Ajker Patrika

যে কারণে ‘ইন্ডিয়া’ ছাড়ছেন বিহারের নিতীশ

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ২৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ৫৫
যে কারণে ‘ইন্ডিয়া’ ছাড়ছেন বিহারের নিতীশ

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নিতীশ কুমার ২০২২ সালে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে লালু প্রাসাদ যাদবের দল রাষ্ট্রীয় জনতা দলের সঙ্গে জোট বেঁধে নতুন সরকার গঠন করেছিলেন। পরে তিনি বিজেপিবিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য়ও যোগ দিয়েছিলেন। তবে বছর না পেরোতেই আবারও রাজনৈতিক ডিগবাজি দিয়েছেন নিতীশ। জোর গুঞ্জন, তিনি আবারও বিজেপির সঙ্গেই ভিড়ছেন। 

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিতীশ কুমার কেবল ইন্ডিয়া জোটই ছাড়বেন না, এমনকি তিনি ক্ষমতাসীন বিজেপির সঙ্গেও জোট বাঁধতে পারেন আগামী লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে। এমনটা হলে তা হবে কংগ্রেস ও ইন্ডিয়া জোটের জন্য অনেক বড় একটি ধাক্কা। 

তবে নিতীশ কেন ইন্ডিয়া জোট ছাড়ছেন, তা নিয়ে বেশ-জল্পনা রয়েছে। কারণ, একসময় নিতীশ নিজেই ইন্ডিয়া জোটের অন্যতম বড় মুখ ছিলেন। এমনকি তিনি তাঁর রাজ্যের রাজধানী পাটনায় জোটের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকও আয়োজন করেছিলেন। কিন্তু তার পরও নিতীশ কেন ইন্ডিয়া ছাড়ছেন এবং বিজেপিতে ভিড়ছেন, তা এক বড় প্রশ্ন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে নিতীশ কুমারের এক ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, মূলত জানুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকই নিতীশের জোট ছাড়ার অন্যতম কারণ। বিষয়টি কোনো না কোনভাবে নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এর সূত্র ধরে মোদির দল বিজেপি নিতীশকে লুফে নিতে উঠে পড়ে লেগেছে। 

নিতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তি বলেছেন, ১৩ জানুয়ারির বৈঠকে ইন্ডিয়া জোটের আহ্বায়ক হিসেবে নিতীশ কুমারের নাম প্রস্তাব করেছিলেন ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কস) প্রধান সীতারাম ইয়েচুরি। লালু প্রাসাদ যাদব, শারদ পাওয়ারসহ বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ নেতাই এই প্রস্তাবকে সমর্থন করেন। 

কিন্তু বাদ সাধেন কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি ও পোস্টারবয় রাহুল গান্ধী। তিনি বলেন, যেহেতু বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত নেই এবং তাঁর যেহেতু নিতীশের ব্যাপারে আপত্তি আছে, তাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা উচিত। 

পরে নিতীশ কুমার সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব বলেন, যেহেতু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠকে নেই এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা নিতীশের পক্ষে তাই সিদ্ধান্তটি মমতার অনুমোদনের জন্য আটকে থাকা উচিত নয়। এ সময় বৈঠকে উপস্থিত কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বা সোনিয়া গান্ধী কেউই রাহুলকে বিষয়টি বাদ দিতে বলেননি। 

নিতীশ কুমারের ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকের ওই সময়ে নিতীশের মনে হয়েছিল যে এভাবে তিনি কখনোই তাঁর এবং জোটের মূল লক্ষ্য—‘মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করা—অর্জন করতে পারবেন না এবং সে সময়ই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, ‘আপনি যদি কাউকে পরাজিত করতে না পারেন, তবে তাঁর দলেই যোগ দেওয়া উচিত।’ 

সূত্রগুলো জানিয়েছে, নিতীশ কুমার মনে করেন, রাহুল গান্ধী বিষয়টি নিয়ে মমতাকে প্রভাবিত না করে এবং তাঁকে জোটের সঙ্গে না এনে বৈঠকে তাঁকে অপমান করেছেন। নিতীশ কুমারের সমর্থকেরা বিশ্বাস করেন, যতক্ষণ না রাহুল সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সবার ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন, ততক্ষণ বিরোধীরা কখনোই বিজেপির বিরুদ্ধে সম্মানজনক লড়াইও করতে পারবেন না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত