেই লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

তবে বাজার বিশ্লেষক ও তেল ব্যবসায়ীরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। একজন তেল ব্যবসায়ী রয়টার্সকে বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। আগামীকাল সোমবার এশিয়ার বাজারে তেলের দাম বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা তেলের দামের এই ঊর্ধ্বগতিকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

গত সেপ্টেম্বর থেকে প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর ওপর চাপ বাড়াতে ট্রাম্প প্রশাসন এই অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক মাসে প্রশান্ত মহাসাগর ও ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেনেজুয়েলাসংশ্লিষ্ট ভেসেলগুলোর ওপর অন্তত দুই ডজন সামরিক হামলা চালানো হয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যমতে, এসব সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০০ জন নিহত হয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ভারতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, সুরক্ষিত এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে প্রবেশ করল—প্রশ্ন ঢাকার

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভেনেজুয়েলায় মার্কিন হস্তক্ষেপ নিয়ে সতর্ক করলেন লুলা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। ছবি: সংগৃহীত

ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমবর্ধমান চাপ ও সম্ভাব্য সামরিক পদক্ষেপ ‘ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়’ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। তিনি মত দিয়েছেন, ভেনেজুয়েলায় কোনো ধরনের সশস্ত্র হস্তক্ষেপ শুধু ওই দেশের জন্য নয়, বরং পুরো পৃথিবীর জন্যই এক বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

ব্রাজিলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ফোজ দো ইগুয়াসুতে দক্ষিণ আমেরিকার আঞ্চলিক জোট ‘মারকোসুর’-এর শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে লুলা এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ভেনেজুয়েলায় সশস্ত্র হস্তক্ষেপ একটি মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নেবে। এটি এমন একটি নজির সৃষ্টি করবে, যা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

এ বিষয়ে এক প্রতিবেদনে রোববার (২১ ডিসেম্বর) রয়টার্স জানিয়েছে, ভেনেজুয়েলা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তেজনা সম্প্রতি আরও বেড়েছে। গত মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় যাতায়াতকারী সব নিষেধাজ্ঞাভুক্ত তেলবাহী জাহাজের ওপর ‘অবরোধ’ আরোপের নির্দেশ দেন। ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে নিকোলাস মাদুরো সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর নতুন কৌশল হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভেনেজুয়েলার অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি তেল খাতকে লক্ষ্য করেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

লুলা স্মরণ করিয়ে দেন, ফকল্যান্ডস যুদ্ধের চার দশকেরও বেশি সময় পর দক্ষিণ আমেরিকা আবারও অন্য মহাদেশীয় কোনো শক্তির সামরিক উপস্থিতির আশঙ্কায় ভুগছে। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকা আবার এমন এক ভূতের ছায়ায় পড়ছে, যেখানে এই অঞ্চলের বাইরে থেকে আসা সামরিক শক্তি আমাদের শান্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’

চলতি সপ্তাহের শুরুতেই লাতিন আমেরিকার দুই বৃহত্তম অর্থনীতির শীর্ষ নেতা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ক্লাউদিয়া শেইনবাউম ভেনেজুয়েলা পরিস্থিতিতে সংযম দেখানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত শনিবারের বক্তব্যে লুলা আরও কঠোর দেখিয়েছেন।

‘মারকোসুর’ সম্মেলন শেষে দেওয়া এক যৌথ ঘোষণায় লাতিন আমেরিকার নেতারা ভেনেজুয়েলায় গণতান্ত্রিক নীতি ও মানবাধিকার রক্ষায় শান্তিপূর্ণ পথেই অগ্রসর হওয়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এই ঘোষণায় আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও পানামার প্রেসিডেন্টদের পাশাপাশি বলিভিয়া, ইকুয়েডর ও পেরুর শীর্ষ কর্মকর্তারাও সমর্থন জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ভারতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, সুরক্ষিত এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে প্রবেশ করল—প্রশ্ন ঢাকার

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ভারতেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত
২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। ছবি: সংগৃহীত

ভারতেও ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে। পকেটে টান পড়তে যাচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। ২৬ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনের ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তবে স্বস্তির খবর হলো, লোকাল ট্রেনের ভাড়া অপরিবর্তিত থাকছে। মূলত দূরপাল্লার যাত্রীদের জন্যই এই বাড়তি ভাড়া কার্যকর হবে।

ভারতের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা অনুযায়ী, ভ্রমণের দূরত্ব ও কোচের ধরনভেদে নতুন ভাড়ার হার নির্ধারিত হবে। ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত সাধারণ শ্রেণিতে ভাড়ায় কোনো পরিবর্তন নেই। তবে ২১৫ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে এক পয়সা করে ভাড়া বাড়বে।

মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেনের (নন-এসি) যাত্রীদের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ভাড়া বাড়বে দুই পয়সা। এসি কোচ বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কোচের ক্ষেত্রেও কিলোমিটার প্রতি দুই পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।

তবে যদি কোনো যাত্রী নন-এসি কোচে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন, নতুন নিয়ম অনুযায়ী তাঁকে আগের চেয়ে ১০ রুপি বেশি ভাড়া দিতে হবে।

কেন এই ভাড়া বৃদ্ধি

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক দশকে রেলপথ সম্প্রসারণের ফলে জনবল এবং অন্যান্য ব্যয় বহুগুণ বেড়েছে। রেলওয়ের বর্তমান জনবল ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপিতে এবং পেনশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৬০ হাজার কোটি রুপি। সব মিলিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট পরিচালনা ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ লাখ ৬৩ হাজার কোটি রুপি।

যাত্রীদের ভাড়া ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে খরচ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে রেলওয়ে। এর আগে গত জুলাই মাসেও ভাড়া বাড়ানো হয়েছিল (নন-এসিতে এক পয়সা ও এসিতে দুই পয়সা)। তারও আগে ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি বড় ধরনের ভাড়া বৃদ্ধি কার্যকর করা হয়েছিল, যেখানে এসি কোচে ভাড়া বেড়েছিল কিলোমিটার প্রতি চার পয়সা পর্যন্ত।

রেলওয়ে কর্মকর্তাদের মতে, উন্নত সেবা এবং ক্রমবর্ধমান ব্যয় মেটাতে এই সামান্য ভাড়া বৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, এই ভাড়া বৃদ্ধির ফলে রেলওয়ের বার্ষিক আয় প্রায় ৬০০ কোটি রুপি বাড়বে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এনএসআইয়ের ১৩ কর্মকর্তার দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক

আন্দোলনের মুখে রাবিতে আওয়ামীপন্থী ছয় ডিনের পদত্যাগ

হাদি হত্যা: ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের অ্যাকাউন্টে ১২৭ কোটি টাকার লেনদেন

ভারতের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, সুরক্ষিত এলাকায় বিক্ষোভকারীরা কীভাবে প্রবেশ করল—প্রশ্ন ঢাকার

নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে অপারেশন শুরু করবে যৌথ বাহিনী: ইসি সানাউল্লাহ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত